-->
সম্পাদকীয়

ডলার কারসাজিতে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি

ডলার কারসাজিতে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পুরো বিশ্বে ডলার সংকট বাড়ছে। এ সংকট কোনোভাবেই কাটছে না। দেশে কয়েক মাস ধরে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

 

একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে জানা গেছে, নতুন সিদ্ধান্তের ফলে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম পড়বে সর্বোচ্চ ১০৮-১০৯ টাকা। কিন্তু গত বুধবার রাজধানীর বেশিরভাগ মানি এক্সচেঞ্জে ডলার বিক্রি হয়েছে ১১২ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১১২ টাকা ৫০ পয়সায়। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো তথ্যে বেশি দামে ডলার বিক্রি করে দেখানো হচ্ছে কম দাম। তাদের অভিযোগ, নির্ধারিত দামে ব্যাংকেও ডলার মিলছে না।

 

তারা বলছেন, কেউ সংকটকে পুঁজি করে আবার কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইচ্ছামতো ডলারের দাম আদায় করছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে আমদানি ব্যয়। এর প্রভাবে পণ্যমূল্য বেড়ে মূল্যস্ফীতির পারদও চড়ছে। সরকার নানা ব্যবস্থার মাধ্যমে সংকট উত্তরণের প্রয়াস চালাচ্ছে।

 

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এ সংকট দুই-তিন বছর পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে। তবুও আমদানি ব্যয় পরিশোধের সময় ঘনিয়ে আসার ফলে মজুদ ডলারের ওপর চাপ বাড়বে। আবার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রপ্তানি খাতে কার্যাদেশ আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, অর্থনৈতিক চাপ কমাতে সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলো অপর্যাপ্ত ও স্বল্পমেয়াদি।

 

সরকারকে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে মধ্যমেয়াদি উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমান সংকট ও ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল সচেতন রয়েছে। বর্তমান কঠিন সময়ে ব্যয় সংকোচন ও উপযুক্ত নীতি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক দুঃসময় কাটাতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য কেনাবেচা কমে গেলে এর প্রভাব পণ্যের দামেও পড়বে।

 

অর্থাৎ মূল্য কমতে শুরু করবে। এখন খেয়াল রাখতে হবে সম্ভাব্য এ রকম পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ব্যাংকসহ কোনো অংশীজন এই সময়ে বড় অঙ্কের ডলার মজুদ করছে কিনা। পাচার কিংবা মজুদের কারণে ডলারের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাশ টানা যাবে না। ফলে আমদানি-রপ্তানিসহ সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে।

 

কেউ যাতে পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে অস্বাভাবিক লেনদেন ও অতিরিক্ত মুনাফার পথে যেতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা দরকার। এই কঠিন সময় মোকাবিলায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version