-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

বড় অর্জন দারিদ্র্য সূচকে উন্নতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বড় অর্জন দারিদ্র্য সূচকে উন্নতি

বিবিএস আনুষ্ঠানিকভাবে খানা আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২ এর মূল পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বুধবার। জরিপে বলা হয়েছে, দেশের মোট জনংসখ্যার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ দরিদ্র। ২০১৬ সালে পরিচালিত আগের জরিপে এই হার ছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ছয় বছরের মধ্যে দারিদ্র্য কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। একই সময়ে অতি দারিদ্র্যের হার ১২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। মানুষের আয় ও ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে।

 

বর্তমানে জনপ্রতি মাসিক আয় ৭,৬১৪ টাকা। মানুষ দৈনিক গড় ২৩৯৩ ক্যালরি খাবার গ্রহণ করে। চাল, ডাল, গম, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও ফলমূল থেকেই সাধারণত এই ক্যালরি আসে। ছয় বছর আগে ২০১৬ সালে দেশের মানুষ গড়ে দৈনিক ২২১০ ক্যালরি খাবার গ্রহণ করত। তবে মানুষের মধ্যে আয়বৈষম্যও তুলনামূলক বেড়েছে। বিশেষ করে শহরের মানুষের। বিবিএসের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষের দিকে গিনি সহগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৪৯৯ পয়েন্ট। ২০১৬ সালে গিনি সহগ ছিল দশমিক ৪৮২ পয়েন্ট।

 

সাধারণত দশমিক ৫০০ হলেই একটি দেশকে উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেদিক থেকে দেশ অতি সামান্যই দূরে রয়েছে।

 

স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বেশ উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ২০৩১ সালে দেশের দারিদ্র্যকে প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে উন্নত বিশ্বের তালিকায় স্থান করে নেয়ার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। কোভিড অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় চলেছে, কমেছে দারিদ্র্য।

 

এটা একটি বিরাট অর্জন। দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে বর্তমান অর্থবছরে (২০২২-২৩) সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে দেশের ৫ কোটি মানুষের জন্য নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা, শহীদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও সম্মানি ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, স্বামী নিগৃহীত ও বিধবা ভাতা, মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি, হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ভাতা হিসেবে দেয়া হচ্ছে নগদ অর্থ।

 

এ ছাড়াও সরকারি কর্মচারীদের অবসর ও পারিবারিক অবসর ভাতাও দেয়া হচ্ছে। টেকসই উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে নাগরিকদের জীবনমানকে এগিয়ে নিতে গেলে দারিদ্র্য কমানো জরুরি।

 

এক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ কর্মপরিকল্পনায় সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি দেশের সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করবে। দারিদ্র্যের মতো অভিশাপকে মুছে ফেলার দৃঢ় প্রত্যয়ে সাধারণ জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যেই দেশ নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version