-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে ঠেকাতে হবে প্রতারণা

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে ঠেকাতে হবে প্রতারণা

বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। তথ্যপ্রযুক্তিকে অপব্যবহার করে প্রতারক চক্রও সক্রিয় রয়েছে প্রতারণায়। অনলাইনে মানুষ নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সর্বশেষ দুবাইভিত্তিক এমএলএম কোম্পানি মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জে (এমটিএফই) বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন দেশের লাখো মানুষ। যারা দ্রুত আয় করার স্বপ্ন নিয়ে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা এখন হা-হুতাশ করছেন।

 

যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপেটুইউর মতো প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের পর এমএলএম নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। অতি লোভে মানুষ এসব খাতে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা এবং ক্রিপ্টো কারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। সমবায় মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের হুঁশিয়ারি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান কোনো কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না মাল্টিপারপাসের নামে প্রতারণা। রীতিমতো আইন পাস করেও প্রতারণামূলক এ বাণিজ্যের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।

 

২০০৬ সালে যুবক ২ হাজার ৬০০ কোটি, ২০১১ সালে ইউনিপেটুইউ ৬ হাজার কোটি আত্মসাৎ করে উধাও হয়ে যায়। বর্তমানে নতুন কৌশলে ভার্চুয়াল পঞ্জি স্কিম বা এমএলএম পদ্ধতিতে প্রতারণা চলছে। সর্বশেষ অ্যাপসভিত্তিক এমএলএম স্কিম এমটিএফইর ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ। দেশ থেকেই কয়েক হাজার কোটি টাকা চলে গেছে এই অ্যাপসের মাধ্যমে। প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মতো পাচার হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সাইবার পুলিশ এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।

 

এমটিএফইর প্রতারণার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক ইউনিট কাজ করছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে ডিবি এবং সিআইডিও কাজ করছে। শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তদন্তকাজ? দুঃখজনক বাস্তবতা হলো ডেসটিনি, যুবক, ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের পর ই-কমার্সভিত্তিক কোম্পানিগুলোর একের পর এক প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।

 

ই-কমার্সভিত্তিক বড় ধরনের প্রতারণার অভিযোগে ১১টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। তদন্তের দীর্ঘসূত্রতায় ঘুরপাক খাচ্ছে মামলার অগ্রগতি। আমরা চাই দ্রুত তদন্ত শেষ করে এসব মামলার নিষ্পত্তি হোক। অবৈধ অনলাইন গ্যাম্বলিং ক্রিপ্টো ট্রেডিং করা এমটিএফই অর্থ আত্মসাতের পথ মূলত ডিজিটাল পেমেন্টেই ত্বরান্বিত হয়েছে বলে মনে করেন আর্থিক অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।

 

পাশাপাশি আগাম আর্থিক অপরাধ শনাক্তে দেশে মজবুত ভিত্তি গড়ে না ওঠাকেও দায়ী করছেন তারা। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকেই প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে সতর্কতা জানিয়ে এলেও মানুষ লোভের ফাঁদে পড়ে এখানে টাকা দিচ্ছিল। ডিজিটাল যুগে গ্রাহকদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে খোলা হচ্ছে নানা রকম অনলাইন শপ, অনলাইন ব্যাংকিং।

 

যারা এর সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জনস্বার্থ চিন্তা করতে হবে। সরকারের সাইবার সিকিউরিটিকে আরো বেশি কার্যকর ভ‚মিকা পালন করতে হবে। আগামীতে কেউ যাতে অনলাইন প্রতারণার শিকার না হয়, এমন প্রত্যাশা রাখছি সরকারের কাছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version