-->
শিরোনাম

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ও প্রত্যাশা

অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ও প্রত্যাশা

আজ ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। ইউনেসকো কর্তৃক নির্ধারিত এ বছর স্বাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্যÑ ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে ‘আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস ২০২৪’। বিশ্বের সকল দেশের জন্য ইউনেস্কো নির্ধারিত এবারের আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য  ‘বহু ভাষায় শিক্ষার প্রসার : পারস্পরিক সমঝোতা ও শান্তির জন্য স্বাক্ষরতা’।

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের যাত্রা ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সে বছর ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইরানের রাজধানী তেহরানে বিশ্ব সাক্ষরতা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ইউনেস্কো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের মর্যাদা প্রদান করে। সেই থেকে প্রতি বছর দিনটি সারা পৃথিবীতে পালিত হয়ে আসছে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ থেকে দিবসটি যথানিয়মে পালিত হয়ে আসছে।

১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো সাক্ষরতার যে সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেয়, সেটি পরবর্তী প্রতি দশকে পরিবর্তিত হতে থাকে। স্বাক্ষরতা হলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক মানবীয় অধিকার। প্রায় সকল দেশই বহু আগে থেকে নিজের মতো করে এর সংজ্ঞা নির্ধারণ করে রাখে। এক সময় কেউ বর্ণমালা পড়তে বা নিজের নাম লিখতে পারলেই তাকে সাক্ষর বলে মনে করা হতো। বর্তমানে এ ধারণা অনেকটা প্রসারিত হয়েছে। এখন স্বাক্ষরতার জন্যে তিনটি শর্তের কথা বলা হয়েছে। ১. ব্যক্তি নিজ ভাষায় সহজ ও ছোট বাক্য পড়তে পারবে ২. নিজের ভাষায় সহজ ও ছোট বাক্য লিখতে পারবে। ৩. দৈনন্দিন জীবনে স্বাভাবিক হিসেব-নিকেশ করতে পারবে।

আসলে সাক্ষরতার বহুমাত্রিক ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষে মানুষে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলেই এর গুরুত্ব আজ এতো বেশি। কে স্বাক্ষরতার মাধ্যমে আর্থিক মুক্তিই নয়, বরং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানসিক মুক্তি আনয়নের মাধ্যমে প্রাত্যহিক জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সাক্ষরতা এক বিশেষ হাতিয়ার। স্বাক্ষরতা মানুষের জীবনে শান্তি আনয়ন করে। ব্যক্তি স্বাধীনতা অর্জন ও ব্যক্তিত্বের বিকাশে সহায়তা করে। গোটা সৃষ্টি জগৎ সম্পর্কে একমাত্র সাক্ষর ব্যক্তিই কিছু না কিছু জেনে থাকে এবং অন্যকে এ সম্পর্কে জানাতে পারে। কেবল লেখাপড়া জানা মানুষই জানতে পারে দুনিয়ার কোথায় কখন কী ঘটে চলেছে। পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসনে স্বাক্ষরতা কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। পৃথিবীতে যেখানে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত লেগে আছে, সেখানে স্বাক্ষরতা অনেক পিছিয়ে বলেই সংঘাত দীর্ঘদিন জিইয়ে আছে। আফ্রিকা মহাদেশের সংঘাতময় দেশগুলোর বাস্তব চিত্র আমাদের সে কথাই বলে দেয়।

দারিদ্র্য কমিয়ে আনা, শিশুমৃত্যু রোধ করা, সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে শান্তি ও সমৃদ্ধি বিকশিতকরণের ক্ষেত্রে স্বাক্ষরতার জুড়ি নেই। একটি মানসম্মত মৌলিক শিক্ষা মানুষকে স্বাক্ষরতা ও দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে। স্বাক্ষর মা-বাবা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে উৎসাহিত হন, অব্যাহত শিক্ষায় নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে অনুপ্রাণিত হন। উন্নয়নের দিকে দেশকে ধাবিত করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট ও সরকারকে চাপ প্রয়োগে সাহায্য করে থাকেন। নিরক্ষরতা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতি এক একটি ভয়ানক শত্রু। এই শত্রুদের বধ করতে শিক্ষা ও সাক্ষরতার মতো ধারালো অস্ত্র আর কিছু নেই। এ লক্ষ্যে সবার জন্য শিক্ষা এক অপরিহার্য অধিকার।

স্বাক্ষরতা বিশ্বব্যাপী এক অসাধারণ আন্দোলনের নাম। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে পৃথিবী জুড়ে এ আন্দোলন বিস্তৃতি লাভ করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ষোল আনা সাফল্যের মুখ দেখেনি। সারা পৃথিবীতে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মানুষ আজ অবধি স্বাক্ষরতা থেকে বঞ্চিত। বিশ্বে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৭৮ কোটিই লেখাপড়া জানে না। বয়স্ক প্রতি ৫ জনে ১ জন নিরক্ষর। এর দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু। বিশ্বে ৬৪ শতাংশ নারী এবং ৭ কোটিরও বেশি শিশু লেখাপড়া তো দূরে থাক, অক্ষর পর্যন্ত চেনে না। বাংলাদেশেও চিত্রটি সন্তোষজনক নয়। বিশ্ব যেখানে প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলেছে, সেখানে অফুরন্ত সম্ভাবনার পরও আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে। এর প্রধান কারণ জনসংখ্যার বড় একটি অংশ এখনো নিরক্ষরতার বেড়াজালে আবদ্ধ।

স্বাক্ষরতা আন্দোলনে বাংলাদেশের সম্পৃক্ত হওয়ার ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের দেশে স্বাক্ষরতা আন্দোলনের সূত্রপাত। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ ও নওয়াব আব্দুল লতিফের চেষ্টায় অনেক নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে ভি-এইড কার্যক্রমের আওতায় শত শত বয়স্ক দরিদ্র মানুষকে শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়। ১৯৯১ সালে সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে স্বাক্ষরতা আন্দোলনকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়া হয়। সরকার সাক্ষরতা কর্মসূচি সফল করার জন্য প্রশংসনীয় অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিশুভর্তি ও ঝরে পড়া রোধে সকলের জন্য অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করে উপবৃত্তি প্রদান করছে। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সবার জন্য না হলেও ডিগ্রিস্তর পর্যন্ত উপবৃত্তি চলমান আছে। হাওর-বাঁওড় ও দুর্গম এলাকার শিশুদের শিক্ষার জন্য বিশেষ বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্কুল ফিডিং চালু করা হয়েছে। শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি চালু আছে। এসব কর্মসূচি সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। তবু স্বাধীনতা অর্জনের এতগুলো বছর পরও শতভাগ স্বাক্ষরতা অর্জন থেকে আমরা বহুদূর পিছিয়ে। প্রকৃত স্বাক্ষরতা বলতে যা বোঝায়, সে মাত্রায় আমাদের স্বাক্ষরতা পৌঁছতে পারেনি।

বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৮ বিলিয়ন। ইউনেসকোর তথ্যমতে, বিশ্বে ৭১১ মিলিয়ন মানুষ নিরক্ষর। তন্মধ্যে অধিকাংশ নারী, যারা লিখতে ও পড়তে পারে না। ১৯৭২ সালে প্রথম বারের মতো স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপন করা হয়। ১৯৭৩ সালে বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম বারের মতো ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাক্ষরতা অভিযান শুরু হয়। ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের অনুষ্ঠানটি ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, এই দিনে ঠাকুরগাঁওয়ের কচুবাড়ী-কৃষ্টপুর গ্রামকে প্রথম নিরক্ষরতামুক্ত গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করেছে। স্বাধীন-সার্বভৌমত্বের বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শিক্ষিত ও দক্ষ জনগোষ্ঠী বেশ প্রয়োজন। আর তা ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদেও শিক্ষার কথা বলা হয়েছে।

ইতিহাসের পাতায় প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে দেশে ১৯৭১ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিল ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। দেশে এ মুহূর্তে স্বাক্ষরতার গড় হার প্রায় ৭৭। বিভাগভেদে এ হার কমবেশি আছে। সবচেয়ে পিছিয়ে আছে চারটি জেলা নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ বিভাগ। এ বিভাগে স্বাক্ষরতার হার প্রায় ৬৭, যা দেশের গড় হারের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ কম। স্বাক্ষরতার হারের এ চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা, ২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে। জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাক্ষরতার হারে সবচেয়ে এগিয়ে ঢাকা বিভাগ, হার প্রায় ৭৯। এর পরে রয়েছে বরিশাল, ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। স্বাক্ষরতার হার চট্টগ্রামে ৭৬ দশমিক ৫৩, খুলনায় প্রায় ৭৫, সিলেট ৭১ দশমিক ৯২, রাজশাহী ৭১ দশমিক ৯১, রংপুর ৭০ দশমিক ৭৫ ও ময়মনসিংহে ৬৭ শতাংশ। ২০১১ সালে করা জনশুমারির বিভাগভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ স্বাক্ষরতার হার ছিল ৫৬ দশমিক ৭৬। আর সর্বনিম্ন ছিল সিলেটে, ৪৫ শতাংশ। তবে এবার শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা বিভাগ। আগের বার ঢাকা ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। তবে তখন ময়মনসিংহ বিভাগ ঢাকা বিভাগের মধ্যে ছিল। এবার ময়মনসিংহ বিভাগের হিসাব আলাদাভাবে এসেছে। আগের বারের তৃতীয় স্থানে থাকা খুলনা এবার চতুর্থ স্থান পেয়েছে।

ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ভিউয়ের তথ্যমতে, বিশ্বে স্বাক্ষরতার শীর্ষ দেশ ক্রমান্বয়Ñ উজবেকিস্তান, ইউক্রেন, সান ম্যারিনো, লাটভিয়া, এস্তোনিয়ো। বর্তমান পৃথিবীতে শতভাগ স্বাক্ষরতাসম্পন্ন দেশটি উজবেকিস্তান, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ২০ বছর পর স্বাধীনতা লাভ করে। অর্থাৎ ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভ করা উজবেকিস্তানের স্বাক্ষরতার হার শত ভাগ হওয়ার অনুঘটকসমূহ থেকে আমাদেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত। ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়া পৃথিবীর আরেকটি দেশ কাতারের স্বাক্ষরতার হারও শতকরা ৯৩ দশমিক ৪৬। পারমাণবিক অস্ত্রের অনন্য অংশীদার উত্তর কোরিয়াও শতভাগ স্বাক্ষরতার হার নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দেশ।

পৃথিবীর মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করা সময়ের দাবি। এজন্য প্রয়োজন মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী সুশিক্ষার অভাবে জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন আশা করাটাও বেশ দুষ্কর।

দারিদ্র্যের কারণে এখনো অনেক শিশু স্কুলেই যেতে পারে না। জনসংখ্যার বড় একটি অংশ স্বাক্ষরতার বিষয়ে কুসংস্কারে ভুগে থাকে। স্বাক্ষরতার নানা কর্মসূচি দুর্নীতির কারণে মাঝপথে থেমে যায়। রাজনৈতিক স্থিতিহীনতা ও ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন কর্মসূচি মাঝপথে বন্ধ হয়ে পড়ে। কেবল বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর অনেক দেশে এটি ঘটে থাকে।

আমাদের প্রত্যাশার ডালপালা অনেক। এবারের আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসে আমাদের প্রত্যাশা হোক সবার জন্য অবারিত শিক্ষার সুযোগ। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে হোক। শিক্ষা হোক জীবনের জন্য। স্বাক্ষরতা বয়ে আনুক সবার জন্য অনুপম সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির সুবাতাস। স্বাক্ষরতাকে হাতিয়ার করে দুনিয়ার সব মানুষের জীবন হয়ে উঠুক অনাবিল প্রশান্তির ঠিকানা। শান্তি, সমৃদ্ধি ও সৌহার্দ্যরে এ পৃথিবীতে মানুষের জন্য আর কোনো দ্বন্দ্ব সংঘাত কাম্য নয়। বিশ্বের বুক থেকে ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও দুর্নীতি চিরতরে নিপাত যাক। ঘরে ঘরে প্রতিটি মানুষের জন্য কলম, কাগজ আর বই হোক দুর্দিনের হাতিয়ার। স্বাক্ষরতা হোক দক্ষ হয়ে জীবন তৈরি ও আগামির ডিজিটাল বিশ্ব গড়ে তোলার দুর্বার ও দুর্জেয় হাতিয়ার।

লেখক : অধ্যক্ষ, চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কানাইঘাট, সিলেট।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version