-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্দশা বিবেচনায় টিসিবির সক্ষমতা বাড়ান

নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্দশা বিবেচনায় টিসিবির সক্ষমতা বাড়ান

দেশের দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বিবেচনায় সরকার আসন্ন জাতীয় বাজেটে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির সক্ষমতা আরো বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

 

স্বীকার করতে হবে যে, কোভিড-১৯ অতিমারি এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব ব্যাপী জ্বালানি তেল-গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বহুলাংশে। এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানা উদ্যোগ এবং দেশে ধান-চালের বাম্পার ফলন হলেও চালসহ নিত্যপণ্যের দামের লাগাম টেনে ধরে রাখা যাচ্ছে না।

 

এ অবস্থায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে সরকার গ্রহণ করেছে নানাবিধ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি।

 

এর মধ্যে অন্যতম টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে দরিদ্র ও নিম্ন বিত্তদের মধ্যে কয়েকটি নিত্য খাদ্যপণ্য বিক্রি। এর আওতায় বাজারে অর্ধেক দামে কোটি পরিবারকে দেয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। যার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন ৫ কোটি মানুষ। তবে মূলত এই সুবিধার আওতায় রয়েছেন রাজধানী ঢাকাসহ শহরাঞ্চলের মানুষ। গ্রামাঞ্চলের মানুষ এই সহায়তা পান না বললেই চলে। আসন্ন বাজেটে এর আওতা আরো বাড়ানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে।

 

যাতে স্বল্প আয়ের মানুষ স্বস্তি পান ভোগ্যপণ্যে। সেক্ষেত্রে টিসিবিকে প্রদেয় ভর্তুকির পরিমাণ আরো বাড়ানো হবে জাতীয় বাজেটে। তদুপরি কার্ড বিতরণে ডিলারদের অনিয়ম-দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি দূর করতে পুরো ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজিয়ে ডিজিটালাইজেশন করা হবে। এতে উপকারভোগীর সংখ্যা আরো বাড়বে আগামীতে।

 

সরকার ইতোমধ্যে চালু করেছে নানা ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি’। হতদরিদ্রদের মধ্যে মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ তথা বিক্রি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মোট ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবার স্বল্পমূল্যে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পাচ্ছেন।

 

এর পাশাপাশি দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় ৭৩৭ ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় প্রতিকেজি চাল ৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি আটা ১৮ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা থেকে প্রতিদিন উপকৃত হচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। চালের বাজার দর নিয়ন্ত্রণে সরকার ইতোমধ্যে আমদানি শুল্ক কমিয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছে চাল আমদানি। সরকারের খাদ্য মজুতও সন্তোষজনক।

 

প্রধানত ব্যবসায়ী, মিল মালিক, আড়তদার ও আমদানিকারকদের কারসাজিতে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কিছুতেই। সরকার চালের শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণসহ যাবতীয় রেগুলেটরি ডিউটি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চাল আমদানিকারকদের। এবার ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য বাড়িয়ে দিয়ে সরকার সহায়তা করেছে কৃষককে, যাতে তারা লাভবান হতে পারেন।

 

জাতীয় বাজেটে কৃষি খাতে যথেষ্ট ভর্তুকি, প্রণোদনা ও সহায়ক কর্মসূচি রাখা হয়েছে। যাতে কৃষকসহ গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার, ফুলফল-সবজি উৎপাদক প্রায় সবাই উপকৃত হন কমবেশি। সরকার সবিশেষ জোর দিয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর।

 

মূলত সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেই আরো বাড়ানো হচ্ছে টিসিবির সক্ষমতা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version