-->

হাসপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়, চিকিৎসা নিতে ভোগান্তি

মীর বাবুল, ময়মনসিংহ
হাসপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়, চিকিৎসা নিতে ভোগান্তি
রোগীদের ভিড়ে শয্যাসংকট দেখা দিয়েছে

টানা কয়েক দিনের গরমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। বিভাগের প্রধান সরকারি এই হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণের বেশি রোগী ভর্তি আছেন। শয্যা খালি না থাকায় সিঁড়িতে রেখেই রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেখানেও জায়গা নেই। গরমে ডায়রিয়া, ভাইরাসজ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। তাদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন স্বজনরা।

 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে রোগী ভর্তি তিনগুণের বেশি। শয্যাসংকটের কারণে প্রতিদিন হাজারো রোগীকে মেঝে, বারান্দা ও সিঁড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর চাপ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক ও নার্সরা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

 

রোগী ও স্বজনরা জানান, ওয়ার্ড, মেঝে, বারান্দা তো দূরে থাক; এখন সিঁড়ির কোণেও ঠাঁই মিলছে না রোগীদের। ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় সিঁড়িতে গরমে হাঁসফাঁস করছেন রোগীরা।

 

বুক জ্বালাপোড়া এবং প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের দুই নম্বর ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন সদরের সিত্তা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে কাউসার মিয়া (১৮)। ওয়ার্ড তো দূরের কথা মেঝে ও বারান্দায় জায়গা না পেয়ে সিঁড়ির কোণে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

 

হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি জানিয়ে কাউসার মিয়া বলেন, ‘জ্বালাপোড়া এবং বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে বুধবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। রোগীর চাপ থাকায় ওয়ার্ড, মেঝে এমনকি বারান্দাতেও জায়গা পাইনি। পরে সিঁড়ির কোণে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। ওয়ার্ড থেকে অনেক দূরে হওয়ায় চিকিৎসক এসে খুঁজে পান না। নার্সদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে চিকিৎসক দেখাতে হয়। বেশিরভাগ সময় নার্সদেরও পাওয়া যায় না। ডেকে ডেকে আনতে হয়। আমার মতো অনেক রোগী সিঁড়িতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

 

সিঁড়ির কোণে বিছানা পেতে চিকিৎসা নেওয়া তারাকান্দা উপজেলার হৃদয় মিয়া (৩৫) বলেন, ‘পেটে আলসারের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে সিঁড়ির কোণে আশ্রয় নিয়েছি। ওয়ার্ড থেকে দূরে হওয়ায় এখানে চিকিৎসক দেখতে আসেন না। ডেকে আনতে হয়। অতিরিক্ত রোগীর কারণে হাসপাতালের কোথাও জায়গা নেই। অধিকাংশ রোগী বারান্দা ও সিঁড়ির কোণে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

 

হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানালেন মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক চিকিৎসক খোরশেদুল আলম। তিনি বলেন, অনেকে জায়গা না পেয়ে বারান্দা ও সিঁড়ির কোণে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে রোগীরা যেখানেই থাকুক চিকিৎসক ও নার্সরা তাদের খুঁজে খুঁজে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।’

 

মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস ভোরের আকাশকে বলেন, এখানের রোগীরা বিনামূল্যে খাবার ও ওষুধসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। চিকিৎসক ও নার্সরা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version