ইফতেখার নাজিম
উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র উন্নত দেশ নয়, উন্নয়নশীল দেশেও শিল্পায়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও আধুনিকায়নে নতুন নতুন প্রযুক্তি ধারণায় উদ্ভাবন ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। উদ্ভাবন ধারণা এখন দেশীয় সীমারেখার মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। এশিয়া থেকে ইউরোপ, আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার সকল দেশেই সমৃদ্ধি অর্জনে উদ্ভাবনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এশিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও চীন, ভারত প্রতিটি দেশই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অগ্রসরমান ধারায় উদ্ভাবন ধারণাকে কাজে লাগিয়েছে। মালয়েশিয়া ১৯৯৫ সালে উদ্ভাবনী ধারণায় নেতৃত্ব দেয়।
১৯৯০ এর দশকে মালয়েশিয়ার শিল্প ও প্রযুক্তি নীতিতে নতুন প্রযুক্তির অভিমুখী উদ্ভাবনের দিকে দৃষ্টিপাত করে এবং বহুজাতিক কোম্পানির বিদেশী সহযোগীদের উপর অপেক্ষাকৃত নির্ভরশীলতা হ্রাস করে স্থানীয় ও আঞ্চলিক প্রযুক্তি চ্যানেলের উপর নির্ভরশীলতায় গুরুত্বারোপ করে। মালয়েশিয়ার উদ্ভাবনী সংস্থাগুলির চার-পঞ্চমাংশ জাতীয় পুঁজি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং দুই তৃতীয়াংশ উদ্ভাবনী ধারণার সাথে অপেক্ষাকৃত তরুণরা সম্পৃক্ত। মালয়েশিয়ার উদ্ভাবনী কৌশল বিশ্বপ্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রায়োগিক এবং তাদের উদ্ভাবনী ধারণা ইউরোপীয় মানের সাথে তুলনীয়।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৯৬ সাল থেকে পদ্ধতিগত উপায়ে উদ্ভাবনের তথ্য সংগ্রহ করে এবং ফলাফল তথ্য তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবহার করে। চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত প্রতিটি দেশ অনুরূপ প্রক্রিয়ায় জাতীয় সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়।
বাংলাদেশ তার জন্মচেতনা ও উদ্দেশ্যের সাথে সমন্বয় করে সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য উচ্চাভিলাষী প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া প্রতিটি দেশের অগ্রসরমান ধারণা বিশ্লেষণ করলে এটি স্পষ্ট যে, আমাদেরকেও বিদেশী সহযোগীদের উপর অপেক্ষাকৃত নির্ভরশীলতা হ্রাস করে স্থানীয় ও আঞ্চলিক প্রযুক্তি চ্যানেলের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ানোতে মনোযোগ দিতে হবে। যেখানে উদ্ভাবন ধারণা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। প্রাসঙ্গিকভাবে প্রশ্ন আসে-উদ্ভাবন ধারণাটা কী?
উদ্ভাবন হলো একটি ব্যবসার উদ্ভাবনী লক্ষ্যে ডিজিটাল পণ্য প্রকৌশল প্রয়োগ করার প্রক্রিয়া, যার ফলে উদ্ভাবনী ধারণাগুলোকে বাস্তবে রূপান্তর সহজতর হয়। উদ্ভাবন পণ্য বিকাশের প্রাথমিক সুবিধা হলো প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে পণ্য বাজারযোগ্য ও বিকাশে প্রচলিত উদ্ভাবন লক্ষ্য চলমান উদ্ভাবন ধারণায় নিয়ে টেকসই পরিবর্তন বেগবান করা যায়। উদ্ভাবনের আবশ্যিকতাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
কেননা, এটি টেকসই উন্নয়নের দিকে জাতিকে এগিয়ে নেয়। বলা যায় উদ্ভাবনের সংস্কৃতি কেবল মাত্র দেশীয় সীমানার মধ্যে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাই না, বাহ্যিক অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করে। উদ্ভাবনের ধারণা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বাইরে প্রসারিত; এটি সমস্যা সমাধান, দক্ষ সম্পদের ব্যবহার ও একটি গতিশীল উদ্যোক্তা পরিবেশ গড়ে উঠার অভিনব পন্থা।
এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও সরকারি সেক্টর জুড়ে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা অপরিহার্য। ইনোভেশন, ইনকিউবেটর ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে রূপান্তরমূলক ধারণা স্থানীয় চ্যালেঞ্জের দেশীয় সমাধানের একটি উর্বর ক্ষেত্র বা অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই, উদীয়মান অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে কর্মীবাহিনীর অভিযোজিত দক্ষতা অর্জনে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে জাতীয় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবক ও সমালোচনামূলক চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে কেন্দ্রগুলো সাজানো যেতে পারে, যেখানে উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে একটি প্রজন্ম গড়ে উঠবে; যা শুধুমাত্র টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপনই করবে না বরং সামাজিক ও পরিবেশগতভাবেও প্রজন্মকে সচেতন করতে সহায়তা করবে।
উন্নয়নের পথচলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই তার অনন্য শক্তি ও সাংস্কৃতিক পুঁজিকে কাজে লাগাতে হবে। এমন একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে নাগরিকগণ সমস্যা ও সম্ভাবনার ঝুঁকি পরীক্ষা নিরীক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত হবেন এবং বৈচিত্র্য দৃষ্টিভঙ্গির মূল্য দিয়ে মানব পুঁজির পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, জাতি হিসেবে আমরা যখন সমৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছি, তখন উন্নত বিশ্ব আধুনিক প্রযুক্তির ধারণাকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবনী ধারণায় শতভাগ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। কাজেই আত্মনির্ভরতার জন্য উন্নত বিশ্বের আধুনিক ধারণা আলিঙ্গন করে স্থানীয় প্রেক্ষাপটের সাথে মানানসই করে সেগুলোর ভারসাম্য বজায় রেখে বিশ্বকে স্বদেশীয় উদ্ভাবন ও স্থিতিস্থাপকতার রূপান্তরকারী শক্তি জানান দিতে হবে।
উদ্ভাবন পণ্য বিকাশে বাজারযোগ্যতার অনুঘটক হিসেবে পণ্যটি ভোক্তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিষয়টি স্মরণ করে দেয়। এই সক্রিয় পন্থা শুধুমাত্র পণ্যের প্রতিযোগিতা বাড়ায় না বরং ক্রমাগত পরিবর্তনশীল ব্যবসায়িক পরিবেশে টেকসই সাফল্যের ভিত্তি তৈরি করে। অধিকন্তু, প্রথাগত উদ্ভাবন লক্ষ্য থেকে চলমান উদ্ভাবন ধারণায় স্থানান্তরে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির অগ্রভাগে থাকার প্রতিশ্রুতিও নির্দেশ করে। উদ্ভাবনে পুনরাবৃত্তিমূলক প্রক্রিয়ায় জড়িত, যেখানে প্রতিক্রিয়া স্তর ও পদ্ধতিগুলোকে আলিঙ্গন করা হয়, যা ধ্রুবক পরিমার্জন ও উন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করে। এই অভিযোজনযোগ্যতা শুধুমাত্র সময়ের সাথে পণ্যের প্রাসঙ্গিকতা বাড়ায় না বরং ব্যবসাকে একটি গতিশীল শক্তি হিসেবে স্থাপন করে। যা শিল্পের প্রবণতাকে প্রসারণে প্রভাবিত করতে সক্ষম। মোটকথা, পণ্যের উন্নয়নে উদ্ভাবন শুধুমাত্র অভিনব সমাধানের সৃষ্টিকে অতিক্রম করে না; এটি উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ডিজিটাল দক্ষতার একটি কৌশলগত সংমিশ্রণকে স্পষ্ট করে। উদ্ভাবন শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক বাজারের চাহিদা পূরণ করে না বরং পরিবর্তনের স্থায়ী এজেন্ট হিসেবেও কাজ করে। যা স্থায়ী বিকাশমান ব্যবসায়িক পরিমন্ডলের স্থায়িত্ব ও স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশের উদ্ভাবন ধারণা বিকাশে যথেষ্ট সুযোগ ও বাধা রয়েছে, যেগুলো জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগানো ও দূর করা প্রয়োজন।
উদ্ভাবনী ধারণার সুযোগ:
বৃহৎ জনসংখ্যা ও বাজারের সম্ভাবনা: বাংলাদেশের বৃহৎ ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা রয়েছে, যা উদ্ভাবনী পণ্য ও পরিষেবার জন্য বাজার সৃষ্টি করবে। এটি ব্যবসার জন্য নতুন ধারণাগুলোর বিকাশ ও পরীক্ষার সুযোগ উপস্থাপন করে।
যুব জনসংখ্যা: দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠি রয়েছে, যা উদ্ভাবনের উৎস হতে পারে। কেননা, তরুণ উদ্যোক্তা ও পেশাদাররা প্রায়ই নতুন প্রযুক্তি এবং ধারণা গ্রহণের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী: বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী বর্ধিত ক্রয় ক্ষমতা এবং বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার চাহিদার প্রতিনিধিত্ব করে। এটি ব্যবসার জন্য উদ্ভাবন এবং বিকশিত ভোক্তা চাহিদা পূরণের সুযোগ তৈরি করে।
কৃষি উদ্ভাবন: কৃষি বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য খাত। কৃষি পদ্ধতি, প্রযুক্তি ও মূল্য কেন্দ্রিক উদ্ভাবন উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে এবং গ্রামীণ উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি: ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে এবং সফটওয়্যার উন্নয়ন, ফিনটেক এবং ই-কমার্সের মতো ক্ষেত্রে আরও উদ্ভাবনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকারী উদ্যোগ: বাংলাদেশ সরকার উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে পদক্ষেপ নিচ্ছে। স্টার্টআপ সাপোর্ট প্রোগ্রাম ও বিনিয়োগ প্রণোদনার মতো উদ্যোগ উদ্ভাবনী ধারণার বিকাশকে উৎসাহিত করতে পারে।
উদ্ভাবনী ধারণা বাধা:
অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ: পরিবহন, জ্বালানি ও যোগাযোগসহ অপর্যাপ্ত অবকাঠামো উদ্ভাবনী ধারণার বিকাশ ও বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
তহবিল অ্যাক্সেস: তহবিল ও উদ্যোগের মূলধনের সীমিত অ্যাক্সেস উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা। এটি উদ্ভাবনী প্রকল্প এবং স্টার্টআপগুলির অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
শিক্ষা ব্যবস্থা: ব্যবহারিক দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার উপর ফোকাস উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য অপরিহার্য হলেও শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য পর্যাপ্তভাবে সহায়তা দিচ্ছে না।
নিয়ন্ত্রক পরিবেশ: উদ্ভাবনের জন্য সুগম এবং ব্যবসা-বান্ধব নিয়ন্ত্রক পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্র্ণ হলেও বাস্তবে জটিল ও আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়াগুলো নতুন ধারণার বাস্তবায়নকে ধীর করে দিচ্ছে।
গবেষণা ও উন্নয়নের অভাব: নতুন জ্ঞান ও উদ্ভাবনী সমাধানের জন্য গবেষণা ও ফলাফল উন্নয়ন কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশে এক্ষেত্রে যথেষ্ট বিনিয়োগ হচ্ছে না।
ঝুঁকি বিমুখতা: ঝুঁকি বিমুখতা বাঙালি সমাজের একটি সাংস্কৃতিক অংশ। যা উদ্ভাবনী ধারণা অন্বেষণকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। অথচ, উদ্ভাবনী বিকাশে ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বৌদ্ধিক সম্পত্তি সুরক্ষা: মেধা সম্পত্তির অধিকারের অপর্যাপ্ত সুরক্ষা উদ্ভাবকদের বিনিয়োগে এবং তাদের ধারণা শেয়ার করতে নিরুৎসাহিত করতে পারে।
বর্ণিত সুযোগ ও বাধাগুলো মোকাবেলায় জন্য সরকার, বেসরকারিখাত এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। যে উদ্যোগগুলো অবকাঠামোর উন্নতি, তহবিল অ্যাক্সেস, শিক্ষা এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক পরিবেশের উপর ফোকাস করে বাংলাদেশে আরও উদ্ভাবন-বান্ধব ইকোসিস্টেমে অবদান রাখতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্ভাবন ধারণা অনুশীলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যতা আনতে পারে। যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্যবিমোচনই নয়, বরং চূড়ান্তভাবে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও পরিকাঠামো সেবা নিশ্চিতকরণে সরকারের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ভবিষ্যতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্ভাবন বিকাশের ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারলে সমৃদ্ধ জাতিসত্তা নির্মাণে বাংলাদেশ যে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। দ্রুত কাজেই, সরকারের উচিত দেশে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে উদ্ভাবন বিকাশকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন নতুন ধারণার ভিত্তিতে পুঁজির বিকাশ ও চর্চা বাড়বে। যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
লেখক : কলাম লেখক
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য