সৌদিতে বাংলাদেশি আরেক হাজির মৃত্যু
পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবে রোকেয়া বেগম (৬২) নামে আরেকজন বাংলাদেশি হাজির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে হজপালনে গিয়ে এখন পর্যন্ত ২৯ বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী।
রোববার (১৫ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের মৃত্যু সংবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে, শনিবার (১৪ জুন) মক্কায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোকেয়া বেগমের মৃত্যু হয়। তার বাড়ি বড়গুনা জেলার সদর উপজেলায়। চলতি বছর বাংলাদেশি হাজিদের মধ্যে মক্কায় ১৯ জনের, মদিনায় ৯ ও আরাফায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল সূত্রে জানা যায়, এ বছর হজে গিয়ে গত ২৯ এপ্রিল প্রথম মারা যান রাজবাড়ীর পাংশার মো. খলিলুর রহমান (৭০)। এরপর ২ মে মারা যান কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মো. ফরিদুজ্জামান (৫৭), ৫ মে মারা যান পঞ্চগড় সদরের আল হামিদা বানু (৫৮), ৭ মে মারা যান ঢাকার মোহাম্মদপুরের মো. শাহজাহান কবির (৬০) এবং ৯ মে মারা যান জামালপুরের বকশিগঞ্জের হাফেজ উদ্দিন (৭৩), ১০ মে মারা যান নীলফামারী সদরের বয়েজ উদ্দিন (৭২), ১৪ মে মারা যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মো. অহিদুর রহমান (৭২), ১৭ মে মারা যান গাজীপুর সদরের মো. জয়নাল হোসেন (৬১), ১৯ মে মারা যান চাঁদপুরের মতলবের আ. হান্নান মোল্লা (৬৩) ও ২৪ মে রংপুরের পীরগঞ্জের মো. সাহেব উদ্দিন।
এ ছাড়া ২৫ মে মারা গেছেন চাঁদপুরের কচুয়ার বশির হোসাইন (৭৪), ২৭ মে মারা যান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের শাহাদাত হোসেন, ২৯ মে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মো. মোস্তাফিজুর রহমান(৫৩), একই দিন মাদারীপুর সদরের মোজলেম হাওলাদার (৬৩), গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব থানার আবুল কালাম আজাদ (৬২), গত ১ জুন মারা যান, গাজীপুরের পুবাইলের মো. মফিজ উদ্দিন দেওয়ান (৬০) ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের মো. জাহিদুল ইসলাম (৫৯), ৫ জুন মারা যান ঢাকার কেরানীগঞ্জের মনোয়ারা বেগম মুনিয়া, ৬ জুন খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকার শেখ মো. ইমারুল ইসলাম, ৭ জুন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির মো. মুজিব উল্যা, ৯ জুন মারা যান গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের এ টি এম খায়রুল বাসার মন্ডল, ১০ জুন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার গোলাম মোস্তফা, ১২ জুন লালমনিরহাট পাটগ্রামের আমির হামজা, ময়মনসিংহের কোতয়ালি এলাকার মো. মনিরুজ্জামান (৬৬), নোয়াখালীর চাটখিল এলাকার খাতিজা বেগম (৪১) ও ঢাকার আদাবর এলাকার এ এস এম হায়দারুজ্জামান (৬০)।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
বছর ঘুরে আবারও নিকটে এসে পড়েছে পবিত্র মাহে রমজান। পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে আর ১০০ দিন বাকি আছে। এরপই একমাসজুড়ে বাড়তি ইবাদতে মগ্ন হবেন বিশ্বের সব ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।ইসলামধর্ম বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইসলামিক ইনফরমেশন’ শনিবার (৮ নভেম্বর) তাদের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেছে। সেখানে তারা রমজান শুরু হতে ১০০ দিন বাকি থাকার তথ্য জানিয়েছে।২০২৬ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজান মাস ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে। সেই অনুযায়ী, ২০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রোজা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা এমিরেট অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ১৪৪৭ হিজরি সনের রমজানের চাঁদ আকাশে উঠবে ১৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ওইদিন সূর্যাস্তের মাত্র ১ মিনিট পরই চাঁদটি অস্ত যাবে।ফলে এটি খালি চোখে আর দেখা যাবে না। তাই ১৮ ফেব্রুয়ারি রমজান শুরু না হয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি হবে।আগামী বছর মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশ— সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং কুয়েতে রমজানের শুরুর কয়েকদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে। রমজান যত শেষের দিকে যাবে এই সময় তত বাড়বে। এটি বাড়তে বাড়তে ১৩ ঘণ্টা হবে।সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানিয়েছে, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসবে।যদিও সৌদির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা তাদের নিজস্ব উম আল-কুরা কেলেন্ডার অনুযায়ী রমজান ও ঈদের ঘোষণা দিয়ে থাকে।যেহেতু মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পর বাংলাদেশে রোজা ও ঈদ শুরু হয় তাই বাংলাদেশে ২০ ফেব্রুয়ারি রমজানের প্রথমদিন এবং ২১ মার্চ ঈদুল ফিতর পালিত হতে পারে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমাবার। পবিত্র কুরআনে জুমা নামে স্বতন্ত্র একটি সুরাও রয়েছে। যেখানে মহান এই দিনের তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন করো। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)।অন্যদিকে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- সূর্য উদয়ের দিবসগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমাবার। সে দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়। তাকে ওইদিন জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। তাকে তা থেকে ওইদিন বের করা হয়। আর কিয়ামতও হবে জুমার দিনেই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৫০)তবে জুমআর খুতবার পূর্বে ‘কাবলাল জুমুআহ’ বলে কোন নির্দিষ্ট রাকআত সুন্নত নেই। অতএব নামাযী মসজিদে এলে ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ ২ রাকআত সুন্নত পড়ে বসে যেতে পারে এবং দুআ, দরুদ তাসবীহ- যিকর বা তেলাওয়াত করতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে নামাযও পড়তে পারে। তবে এ নামায হবে নফল এবং অনির্দিষ্ট সংখ্যায়।মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন যথা নিয়মে গোসল করে, দাঁত পরিষ্কার করে, খোশবূ থাকলে তা ব্যবহার করে, তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরে, অতঃপর (মসজিদে) যায়, নামাযীদের ঘাড় ডিঙিয়ে (কাতার চিরে) আগে যায় না, অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নামায পড়ে। তারপর ইমাম উপস্থিত হলে নীরব ও নিশ্চুপ থাকে এবং নামায শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কথা বলে না, সে ব্যক্তির এ কাজ এই জুমুআহ থেকে অপর জুমআর মধ্যবর্তীকালে কৃত পাপের কাফফারা হয়ে যায়।” (আহমাদ, মুসনাদ, ইবনে মাজাহ্, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, জামে ৬০৬৬নং)প্রকাশ থাকে যে, “প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মাঝে নামায আছে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৬৬২নং) এই হাদীস দ্বারা কাবলাল জুমআর সুন্নত প্রমাণ হয় না। কারণ, বিদিত যে, জুমআর আযান ও ইকামতের মাঝে থাকে খুতবা। আর মহানবী (ﷺ)-এর যুগে পূর্বের আর একটি আযান ছিল না। আর সুন্নত প্রমাণ হলেও মুআক্কাদাহ ও নির্দিষ্ট সংখ্যক নয়।তদনুরুপ “এমন কোন ফরয নামায নেই, যার পূর্বে ২ রাকআত নামায নেই।” (ইবনে হিব্বান, সহীহ, ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২, জামে ৫৭৩০নং) এ হাদীস দ্বারাও জুমআর পূর্বে ২ রাকআত সুন্নত প্রমাণ হয় না। কারণ, জুমআর ফরয নামাযের পূর্বে খুতবা হয়। আর খুতবার পূর্বে ২ রাকআত নামায এ দ্বারা প্রমাণিত হয় না। (দ্র: সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২নং)সতর্কতার বিষয় যে, ইমামের খুতবা চলাকালে কেউ মসজিদে উপস্থিত হলে তাকে সেই অবস্থায় হাল্কা করে যে ২ রাকআত পড়তে হয়, তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ নয়; বরং তা হল তাহিয়্যাতুল মাসজিদ।এ ক্ষেত্রে বিনা কারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারেও কঠোর নিষেধ রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু উমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তারা দু’জনে রাসুল (সা.) কে মিম্বরের সিঁড়িতে বলতে শুনেছেন, যারা জুমা পরিত্যাগ করে, তাদের এ কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। নয়তো মহান আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। অতঃপর তারা অবশ্যই গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৭৫)।আরেকটি হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি অবহেলা করে তিন জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তার হৃদয় মোহরাঙ্কিত করে দেন (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৫০০)। তাই জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসলের পাশাপাশি মিসওয়াক, সুগন্ধি ব্যবহারসহ উত্তম কাপড় পরিধান করে মসজিদে যাওয়ার কথা অনেক হাদিসে এসেছে।এ ক্ষেত্রে জুমার নামাজ মূলত ২ রাকাত। যাকে আমরা ফরজ বা ওয়াজিব হিসেবে জানি। এর আগে-পরে সুন্নত পড়তে হয়। মসজিদে প্রবেশের পর ২ রাকাত সুন্নত পড়তে হয়, যা তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ নামে পরিচিত। এটি ওয়াজিব না হলেও হাদিসে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা.) বলেন, একবার জনৈক ব্যক্তি দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় মসজিদে এসে প্রবেশ করলো। ওই সময় রাসুল (সা.) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তিকে তখন দু’রাকাত (তাহিয়্যাতুল মসজিদ) আদায় করতে আদেশ দিলেন। এরপর তিনি দু’রাকাত আদায় করলেন আর তখন রাসুল (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। (সুনান ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১১১৩; সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৫১১)অন্যদিকে জুমার নামাজের পর ৪ রাকাত নামাজ সুন্নত, যেটি বায়াদাল জুমা নামে পরিচিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা জুমার পর সালাত আদায় করলে ৪ রাকাত আদায় করবে। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৫২৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯১০)এ ক্ষেত্রে হরহামেশাই দেখা যায়, জুমার ২ রাকাত ফরজ শেষে অনেকেই মসজিদ থেকে বেরিয়ে যান। আবার জুমার ফরজের আগে মসজিদে ঢুকলেও অনেকে তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদের ২ রাকাত নামাজ আদায় করেন না। শুধু ফরজ পড়েই বেরিয়ে যান। এমনটা করলে গুনাহ হবে কি?জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারীসহ অধিকাংশ আলেমদের মত, জুমার ২ রাকাত নামাজ ফরজ, যেটিকে ওয়াজিবও বলা হয়। আর কবলাল জুমা (তাহিয়্যাতুল মসজিদ) ও বায়াদাল জুমা পড়া সুন্নত। এ ক্ষেত্রে ফরজ নামাজ না পড়লে এর জন্য শাস্তি দেয়া হবে। কিন্তু শুধু ফরজ নামাজ পড়লে সালাত পরিপূর্ণতা পায় না। তবে জরুরি কাজে ব্যস্ততা থাকলে জুমার নামাজের আগে ও পরের এই সুন্নত না পড়লে কোনো অসুবিধা নেই। অর্থাৎ, গুনাহ হবে না।তবে মনে রাখতে হবে, সালাত বা নামাজ পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য নামাজের মধ্যে থাকা রোকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করা জরুরি। উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ৫ ওয়াক্ত সালাত আল্লাহ তা’য়ালা (বান্দার জন্য) ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি এ সালাতের জন্য ভালোভাবে অজু করবে, সঠিক সময়ে আদায় করবে এবং এর রুকু ও খুশুকে পরিপূর্ণরূপে করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আর যে তা না করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। (মেশকাত, হাদিস: ৫৭০)ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুমা ও জুমাবারের রাত-দিন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে।জুমার দিনের সওয়াব ও মর্যাদা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতোই। এ দিন ইসলামী ইতিহাসে বড় বড় ও মহৎ কিছু ঘটনা ঘটেছে।জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এত বেশি যে, কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করা হয়েছে।আল্লাহ তা'আলা কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা- ০৯)।রাসুল (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।(ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)।এক হাদিসে নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে দিনগুলোতে সূর্য উদিত হয়, ওই দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। ওই দিন হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে। ওই দিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং ওই দিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। আর ওই দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম শরিফ , হাদিস নম্বর ৮৫৪)মহানবী (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, জুমার দিন দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় আছে , কোনো মুসলিম যদি সেই সময়টা পায়, আর তখন যদি সে নামাজে থাকে, তাহলে তার যেকোনো কল্যাণ কামনা আল্লাহ পূরণ করেন। (বুখারি, হাদিস নম্বর ৬৪০০)জুমার দিনের বিশেষ আমলরাসুল (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ১০৪৭)।এমনিতেই তিরমিজি শরিফের হাদিস অনুযায়ী আমরা জানতে পারি, যে ব্যক্তি দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত নাযিল করবেন। সুতরাং আমাদের জুমার দিন অন্যান্য আমলের সাথে সাথে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করতে হবে।জুমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনা করে প্রতিটি মুসলিমের উচিত এই দিনটিকে কাজে লাগানো।ভোরের আকাশ/তা.কা
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, সাত শ্রেণির লোককে আল্লাহ তায়ালা (হাশরের দিন) তার আরশের ছায়ায় স্থান দান করবেন। সেদিন আরশের ছায়া ছাড়া আর অন্য কোনো ছায়া থাকবে না।আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাবেন যে ৭ শ্রেণির লোক-১) ন্যায়পরায়ণ নেতা।২) ওই যুবক যে তার যৌবনকাল আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়েছেন।৩) এমন ব্যক্তি (মুসল্লি) যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে লাগানো থাকে, একবার মসজিদ থেকে বের হলে পুনরায় প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত ব্যাকুল থাকে।৪) এমন দুই ব্যক্তি যারা একমাত্র আল্লাহকেই ভালোবেসে পরস্পর মিলিত হয়, এমনকি পরস্পর আলাদা হয়।৫) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহর ভয়ে অশ্রু বিসর্জন দেয়।৬) যে ব্যক্তিকে কোনো সম্ভ্রান্ত বংশের সুন্দরী নারী ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আহবান জানায় আর ওই ব্যক্তি শুধু আল্লাহর ভয়েই বিরত থাকে।৭) যে ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে তার ডান হাত কি দান করলো বাম হাতও জানলো না। (বুখারি, হাদিস নম্বর ১৭৪; মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৭১২)হাশরের দিন আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া আর অন্য কোন ছায়া থাকবে না। সেদিন মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করবে। মা তার সন্তানকে চিনবে না। সন্তান তার বাবা-মাকে চিনবে না।পবিত্র কুরআনের সুরা আবাসা’র ৩৪-৩৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘সেদিন মানুষ নিজের সন্তানকে রেখে পালিয়ে যাবে। তাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর সেদিন এমন বিপদ নেমে আসবে যে, তখন নিজেকে ছাড়া আর কারও দিকে তাকানোর মতো অবস্থা থাকবে না’।হাদিসে বর্ণিত আছে, হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ‘মহানবী (সা.) কে বলতে শুনেছি, কেয়ামতের দিন মানুষ উলঙ্গ হয়ে খতনাহীন অবস্থায় কবর থেকে হাশরের ময়দানে এসে দাঁড়াবে। এ কথা শুনে আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! নারী-পুরুষ সবাই কি উলঙ্গ থাকবে? এমন হলে তো খুবই লজ্জার ব্যাপার। উত্তরে হুজুর (সা.) বললেন, হে আয়েশা! সে দিনের পরিস্থিতি এত ভয়ঙ্কর হবে, কেউ কারও দিকে তাকানোর কথা কল্পনাও করতে পারবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)কেয়ামতের ভয়াবহতা উল্লেখ করে পবিত্র কুরআনের সুরা আল ইমরান এর ১০৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘ওই দিন কিছু চেহারা উজ্জ্বল হবে, আর কিছু লোকের চেহারা হবে কালো।’ অর্থাৎ কাল হাশরের ময়দানে যারা ইমানদার হবেন তাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে, তারাই হবে সফলকাম। অন্যদিকে আল্লাহর অবাধ্য বান্দা অর্থাৎ যাদের আমলনামা পেছনের দিক দিয়ে দেয়া হবে তাদের চেহারা হবে কালো, কুৎসিত।তাদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের সুরা আর রাহমানের ৪১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘অপরাধীরা সেদিন নিজ নিজ চেহারা দ্বারাই চিহ্নিত হয়ে যাবে এবং তাদের কপালের চুল ও পা ধরে টেনে-হিঁচড়ে নেয়া হবে।’সব প্রাণীর দুনিয়ার জুলুমের প্রতিশোধ প্রতিবিধান করা হবে কিয়ামতের মাঠে। জীবজন্তুদের বিচারের পর বলা হবে ‘তোমরা মাটি হয়ে যাও’। তখন তারা সবাই মাটিতে মিশে যাবে। মানুষ এ দৃশ্য দেখবে। পাপী মানুষরা যখন সামনে কঠিন বিপদ-মসিবত দেখবে, তখন বলবে, ‘হায়! আমিও যদি মাটি হয়ে যেতাম, তাহলে কতই না ভালো হতো!’ (সুরা নাবা, আয়াত নম্বর ৪০)ভোরের আকাশ/তা.কা