-->
শিরোনাম

প্রবাসী সরকার হলে সংকট গভীর হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রবাসী সরকার হলে সংকট গভীর হবে

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দেখা মিলছে না বললেই চলে। সরগরম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখন বিরান ভূমি। সেখানে মাদক সেবীদের আড্ডা বসে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে গত সোমবার ঝটিকা মিছিল করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তারা এই ঝটিকা মিছিল করেছে। এই মিছিল নিয়ে তেমন কিছু জানা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই। এই খবরটি দেশ-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারতে আওয়ামী লীগ প্রবাসী সরকার গঠন করছে বলে গুজব-গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত এর পরই ছাত্রলীগ অস্তিত্ব জানান দিতে মিছিল করেছে বলে ধরে নিতে হবে। বিষয়টিকে শুধু গুজব বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। কারণ প্রবাসী সরকার গঠনের বিষয়ে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলেছেন শেখ পরিবারের সদস্য শেখ রুবেল। তিনি জানান, শেখ হাসিনাকে প্রধান করে শিগগিরই ভারতের মাটিতে প্রবাসী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। রোববার ভারতে আমাদের একটি ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় প্রবাসী সরকার গঠনের; যার প্রতিনিধিত্ব করবেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ভারতে চলে যাওয়ার পর তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছিলেনÑ তার মা পদত্যাগ করেননি। সপ্তাহ দু-এক আগে বিএনপির নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, আইনগতভাবে শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, খুনি হাসিনা ভারতের ত্রিপুরায় বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। এ কারণে আমরা কুমিল্লাবাসী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেছি। আমরা স্পষ্ট ভাষায় তাদেরকে বলে দিতে চাই, তাদের ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা কখনোই বাংলার মাটিতে সফল হবে না। ফ্যাসিবাদের দালাল ছাত্রলীগ, যুবলীগ, টোকাই লীগ, বাংলাদেশের কোথাও পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করলে তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করা হবে। আমরা প্রস্তুত আছি। তাদেরকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রয়োজনে কুমিল্লা থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। কুমিল্লার সমন্বয়ক রুবেল হোসাইন ও আবু রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীরা। সেখানে বসে দেশবিরোধী চক্রান্ত করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্টদের এ ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত ছাত্র-জনতা। যেকোনো মূল্যে আওয়ামী চক্রান্ত রুখে দেওয়া হবে। কুমিল্লার সমন্বয়ক রুবেল হোসাইনের ভাষ্য, কুমিল্লার সাবেক এমপি সন্ত্রাস-চাঁদাবাজের গডফাদার বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা দেশ থেকে পালিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান করছে। বাবা-মেয়ে মিলে সেখানে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একত্রিত করার চেষ্টা করছে। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পলাতক বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতাও রয়েছে। তারা সেখানে বসে দেশবিরোধী চক্রান্ত করছে। একটা প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে। মূলত তারা দেশকে অস্থিতিশীল এবং দেশের জনসাধারণের ক্ষতি করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা তাদের এসব চক্রান্তের খবর পেয়েছি। যে কোনো মূল্যে দেশবিরোধী এ চক্রান্ত রুখে দেওয়া হবে। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হবে না। শেখ রুবেল ও সমন্বয়কদের বক্তব্যে স্পষ্ট- ভারতে আওয়ামী লীগের নেতারা জড়ো হচ্ছেন। তারা প্রবাসী গঠন করার চেষ্টা করছেন। এটা হলে তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version