-->

ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

আব্দুস সালাম, দিনাজপুর
ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দীক, ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ এবং মহিলা সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য জাকিয়া সুলতানা চন্দনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইজিপিপি প্রকল্প এবং পুকুর ঘাট সংস্কারের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের একাধিক কৃষক।

 

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ আবু বকর ছিদ্দীক অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) নন-ওয়েজ প্রকল্প ২০২২/২০২৩ অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ে আস্করপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর খাড়ির ওপর আব্দুর রশিদের জমি সংলগ্ন কালভার্ট নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করে চুনিয়াখাঁড়ি কালভার্ট সংস্কার করেন।

 

একই এলাকার হাসলা পুকুর তৈরিকৃত কালভার্টের যৎসামান্য সংস্কার করে প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের বেশির ভাগই আবু বকর ছিদ্দীক ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রশিদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ।

 

দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুর রশিদের জমির ওপর দিয়ে স্থাপিত ভগ্নদশা ও বেহাল অবস্থার কালভার্টটির সংস্কারের কোনো কাজই করা হয়নি। এর ফলে অত্র ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কৃষকদের পড়তে হয় বিপাকে। দীর্ঘদিনের এই ভগ্নদশা ও চলাচলের অনুপযোগী কালভার্টটির কারণে কৃষকদের ধান কাটা, মারাইয়ে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।

 

এমনকি ধান কাটতে এবং বহন করতে স্বাভাবিক বাজার মূল্যের চেয়ে বিঘাপ্রতি ৬ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়। অথচ বিঘাপ্রতি যেখানে ধান কাটতে ব্যয় হয় ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার বলে জানান স্থানীয় একাধিক কৃষক।

 

ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলেন, সরকার আমাদের দুর্ভোগ ও কৃষিক্ষেত্রে ব্যয়ভার লাঘবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কারণে কৃষকদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। এলাকার প্রান্তিক পর্যায়ের একাধিক কৃষকের দাবি গৌরিপুর এলাকার চুনিয়াখাঁড়ির ওপর কালভার্টটি নির্মিত হলে তাদের কৃষিক্ষেত্রে ব্যয় অনেকাংশে লাঘব পাবে এবং যাতায়াতে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে।

 

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আব্দুর রশিদের জমির ওপর দিয়ে কালভার্টের জন্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। ওই বরাদ্দকৃত টাকা ইউপি চেয়ারম্যানসহ মেম্বার প্রতিনিধিরা মিলে একটি পুরাতন কালভার্ট সংস্কারের কাজে লাগান।

 

৯নং আস্করপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড গৌরিপুর এলাকার ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন দপ্তরে দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখে আস্করপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের জমি সংলগ্ন একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজের জন্য সরকারি ভাবে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। আস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ আবু বকর ছিদ্দীক উক্ত টাকা উত্তোলন করার পরেও অদ্যাবধি কালভার্টের নির্মাণ কাজ না করে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

 

মহিলা সংরক্ষিত আসনের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাকিয়া সুলতানা চন্দন সরস্বতীপুর তারনী পুকুর ঘাটের মেরামত কাজের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত অর্থ ১ লাখ টাকা উত্তোলন করে পুকুরঘাট সংস্কার না করে নিজ হেফাজতে রেখে সমুদয় অর্থ আত্মসাতের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

 

এ প্রসঙ্গে ইউপি মহিলা সদস্য জাকিয়া সুলতানা চন্দনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি দেখা না করে মুঠোফোনে বলেন, পুকুরঘাট নির্মাণে বরাদ্দকৃত অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে করলেই হলো। আমিতো আর ১ লাখ টাকা মেরে বড়লোক হবো না।

 

জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বিশেষ খাত থেকে পুকুর ঘাট নির্মাণে বরাদ্দকৃত ১ লাখ টাকা কাজে না লাগিয়ে নিজ হেফাজতে রাখার বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি বরাদ্দকৃত অর্থতো হজম করে দেইনি, রক্ষিত আছে। অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই কাজ করলেই হলো।

 

এ বিষয়ে ৯নং আস্করপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু বক্কর ছিদ্দীক বলে, আমি রেজুলেশন করে ছেড়ে দিয়েছি। আব্দুর রশিদের জমির ওপর দিয়ে যে কালভার্ট হওয়ার কথা ছিল সেটা হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা আব্দুর রশিদ ও মহিলা ইউপির সদস্য জাকিয়া সুলতানা চন্দন একটা কমিটি করে কাজ সম্পন্ন করেছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version