-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

নদী খননের অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে সতর্ক হোন

নদী খননের অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে সতর্ক হোন

ভরাট হওয়া নদ-নদীর পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার সেগুলো পুনর্খননের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কিন্তু সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলের ছোট যমুনা নদী পুনর্খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যে উদ্দেশ্যে নদীটি খনন করা হচ্ছে- তা পূরণ হবে না বলে স্থানীয়দের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গত শনিবার একটি দৈনিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

 

ছোট যমুনা নদীটির দুই পাড়ে অনুমোদনহীন অনেক স্থাপনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেগুলো উচ্ছেদ না করেই নদী খনন কাজ শুরু করেছে। নদীটির তলদেশে ২৮ ফুট ও উপরের অংশে ৮০-১০০ ফুট প্রশস্ত রেখে খনন করার কথা রয়েছে।

 

কিন্তু আগে নদীটির প্রকৃত যে আকার ছিল, তার ৪ ভাগের ১ ভাগও খনন করা হচ্ছে না। এতে না বাড়বে নদীর গভীরতা, না বাড়বে পানিপ্রবাহ। নদীর তলদেশের পলিমাটি তুলে নদীর পাড়েই স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। বর্ষা আসন্ন। তখন জমা করা মাটি ধুয়ে আবার নদীতেই পড়বে। লাভের লাভ কিছুই হবে না। জনগণের ট্যাক্সের টাকার শুধু অপচয়ই হবে।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ছোট যমুনা নদীটি তার প্রকৃত আকার হারিয়েছে এবং ভরাট হয়ে গেছে। নদীটি সঠিকভাবে খনন করা হলে আশপাশের কৃষকরা শুকনো মৌসুমে জমিতে পানি সেচ দিতে পারতেন। কিন্তু সঠিকভাবে খনন কাজ না হওয়ায় শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি থাকবে কিনা সে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

 

সরকার ২০২২ সালে দেশের ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনর্খনন প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরার ছোট যমুনা নদী পুনর্খননের কাজও ছিল। নদীটির ১৫ দশমিক ৯০ কিলোমিটার পুনর্খননের কাজটি পায় একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

 

কার্যাদেশ ছিল ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ মে পর্যন্ত। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে বাকি আছে আর মাত্র কটা দিন। আসবে বর্ষাও। এ সময়ের মধ্যে কি নদী খননের কাজ শেষ হবে- সেটা একটা প্রশ্ন।

 

এটা ভালো খবর যে সাতক্ষীরার ছোট যমুনা নদীটি পুনর্খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে খনন করে নদীর পলি মাটি নদীর পাড়েই রাখা হচ্ছে। পাড়ে রাখা পলি মাটি বৃষ্টির পানিতে তো ধুয়ে আবার নদীতেই পড়বে। ফলে আবার নদী ভরাট হয়ে যাবে। তাহলে খননের কোনো সুফলই জনসাধারণ পাবে না। নদীর পাড়ে রাখা মাটি বৃষ্টিতে ধুয়ে যাতে আবার নদীতে না পড়ে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

 

শুকনো মৌসুমে যাতে নদীর নাব্য বজায় থাকে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। পাশাপাশি নদী পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো দ্রæত উচ্ছেদের উদ্যোগ নিতে হবে। কোনো অবৈধ স্থাপনার জন্য নদী খনন কার্যক্রম বিঘ্নিত হোক সেটা আমরা চাই না।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version