-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

মসলার ‘আচরণ’ কাম্য নয়

মসলার ‘আচরণ’ কাম্য নয়

কয়েকদিন পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এ সময় সামর্থ্যবানরা সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দেবেন। আর কোরবানি ঈদ সামনে রেখে বাজারে আদা, রসুন, জিরা থেকে শুরু করে সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে। মসলায় অতিরিক্ত শুল্ক, বন্দর থেকে পণ্য খালাসে বিলম্বে সরবরাহ কমে যাওয়া এবং ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর আমদানি খরচ বেড়েছে। তাই বলে দ্বিগুণেরও বেশি?

 

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্বল বাজার মনিটরিংয়ের কারণে বিক্রেতারা ভোক্তার পকেট কাটছে, যা করোনা পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই কাম্য নয়। কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগও উঠেছে সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে। আমদানি করা মসলা গুদামে আটকে রাখারও অভিযোগ রয়েছে শতাধিক আমদানিকারকের বিরুদ্ধে। গত ৬ মাসে ৬১ হাজার টন মসলা আমদানি হলেও নানা অজুহাতে দাম কমছে না।

 

জানা গেছে, কোরবানি সামনে রেখে চলতি মাসের ২০ দিনেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রেকর্ড ৩ হাজার টন দারুচিনি, ৭৬৫ টন এলাচ, ৪৩৭ টন লবঙ্গ এবং ৬৬১ টন জিরা আমদানি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এ মসলা কোথায় হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে আঙুল উঠছে বারবার। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে চাল, ডাল ও তেল থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এতে রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় টিসিবি ট্রাক সেলে দিন দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে।

 

এটা স্পষ্ট যে, করোনা-দুর্যোগসহ নানা কারণে অনেকের আয়-রোজগার কমে গেছে, অনেকেই হয়েছেন কর্মহীন। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফল শূন্য। ভোজ্যতেল ও চিনির জন্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম রীতিমতো নাম উল্লেখ করে পাঁচ-ছয়টি কোম্পানির কারসাজি তুলে ধরেছেন।

 

কিন্তু দুঃখজনক, তাদের বিরুদ্ধে অন্তত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা, মসলার বাজারের কারসাজিকারী চিহ্নিত হয়েছে। এবার কোনো বায়বীয় আশ্বাস না দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা দেখব। অবিলম্বে মসলার বাজারে সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে ফিরবে।

 

এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে; বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে, সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

 

এর বাইরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা এ-ও মনে করি, কেন্দ্র থেকে স্থানীয় উৎপাদন ক্ষেত্র পর্যন্ত ব্যবস্থাপনাও নজরদারির আওতায় আনা জরুরি। একইসঙ্গে আমদানিকৃত ও দেশজ উৎপাদিত এ দুই ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন ও নির্বিঘ্ন রাখার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version