-->
শিরোনাম
সম্পাদকীয়

যাত্রীদের স্বস্তি দেবে কি থার্ড টার্মিনাল?

যাত্রীদের স্বস্তি দেবে কি থার্ড টার্মিনাল?

হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে একে ‘সফট ওপেনিং’ বলছে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। ২০২৪ সালের শেষের দিকে পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য হবে এই টার্মিনাল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা, ভোগান্তি ও হয়রানির শেষ নেই। প্রায়ই খবরের কাগজে সংবাদ হয়। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব আর বিমানবন্দরের কর্মীদের আচরণ- দুইয়ে মিলে দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা।

 

নতুন টার্নিমাল চালুর মধ্য দিয়ে যাত্রী ভোগান্তির নিরসন হবে কিনা- সে প্রশ্ন সামনে আসছে। স্বাধীনতার ১১ বছর পর ১৯৮০ সালে কুর্মিটোলায় বিমানবন্দরটি চালু হয় ‘জিয়া আন্তর্জাতিক’ বিমানবন্দর নামে। পরে নাম বদল করে হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। একটি ভবনে দুটি টার্মিনাল দিয়েই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার কাজ চলে আসছে এতদিন। গাদাগাদি ভিড় থাকে টার্মিনালের ভেতরে।

 

ঢোকার মুখে, তল্লাশির জায়গা, চেক ইন বা ইমিগ্রেশনের কাউন্টার, সব জায়গায় লম্বা লাইন। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালে বছরে ৬৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারে। থার্ড টার্মিনাল চালুর পর এই সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ২০ লাখে উঠবে। বর্তমানে শাহজালালের টার্মিনালে দৈনিক সর্বোচ্চ দেড়শ ফ্লাইট হ্যান্ডলিং হচ্ছে।

 

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এখানে আরেকটু সক্ষমতা বাড়ানো গেলে বর্তমান রানওয়েকেই আরো কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বেশি ব্যবহার করা যাবে। এটি মূলত তিন তলাবিশিষ্ট। এ টার্মিনালটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচইন এয়ারপোর্টের চেয়ে অত্যাধুনিক দাবি করতে পারি আমরা। এটা শুধু দেখতেই যে নয়নাভিরাম, দৃষ্টিনন্দন সেটা নয়। প্রযুক্তির দিক থেকেও সবার সেরা।

 

থার্ড টার্মিনালে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের নির্ভরযোগ্য সব প্রডাক্ট। মানেও সেরার দাবিদার আমরা। এ একটা এয়ারপোর্টই দেশের বিশেষ পরিচিতি এনে দেবে। এটা আমাদের অহংকার, এটা আমাদের সক্ষমতার অন্যতম মানদন্ড। জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণকাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যাজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

 

কর্তৃপক্ষ বলছেন, শাহজালাল বিমানবন্দর সম্পর্কে বিদ্যমান নেতিবাচক ধারণা পাল্টে যাবে থার্ড টার্মিনালে নামার পর। মুছে যাবে সেবার মান নিয়ে থাকা নানা অভিযোগ। এটি দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছে নতুন নতুন এয়ারলাইন্সও। ইতোমধ্যে ১২টি নতুন এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আবেদন করেছে। সব ইতিবাচক দিক। আমরাও আশাবাদী হতে চাই। বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন দরকার। শুধু নান্দনিকতা নয়।

 

যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা, বিমানবন্দরে যাত্রীরা যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হন, সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। মনিটরিং বৃদ্ধি করে লাগেজ ডেলিভারিতেও গুরুত্ব দিতে হবে। অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের বিষয়টিও সামনে আসছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version