-->
সম্পাদকীয়

হজ ও ওমরার সুবিধার ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক

হজ ও ওমরার সুবিধার ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক

সম্প্রতি সফররত সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বৈঠকে সৌদি সরকারের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরে ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হজ এজেন্সিদের সংগঠন হাব। হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য আসছে একগুচ্ছ সুবিধা। যেমন- ভিজিট ভিসায় ওমরাহ করার সুযোগ, ওমরাহ ভিসায় সমগ্র সৌদি আরব ভ্রমণ, ভিসার মেয়াদ ৩০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিন, কর্মরত প্রবাসীদের তিন মাসের জন্য পরিবারের সদস্যদের সৌদিতে নিয়ে যাওয়া এবং হজের ব্যয় কমানো।

 

সৌদি প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, খুব শিগগিরই এসব সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়ন হবে। সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় ২৮ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে। অনেকে দীর্ঘ সময় সেখানে কর্মরত। তাদের দাবি ছিল- পরিবারকে যেন সৌদি সরকার তাদের সঙ্গে থাকার অনুমতি দেয়।

 

তাদের দাবির প্রতি সম্মান রেখে সফরকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন- আপাতত তিন মাস পরিবারকে সঙ্গে রাখার অনুমতি পাবেন। সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশের যারা রয়েছেন, তারা এখন থেকে সর্বোচ্চ তিন মাসের জন্য তাদের পরিবারের এক বা একাধিক সদস্যকে সে দেশে নিয়ে যেতে পারবেন। পরিবারের মানুষজন সৌদি আরবে গিয়ে অবস্থান এবং ঘোরাঘুরিও করতে পারবেন।

 

পবিত্র হজ ব্যবস্থাপনায় এবার বড় ধরনের সমস্যা না হলেও মিনা-মুজদালিফায় হাজিদের তাঁবুতে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে ঘাটতি ছিল। বাংলাদেশি হাজিদের অনেক টয়লেটে পানি ছিল না। বিদ্যুৎ সমস্যার কারণেও ভোগান্তিতে পড়েন হাজিরা। অনেক হাজির লাগেজ (ট্রলি) পাওয়া যায়নি। মুজদালিফা থেকে মিনায় আসার পর হাজিদের জামারায় (শয়তানকে পাথর মারার স্থান) পাঠানো হয়। তখন শয়তানকে পাথর মারার আগে তাদের কাউকে তাঁবুতে প্রবেশ করতে দেয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ।

 

এতে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি রোদে কয়েক কিলোমিটার হাঁটার পর বয়স্ক হাজিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউ কেউ মারাও যান। এসব কারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তাই বয়স্ক হাজিদের মুজদালিফা থেকে মিনায় আসার পর তাঁবুতে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ দেয়া হলে, পরে তারা বিকেলে পাথর মারতে পারবেন। এতে বয়স্ক হাজিরা অসুস্থ হবেন না। এ বিষয়গুলো সৌদি হজমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে সমাধান চাওয়া হয়েছে বৈঠকে। এসব বিষয়ও বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সফরকারীরা।

 

হজ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি আবশ্যকীয় শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত। বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ। তারপরও এ দেশ থেকে হজ ও ওমরাহ পালন এখনো বেশ ব্যয়বহুল, জটিল ও হয়রানিমূলক। অথচ বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় অর্ধেক খরচে একজন হজযাত্রী ভারত ও পাকিস্তান থেকে হজ পালন করতে যেতে পারেন।

 

সাধারণত যাদের সামর্থ্য আছে, তারাই হজ করতে যান। কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে অল্পসংখ্যক ছাড়া বেশিরভাগ হজযাত্রীর সামর্থ্যরে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সফররত সৌদি প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য ঘোষিত ব্যয় সাশ্রয়সহ একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version