আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫ ০২:৩৩ এএম
বয়সজনিত শিরার সমস্যায় আক্রান্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সি’ নামক এক ধরনের শিরার সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বৃহস্পতিবার এক নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প সম্প্রতি পা ফোলা অনুভব করলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেন। পরে জানা যায়, তিনি ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সিতে আক্রান্ত। তবে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, এটি গুরুতর কোনও সমস্যা নয়।
তবে সম্প্রতি ট্রাম্পের হাতের তালুর উল্টো পাশে একটি দাগ ও তা মেকআপ দিয়ে ঢাকার ছবি প্রকাশ্যে এলে আলোচনা আরও গড়ায়। তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এটি শিরাজনিত নয় বরং ঘন ঘন করমর্দনের ফলেই এমন দাগ তৈরি হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক ক্যাপ্টেন শন বারবাবেলা জানিয়েছেন, এই সমস্যাটি সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। এতে পায়ের শিরাগুলো রক্তকে হৃৎপিণ্ডে সঠিকভাবে ফেরত পাঠাতে পারে না, ফলে দেহের নিচের অংশে ফোলাভাব বা পানি জমার সমস্যা দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যার পেছনে দুর্বল শিরার ভালভ দায়ী, যা বয়সের সাথে সাথে দুর্বল হয়ে পড়ে। ওজন বেশি হওয়া, অতীতে রক্ত জমাট বাঁধার ইতিহাস থাকা, কিংবা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করার অভ্যাস – এসব বিষয়ও ঝুঁকি বাড়ায়।
এই সমস্যার সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে পা ফোলা, ব্যথা, চুলকানি এবং ত্বকে প্রভাব পড়া অন্তর্ভুক্ত। কিছু ক্ষেত্রে আলসার, রক্তপাত বা ডিপ ভেইন থ্রোম্বোসিসের মতো জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তবে ডা. বারবাবেলার ভাষ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের শারীরিক পরীক্ষায় ডিভিটি বা ধমনীজনিত রোগের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এটি খুব সাধারণ সমস্যা এবং সচরাচর গুরুতর কিছু নয়। ট্রাম্পের মতো বয়সের মানুষদের মধ্যে ১০% থেকে ৩৫% এই সমস্যায় ভুগে থাকেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই সমস্যা সামলাতে মেডিকেল-গ্রেড স্টকিংস, পা উঁচু করে বিশ্রাম নেওয়া এবং উপযুক্ত লোশন ব্যবহারের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জীবনযাত্রায় পরিবর্তন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চার মাধ্যমেও এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের শারীরিক পরীক্ষায় তার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা "চমৎকার" বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা। হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, স্নায়ু এবং কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প বর্তমানে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রসুভাস্ট্যাটিন ও ইজেটিমিবি, হৃদরোগ প্রতিরোধে অ্যাসপিরিন এবং ত্বকের জন্য মোমেটাসোন ক্রিম ব্যবহার করছেন।
নিজেকে “সর্বকালের সবচেয়ে স্বাস্থ্যবান প্রেসিডেন্ট” বলে দাবি করা ট্রাম্পের এই সমস্যা আপাতত গুরুতর নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নিয়মিত নজরদারি ও সতর্কতা বজায় রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
ভোরের আকাশ//হ.র