-->

জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধু

মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধু
আজকের তরুণ প্রজন্ম এই মহান নেতার আদর্শ থেকেই দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করবে

আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিন। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তদানীন্তন ভারতবর্ষের বঙ্গ প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। চার কন্যা এবং দুই পুত্রের সংসারে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয় সন্তান। ৫৫ বছর বয়সে কিছু বিপথগামী সেনা কেড়ে নেন তাঁর প্রাণ। কিন্তু দেশের প্রতিটি প্রান্তে আজ উচ্চারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। শোনা যাচ্ছে সেই আকুতি ঝরানো গান ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই...।’

আজ দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় শিশু দিবস। ১৯৯৭ সাল থেকেই দিবসটি পালন শুরু হয়। এ দিনটিকে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত আদর করতেন, ভালোবাসতেন। শিশুদের সাথে গল্প করতেন, খেলা করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। আজকের তরুণ প্রজন্ম এই মহান নেতার আদর্শ থেকেই দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করবে।

কৈশোরেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণেই পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক জীবন ঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসেবে দুখী মানুষের দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলেন আজীবন। তিনি দরিদ্র মানুষের কল্যানে এতটাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে, তাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য পরিচালিত রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনেই যে ২১ দফা ঘোষণা করা হয় তা ছিল বাঙালির স্বার্থ সংরক্ষণের দাবি। এই ২১ দফার মধ্যে ১৩নং দফাতেই সুস্পষ্টভাবে ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। এ দফাতে বলা হয়, ‘দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি, ঘুষ-রিশওয়াত বন্ধ করিবার কার্যকরি ব্যবস্থা করা হইবে এবং এতদউদ্দেশ্যে সব সরকারি ও বেসরকারি পদাধিকারি ব্যবসায়ী ১৯৪০ সাল হইতে বর্তমান সময় পর্যন্ত সময়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব লওয়া হইবে এবং সন্তোষজনক কৈফিয়ত দিতে না পারিলে তাহাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হইবে।’ এভাবে রাজনীতির শুরু থেকেই গণমানুষের স্বার্থে শোষণ মুক্ত সমাজ গঠনে ছিলেন অবিচল।

শুধু স্বাধীনতা-পূর্বকালীন সময়ের নয়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়েও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব ভাষণ প্রদান করেছেন তাতে প্রতিফলিত হয়েছে তার সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন আকাক্সক্ষা এবং দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর অকৃত্রিম মমত্ববোধ দুস্থ মানবতার সেবা করুন, এক যুদ্ধের শেষ আর এক যুদ্ধের শুরু। আত্মসমালোচনা, আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধি চাই। বিপদ যত বড়ই হোক- একতা ও সাহসই তার জবাব। কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন বাড়াতে হবে, জনগণকে শ্রদ্ধা করতে হবে ও ভালোবাসতে হবে। গরিব দুখীর সুখেই স্বাধীনতার স্বার্থকতা, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে, সবার এক হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে- বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মর্মবাণী আমাদেরকে তার গভীর জীবনবোধ, রাজনৈতিক দর্শন এবং দেশ ও জনগণের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার কথাই মনে করিয়ে দেয়।

১৯৭৪ সালের ১৮ আগস্ট দেশ যখন বন্যাকবলিত তখন তিনি দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর এক আবেগঘন নির্দেশনায় বলেন, ‘‘দেশবাসী ভাই ও বোনেরা, একটা কথা আজ আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, জনগণের দুর্দশাকে মূলধন করে যারা মুনাফা লুটে খায় সেই ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ চোরাকারবার, মজুতদার ব্যবসায়ীদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে। রিলিফ বণ্টন নিয়ে কোনো ছিনিমিনি খেলা বরদাশত করা হবে না। অত্যন্ত তীব্র ভাষায় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সাধারণ মানুষের স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত দুর্নীতিবাজ, চোরাচালানি মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে।

১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতির উদ্দেশে বেতার ও টেলিভিশনে প্রদত্ত ভাষণে বলেন, ‘আমি যে সুখী ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি, সংগ্রাম করেছি এবং দুঃখ ও নির্যাতন বরণ করেছি সেই বাংলাদেশ এখনো স্বপ্নই রয়ে গেছে। গরিব কৃষক ও শ্রমিকের মুখে যতদিন হাসি না ফুটবে ততদিন আমার মনে শান্তি নাই। এই স্বাধীনতা আমার কাছে তখনি প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে যেদিন বাংলাদেশের কৃষক, মজুর ও দুখী মানুষের সব দুঃখের অবসান হবে।

শ্রমজীবী ও দুখী মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম ভালোবাসার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ বর্ণনা করেছেন তার তৎকালীন একান্ত সচিব ড. মোহাম্মাদ ফরাসঊদ্দিন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক আলাপ শেষে বঙ্গবন্ধু দায়িত্বের বিষয়ে কিছু ব্রিফ করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য তার সেই কথাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা স্মরণ করলে এখনো চোখে পানি আসে। বঙ্গবন্ধু আমাকে বললেন, ‘আমি গরিব দেশের প্রধানমন্ত্রী। আমার দরজা সবার জন্য খোলা। সব রকমের লোক আমার কাছে আসবে। যারা বড়লোক কিংবা মধ্যবিত্ত তাদের তুই ঠেকাস বা না ঠেকাস, তাদের কাজ তারা করিয়ে নেবে। কিন্তু আমার কাছে যারা গাঁও-গেরামের কৃষান-কৃষানি, শ্রমজীবী, গরিব-দুখী ও অশিক্ষিত এবং মানুষ আসবে, তাদের ঠেকাস না। এসব মানুষের যাওয়ার জায়গা শুধু শেখ মুজিবের কাছে। তাদের আমার কাছে আসতে দিবি। এমনকি যদি তোর শক্তিতে কুলায়, তাদের কাজ করে দিবি।’ বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন ওখানেই।

অর্থাৎ সব মানুষের বিশেষত গরিব ও বঞ্চিত মানুষের সমস্যার সমাধান করা, তাদের রুটি-রুজি, শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। অন্য কথায়, এসব মানুষের দারিদ্র্য, বঞ্চনা, শোষণ, অশিক্ষা-কুশিক্ষা, গৃহহীনতাসহ নানা প্রতিকূলতা লাঘব করে একটি সোনার বাংলা গড়ে তোলা। মূলত: দরিদ্র মানুষ দুর্নীতি করে না, সে সুযোগও তাদের নেই। কিন্তু দুর্নীতির কারণে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি কাজ করিয়ে নিতে বিত্তবানদের মতো তাকেও ঘুষ দিতে হয়, ফলে তাকে অর্থকষ্টে লড়তে হয়। এসব দুর্দশার জন্যই বঙ্গবন্ধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

শেখ মুজিবের চরিত্রের এসব গুণাবলি তার কৈশোর ও প্রথম যৌবনে ছাত্র থাকাকালে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। বঙ্গবন্ধুর বয়স যখন ২৫-৩৫ বছর তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে একদিকে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার আবির্ভাব অন্যদিকে পুজিবাদী ব্যবস্থার সাথে সমাজতন্ত্রের স্নায়ুযুদ্ধ শুরু। পরবর্তীতে ২৮-৪০ বছর বয়সের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে তিনি দেখেছিলেন ঔপনিবেশিকতাবিরোধী জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বে ঔপনিবেশগুলোতে জাতীয় মুক্তির আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয়।

সমসাময়িক বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের জাতীয়তাবাদী শক্তির যে উন্মেষ তা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনৈতিক দর্শনকেও প্রভাবিত করে। কালক্রমে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানি রাষ্ট্রের অসারতা এবং পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তানের স্বৈর-সেনা-সামন্ত শাসনের আওতায় শোষণ নির্ধারণসহ বৈষম্যপূর্ণ দুই অর্থনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের এক সফল সমাপ্তি ঘটে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি তার জীবনদর্শন ও রাজনৈতিক দর্শনেও জনআকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন যার মূল প্রতিপাদ্য ছিল শোষণ বঞ্চনা-বৈষম্য আর দুর্নীতি ক্লিষ্ট সমাজ কাঠামো ভেঙে প্রগতিমুখী কাঠামো সৃষ্টি এবং বৈষম্যহীন অর্থনীতি ও অসাম্প্রদায়িক আলোকেও মানুষের সমৃদ্ধ সমাজ কাঠামো ও রাষ্ট্র বিনির্মাণ।

১৯৭৫ সালের ১৯ জুন বঙ্গভবনে অনুষ্টিত নবগঠিত বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের এক বৈঠকে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘যে লোক হাসতে হাসতে জীবনের মায়া কাটিয়ে ফাঁসি পর্যন্ত যেতে পারে, যে জানে গুলি হয়ে এক ঘণ্টা পর মারা যেতে পারে সেই মানুষ ক্ষমতার জন্য মিথ্যা কথা বলবে না। এটা আপনাদের জেনে রাখা উচিত। এগুলি কি করে আপনারা করবেনÑ এই এগ্রিকালচার আমার নয়, চুরি হয়ে যাক। এই ফুড আমার নয়, চুরি হয়ে যাক। এটা আমার নয় চুরি হচ্ছে হোক। এসব চলতে পারে না। নেশন মাস্ট বি ইউনাইটেড এগেইনস্ট করাপশন। নিপীড়িত ও বঞ্চিতদের জন্য দুঃখবোধ, অত্যাচারীর বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিবাদী ভূমিকা নেয়া ছিল বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের লালিত আদর্শ।

শোষণ আর দুর্নীতির ফলে গরিব দুখী মানুষ যে দুর্দশায় নিপতিত হন তা সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে উপলব্ধি করেছেন প্রত্যক্ষভাবে। এসবই আধুনিক গবেষণার ফল থেকে উৎসারিত তথ্যাদি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘সব রকমের শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ বদ্ধপরিকর। জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া এত কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে ধনীদের আর ধনী হতে এবং গরিবদের আরো গরিব হতে দেওয়া হবে না। যে তথ্যটি আজ গবেষণার মাধ্যমে আমাদের কাছে আসছে বঙ্গবন্ধু তা আমাদের অবহিত করেছেন ৪৫ বছর আগেই। আর যা বিশ্বাস করতেন ৮০ বছর আগে। সুতরাং সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা কঠোর হবেন সেটিই প্রত্যাশিত।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার বহুল পঠিত ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘শৈশবেই তিনি খুব বেশি অধিকার সচেতন ছিলেন, একবার যুক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা একে ফজলুল হক গোপালগঞ্জ শহরে যান এবং স্কুল পরিদর্শন করেন। সেই সময় সাহসী কিশোর মুজিব তাঁর কাছে স্কুল ঘরে বর্ষার পানি পড়ার অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মেরামত করার অঙ্গীকার আদায় করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।’

দেশের তৎকালীন আর্থ-সামাজিক দূরবস্থার কথা বঙ্গবন্ধু খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছিলেন। ১১ জানুয়ারি ১৯৭৫ কুমিল্লা সামরিক একাডেমিতে শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে বলেন, ‘যে দুখী মানুষ দিনভর পরিশ্রম করে তাদের পেটে খাবার নেই, সাথে কাপড় নেই, বাসস্থানের বন্দোবস্ত নেই। লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার। ...বিদেশ থেকে ভিক্ষে করে আনতে হয়। কিন্তু চোরের দল সব লুট করে খায়। দুখী মানুষের সর্বনাশ করে। এবার আমি শুধু জরুরি অবস্থায়ই ঘোষণা করিনি। আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, বাংলাদেশের মাটি থেকে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ মুনাফাখোর আর চোরাচালানি নির্মূল করব। এই হুঁশিয়ারিই প্রমাণ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সাধারণ মানুষ তথা বেশিরভাগ মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ।

১৯৭৪ সালে দেশ যখন বন্যাকবলিত, মানুষ খাদ্যাভাবে ধুকছে, সে সময় ১৮ আগস্ট বন্যাকবলিত মানুষের উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, দেশবাসী ভাই ও বোনেরা, একটা কথা আজ আমি পরিষ্কার বলতে চাই, জনগণের দুর্দশাকে মূলধন করে যারা মুনাফা লুটে সেই ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবার, মজুতদার, ব্যবসায়ীদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে। রিলিফ বণ্টন নিয়ে কোনো ছিনিমিনি খেলা বরদাশত করা হবে না। ক্ষুধার্ত মানুষের গ্রাস যারা কেড়ে নেয় তারা মানুষ নয়- মানুষরূপী পশু। আমি এ পশুদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করতে চাই।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন অসামান্য গৌরবের। তার এ গৌরবের ইতিহাস থেকে প্রতিটি শিশুর মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার ভিত্তিতে যেমন গড়ে উঠবে আগামী প্রজন্ম, একইভাবে দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর মাধ্যমে এ দিবসটির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো আমাদের সবার দায়িত্ব।

লেখক : জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক

মন্তব্য

Beta version