-->

আম্র কাননে অম্লান স্বাধীনতার প্রথম সূর্যোদয়

মোতাহার হোসেন
আম্র কাননে অম্লান স্বাধীনতার প্রথম সূর্যোদয়

মুজিবনগর সরকার গঠন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এবং বাঙ্গালীর জীবনে এক উজ্জ্বল অধ্যায়। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙ্গার লড়াই শুরু হয়েছে এ দিন থেকেই। এই দিনের জন্য বাঙ্গালীকে অপেক্ষা করতে হয়েছে সুদীর্ঘ ২১৪ বছরের কিছু বেশী সময়।

 

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। এই সরকারকে কেউ বলেন প্রবাসী সরকার, কেউ বলেন অস্থায়ী সরকার, কেউ বলেন বিপ্লবী সরকার। প্রকৃতপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম সরকার।

 

বাংলার শোষিত, নিপীড়িত ও নির্যাতিত জনতার মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সমর্থনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন ছিল মুজিবনগর সরকারের স্মরণীয় সাফল্য। স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহব্বানে দেশমাতৃকার সম্মান রক্ষায় মরণপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাংলার সূর্যসন্তানেরা। স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ ৫২ বছরেও এই দিনের তাৎপর্য.গুরুত্ব,বিশেষত্ব একটুও কমেনি।

 

বরং মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও স্বাধীনতা অর্জনের সূতিকাঘার হিসেবে আলো ছড়াবে অনাদিকালও।

 

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রণীত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিকামী রাষ্ট্রের প্রথম সংবিধান। এই ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের প্রথম সরকার বা মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয়। ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম লিখেছেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, মুজিবনগর সরকার ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়—এ তিনটি ঘটনা একসূত্রে গাঁথা।’ তাঁর স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, ‘তাজউদ্দীন আহমদ সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তে অধিবেশন আহব্বান করেন।

 

১০ এপ্রিলের ওই অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা ও পাক হানাদার বাহিনীকে স্বদেশ ভ‚মি থেকে বিতাড়িত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত এবং নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের জন্য প্রথম সরকার গঠন করা হয়।’ ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুসারে ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। কারণ ঘোষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের এই স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।’

 

অবশ্য বিশ্বের অপরাপর স্বাধীন রাষ্ট্রের অন্তবর্তী কালীন সরকার তথঅ অস্থায়ী সরকারের সদও দফতর অন্য দেশে হওয়ারও নজির আছে। পোলান্ডের স্বাধীনতাকামী প্রবাসী সরকারের সদর দপ্তর স্থাপিত হয়েছিল লন্ডনে। প্রিন্স নরোদম সিহানুকের নেতৃত্বাধীন স্বাধীন কম্বোডিয়ান সরকারের সদর দপ্তর স্থাপিত হয়েছিল বেইজিংয়ে। কোন কোন সময় এরা থাইল্যান্ডেও অবস্থন করতেন।

 

সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত আফগান সরকারের বিরুদ্ধে গঠিত আফগানিস্তানের মোজাহেদীনদের সদর দপ্তর ছিল পাকিস্তানের পেশোয়ারে, প্রবাসী পিএলও সরকারের সদর দপ্তর স্থাপিত হয় প্রথমে বৈরুতে, পরবর্তীকালে আম্মানে এবং সর্বশেষে তিউনিশিয়ায়।

 

তবে এসব সরকারসমূহের তুলনায় মুজিবনগর সরকার ছিল অনেকটাই অতুলনীয়। কারণ স্বাধীন অঞ্চলে নেতৃত্ব, দেশ-বিদেশে ব্যাপক জনসমর্থন ও সহানুভ‚তি, নিজস্ব আয়-ব্যয়ের ব্যবস্থা, স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা এবং সর্বোপরি দেশের অভ্যন্তরে আপামর জনগণের নজিরবিহীন সমর্থন ও ত্যাগ স্বীকার, পরিকল্পিতভাবে যুদ্ধ পরিচালনা এবং অসম প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে স্বাধীনতা অর্জন ইত্যাদি দিক বিবেচনায় মুজিবনগর সরকার ছিল সত্যিই অতুলনীয়।

 

শুধু তাই নয়, প্রায় এক কোটির মত শরণার্থীর জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করা এবং নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি গেরিলা বাহিনীর মাধ্যমে পাকবাহিনীর মধ্যে ত্রাসের সৃষ্টি করা ইত্যাদি সবকিছুই ছিল মুজিবনগর সরকারের অবিস্মরণীয় অর্জন।

 

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলেও শপথ গ্রহণ করে ১৭ এপ্রিল, বর্তমান মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে। এ সরকারের প্রধান (রাষ্ট্রপতি) হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই নামানুসারে বৈদ্যনাথতলার নতুন নামকরণ হয় মুজিবনগর এবং অস্থায়ী সরকার পরিচিত হয় মুজিবনগর সরকার নামে। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত মুজিবনগর ছিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারের রাজধানী।

 

দেশি-বিদেশি শতাধিক সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত সময়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। মঞ্চে থাকা চেয়ারগুলোর মধ্যে একটি খালি রাখা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য।

 

সেখানে Declaration of Independence পাঠ করেন গণপরিষদের স্পিকার ইউসুফ আলী। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘... এবং যেহেতু সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়াছে সেই ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের সমন্বয়ে গণপরিষদ গঠন করিয়া পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য মনে করি, সেইহেতু আমরা বাংলাদেশকে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করিতেছি এবং উহার দ্বারা পূর্বাহ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করিতেছি।’প্রথমে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত হয়। তারপর বাংলাদেশের মানচিত্রশোভিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলো। স্থানীয় চার তরুণ পরিবেশন করেন জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’

 

মুজিবনগর সরকার ছিল জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত সরকার। মুক্তিযুদ্ধের ওপর এর প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ে বাংলার যে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, তার ঠিক ২১৪ বছর পর অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আরেক আম্রকাননে বাংলার সেই অস্তমিত সূর্য আবারও উদিত হয়।

 

অবশ্য ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্র কাননে স্বাধীনতা সূর্য অস্তিমিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বাংলার মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করলেও কোন আন্দোলন সংগ্রাম সফল হয়নি। আবার সে সেব আন্দোলনকে ব্যথ্য বলা যাবে না কারণ, এসব আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়েই রচিত হয় পরবর্তী আন্দোলনের অভিযাত্রা।

 

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্তে¡র ভিত্তিতে মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তান ও হিন্দু অধ্যুষিত ভারত রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান মিলে সমগ্র পাকিস্তান। পাকিস্তানের এ দুই অংশের মধ্যকার দূরত্ব ২ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। পূর্ব অংশের পুরোটাই হলো বাঙালির বসতি। ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী আমাদের মুসলমান হিসাবে না দেখে বাঙালি হিসাবেই দেখেছিল। আর তাই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক শোষণ-লাঞ্ছনা-বঞ্চনা ২৩ বছর ধরে অব্যাহত থেকে চরম মাত্রায় পৌঁছে যায়। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার বৈষম্য বাড়তে থাকে আশঙ্কাজনকভাবে।

 

বাংলার জনগণ এ বৈষম্য থেকে মুক্তি চেয়েছিল। সে লক্ষ্যেই ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বাঙালিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে সমর্থন দেয়। জনগণের প্রত্যাশা ছিল, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা পরিচালিত হলে বাঙালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনার অবসান হবে। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীও তা জানত। তাই তারা বাঙালির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ পথ পরিহার করে গণহত্যার মাধ্যমে এ জাতিকে দমন করার উদ্যোগ নেয়।

 

১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে এ দেশের মাটিতে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করতে শুরু করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের আগে তারবার্তার মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

 

স্বাধীনতার ঘোষণা মানেই হলো এ দেশ আর পাকিস্তানের অংশ নয় বরং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র, যার নাম বাংলাদেশ। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি ছিল-এটি মুক্ত-স্বাধীন দেশ নয়। বাংলাদেশের মাটি দখল করে আছে হানাদার বাহিনী; নির্বিচারে হত্যা করছে মানুষকে। তাই বাংলাদেশকে হানাদারমুক্ত করতে একটি সরকার গঠন অপরিহার্য হয়ে পড়ে। সেই অপরিহার্যতার বাস্তব রূপ হলো মুজিবনগর সরকার। এটি একটি বৈধ সরকার।

 

কারণ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জণগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়েই এ সরকার গঠিত হয়েছিল। প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করা হয়েছিল। তিনি কোনো দ্বিতীয় নেতার ঘোষণা দিয়ে যাননি। সেই সময়ের আওয়ামী লীগে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেতাও ছিলেন না। তাই সরকার গঠন প্রক্রিয়াটি খুব সহজ ছিল না।

 

বিকল্প নেতা নির্বাচনের ঘোষণা না থাকলেও দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্যতম। তাই যুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি কার্যকর সরকার গঠনে মূল ভ‚মিকায় নামেন তাজউদ্দীন আহমদ। সরকার গঠনের প্রাক্কালে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রয়োজন অনুভূত হয়। প্রথম সাক্ষাতের তারিখ নির্ধারিত হয় ৩ এপ্রিল।

 

কিন্তু ভারত সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার মতো কোনো আইনগত বৈধতা ছিল না। ফলে সেখানে বসেই তাজউদ্দীন আহমদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং নিজেকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে একটি সরকার গঠন করেন। ভারত সরকার তাজউদ্দীন আহমদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছিল। ১০ এপ্রিল রাত ৯টা ৩০ মিনিটে মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাজউদ্দীনের ভাষণ ভারতের অল-ইন্ডিয়া রেডিও’র শিলিগুড়ি কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়। এর জন্য শিলিগুড়ি কেন্দ্রটিতে একটি অতিরিক্ত ট্রান্সমিটার সংযোজন করা হয়েছিল, যা পরবর্তী সময়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ নামে প্রচার কাজ চালায়।

 

পাক বাহিনী দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর লেলিয়ে দিয়ে যে নরহত্যাযজ্ঞের শুরু করে তা প্রতিরোধ করার আহব্বান জানিয়ে আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।...আমাদের অদম্য সাহস ও মনোবলের কাছে শত্রু যত প্রবল পরাক্রম হোক না কেন, পরাজয়বরণ করতে বাধ্য।...আপাতত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান কার্যালয় স্থাপিত হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মুক্ত এলাকায়।’

 

ভাষণ প্রচারিত হওয়ার পরও তাজউদ্দীনকে মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য দলের বিভিন্ন নেতার মনোতুষ্টি আদায় করতে হয়। তিনি দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে একটি ভারতীয় বিমানে ১১ এপ্রিল আগরতলা পৌঁছান। সেখানে অবস্থান করছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আবদুস সামাদ আজাদ, খন্দকার মোশতাক আহমেদসহ বেশ কয়েকজন নেতা। মোটামুটি সবাই তাজউদ্দীনকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিলেও খন্দকার মোশতাক তা মানতে নারাজ।

 

মুজিব নগর সরকার গঠন একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। একথা ঠিক, গত ৫২ বছরে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূল ভিত্তি যা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্টা এখনো পুরো পুরি সম্ভব হয়নি। তাই বলে মুজিবনগর সরকারে গৌরবময় ভূমিকাকে অস্বীকার করা যাবে না।

 

মোতাহার হোসেন: উপদেষ্টা সম্পাদক ,দৈনিক ভোরের আকাশ এবং সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম। ১২.০৪.২০২৩ ই।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version