২৬ মার্চ। ২৬ শে মার্চ কি দিবস? আমরা অন কেই এই প্রশ্ন করে থাকি। আমরা স্বাধীনতা দিবন ও বিজয় দিবসের মধ্যে অনেকে এলোমেলো করে থাকি। তাই আজকের আমাদের পোষ্ট হলো ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস নিয়ে। স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশের অন্যতম একটি গৌরবময় দিন। কিন্তু এই স্বাধীনতা দিবস কবে বা ২৬ মার্চ কি দিবস ? কেন এবং ইতিহাস সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। তাই আজ আপনাদের জন্য আমরা এই লেখা নিয়ে হাজির হয়েছি। যেখানে আপনারা ২৬শে মার্চ সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং এই ২৬শে মার্চ এর সঠিক ইতিহাস জানতে পারবেন। তাছাড়া বাঙ্গালীদের কাছে ২৬ শে মার্চ কেন একটি গৌরবময় দিন এবং কিভাবে দিনটির জন্য আজকের বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে মুক্ত হয়ে সারা পৃথিবীর মধ্যে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে আজ আমরা আপনাদেরকে জানাবো। চলুন তাহলে শুরু করি আমাদের গৌরবময় দিবস সম্পর্কে। আমরা অনেকেই ২৬ মার্চ কি দিবস? তা জানি না। এবার অনেক বাংলাভাষার অন্যদেশের লোক বা অন্য ভাষার অন্যদেশের ২৬শে মার্চ সম্পর্কে আগ্রহ থাকে। তাই আপনারা যাতে ২৬ মার্চ কি দিবস জানতে পারেন তার জন্য আমরা হাজির হয়েছি। ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। দীর্ঘ নয যেহেতু বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশের প্রত্যেক বছর বাংলাদেশের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কারণ এটি বাংলাদেশের সকল মানুষের কাছে একটি গৌরব এবং সম্মানের দিন। যেখানে পাকিস্তানের বর্বর থেকে বাঙালি তাদের নিজেদেরকে মুক্ত করার জন্য এই যুদ্ধ চালিয়ে নিজেদেরকে স্বাধীন করতে পেরেছেন। সুতরাং ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস।
ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গিয়েছেন ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। আর এই স্বাধীনতা দিবস আমাদের সকল বাঙালিদের কাছে এটি গৌরবময় এবং আনন্দের দিন। আর একই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বেদনার দিন। কিন্তু এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ২৬শে মার্চ কেন পালন করা হয়? তবে যারা এখন পর্যন্ত বাংলার ইতিহাস জানেন না তাদের মধ্যে এ ধরনের প্রশ্ন বেশি জেগে ওঠে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ঐদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে ওঠেনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। প্রায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বর্তমান বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছে। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। আর এই পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান যখন তাদের ধর্ম, সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধ করছিল তখন পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তান ওপর বর্বর আচরণ শুরু করেছিল। আর তখন পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের এই বর্বরতা মেনে না নিয়ে নিজেদেরকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে যুদ্ধে নেমে যান। অতঃপর তারা স্বাধীনতা অর্জন করে নিজেদেরকে স্বাধীন বা মুক্ত করতে সক্ষম হন। সুতরাং স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্য এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং একটি গৌরবময় দিন উদযাপন করার জন্য ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২৬ শে মার্চ ১৯৭১ সাল থেকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। কারণ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে রক্তক্ষয়ীমুক্তিযুদ্ধে অনেক ত্যাগ এর মাধ্যমে বিজয় লাভ করা হয়। আর বাঙালি অর্জন করে নেয় স্বাধীনতা। আর ঠিক তখন থেকে বর্তমান পর্যন্ত ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হবে নিয়মিত। ১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষ ভিন্ন হয়ে ভারত এবং পাকিস্তান যখন আলাদা হয়ে যায়। তখনপাকিস্তানের দুটি অংশ তৈরি হয় আর সেই দুটি অংশ হচ্ছে- পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান। তৎকালীন সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক অবস্থা পূর্ব পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেয়ার ফলে পূর্ব পাকিস্তান বিভিন্ন উপায়ে প্রতিবাদ শুরু করে দেয় ন্তু এতগুলো দিন বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানানো হয় তবে কেন ২৬ শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়? কারণ ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বাঙালির ওপর নির্মম ভাবে অত্যাচার করে। আর সেই সময় বাঙালি এবং সকল প্রেসার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ তাদের হাতে নিহত হয়। আর এটি সহ্য না করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং সকল শ্রেণীর মানুষদের যুদ্ধ করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। সুতরাং সেই থেকে ২৬শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয় এবং ঐদিন কে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশের দুইটি বিশেষ দিন পালন করা হয়। আর এই বিশেষ দিন গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি অনুচ্ছেদ স্বাধীনতা দিবস। ভারত বর্ষ ১৯৪৭ সালে বিভক্ত হয় ভারত ও পাকিস্তান গঠিত হয়। ঠিক তখন থেকেই ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষ হয়। পূর্ব পাকিস্তান তাদের অধিকার আদায়ের উদ্দেশ্যে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। আর এই সংঘর্ষ যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে আসে তখন বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। কারণ সেই সময় পূর্ব পাকিস্তান উপর পশ্চিম পাকিস্তানের নির্মম অত্যাচার চালায়। তৎকালীন সময়ে পচিশে মার্চ রাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্মম হত্যাকা- চালায়। আর এই ২৫শে মার্চ রাতকে কাল রাত বা অপারেশন সার্চলাইট হিসেবে অভিহিত করা হয়। এমতাব্যস্থায় বাঙালির পিক অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের পিক একদম দেয়ালে ঠেকে যায়। আর তখন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেন।মবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস বাঙালিদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যময় সাথে গৌরবময় একটি দিন। কারণ এই গরমের দিন প্রত্যেক বাঙালির জীবনে বয়ানে আনন্দ, বেদনা এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। যদিওবা এই দিনে আমরা হারিয়েছি বাংলার কৃতি সন্তানদের তবুও আমরা এই দিনটি তাদের কথা স্মরণ করে গৌরবের সাথে পালন করে থাকি। প্রত্যেক বছর গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি আমাদের আত্মত্যাগ, আত্মপরিচয় এবং ঐক্য বার্তা বয়ে আনে। কারন একটি দেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করে তখন সেই দেশের সকল মানুষের কাছে এর থেকে বড় আনন্দের বিষয় হতে পারে না। কারণ স্বাধীনভাবে একটি দেশে বিচরণ করা প্রত্যেক নাগরিকের কাছে যেন তার জীবনের বিশাল কিছু পাওয়া। আমাদের উচিত আমাদের কৃতি সন্তানদের এবং যেসকল ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গঃ দিয়েছেন সে সকল ব্যক্তিবর্গদের সম্মান, শ্রদ্ধা জানানো এবং তাদের কাছ থেকে আমাদের দেশকে রক্ষা করার অনুপ্রেরণা এবং তাদের দিক নির্দেশনা অনুসারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের কর্তব্য। সুতরাং আমাদের উচিত এই স্বাধীনতা দিবসকে একটি শক্তিতে পরিণত করে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ২০২২ সালেস বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫১ বছর পালন করা হবে। আপনারা যারা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৬ মার্চ কি দিবস ? কেন এবং ইতিহাস সম্পর্কে না জানেন তাহলে আপনারা আমাদের এই আর্টিকেল থেকে আশা করছি জেনেছেন। তাছাড়া আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জাগ্রত করা এবং নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং দেশ প্রেম জাগ্রত করার জন্য এসকল ইতিহাস তাদেরকে জানানো উচিত। যাতে করে তারা দেশকে সঠিকভাবে সম্মান করতে পারে এবং দেশের কৃতি সন্তানদের প্রতি সম্মান করতে পারে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারে।
লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক করকমিশনার এবং পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোঃ লিঃ
মন্তব্য