-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

ওয়েবসাইটের সুরক্ষা বাড়ানো দরকার

ওয়েবসাইটের সুরক্ষা বাড়ানো দরকার

বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম বা কেন্দ্রীয় সার্ট সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। ৩১ জুলাই একটি হ্যাকার গ্রুপ হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে সাইবার আক্রমণের ঝড় বয়ে যাবে।’ এই পরিপ্রেক্ষিতে সার্ট নিজস্ব সাইবার ক্লিনিকে গবেষণার মাধ্যমে ওই হ্যাকার গ্রুপ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে জারি করেছে সতর্কতা।

 

সম্ভাব্য সাইবার হামলা থেকে সুরক্ষিত থাকতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা এবং সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি সংস্থাকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সতর্কবার্তা পাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট থেকে সতর্ক করা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সব ব্যাংকেই সাইবার রেসপন্স টিম রয়েছে।

 

তারা সার্বক্ষণিকভাবে ডেটা সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েব পেজে আলাদা একটি অপশন খোলা হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যালার্ট নামে। এতে সাইবার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংযোজন করা হচ্ছে, যা থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে নিজেদের সিস্টেম হালনাগাদ করতে পারে।

 

বর্তমানে সব সরকারি-বেসরকারি অফিসের তথ্য-উপাত্তও প্রতিষ্ঠানের আলাদা ওয়েবসাইটে সংরক্ষিত থাকে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ সুবিধা পেয়ে মানুষ বেশ স্বস্তি পেয়েছে। তবে গত মাসে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ। এসব তথ্য বেহাত হলে প্রতারণা ও অপরাধের ঝুঁকির মুখে পড়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে।

 

দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই তা সুরক্ষিত থাকছে না, বেহাত হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এবারের তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে সরকারি একটি সংস্থার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। কোন্ ওয়েবসাইট, তা নিরাপত্তার জন্য প্রকাশ করা হয়নি।

 

সরকার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন-কেপিআই) ঘোষণা করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। সেখানে বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করলে সাত বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ড দেয়া যাবে।

 

বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন বা ক্ষতির চেষ্টা করা হলে ১৪ বছর কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডই দেয়া যাবে। সম্প্রতি কেপিআইগুলো থেকেই তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এবারও এই কেপিআইগুলোই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

 

দেশে সরকারি-বেসরকারি অন্তত ২৫ লাখের বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে। এখন যদি কোনো প্রতিষ্ঠান হ্যাক হয়, তাহলে সব তথ্য তো হ্যাকারদের কাছে চলে যাবে। যেমনটি আমরা দেখেছি কেপিআই থেকে নাগরিকদের ব্যক্তিগত সব তথ্য চলে গিয়েছিল হ্যাকারদের হাতে। এর আগেও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাট হয়েছিল হ্যাকারদের দ্বারা।

 

সাইবার হামলায় প্রথমেই যে বিষয়টি সামনে আসে তা হলো ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের হুমকি। এরপরই রয়েছে আর্থিক ঝুঁকি। বিপুলসংখ্যক মানুষের মোবাইল ফোন নম্বর ব্ল্যাকমেইল করার কাজেও ব্যবহার করা যায়। শুধু আর্থিক ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস নয়, রয়েছে জঙ্গি হামলা সন্ত্রাসের ঝুঁকিও। সেক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version