-->
শিরোনাম

চালের দামের লাগাম টেনে ধরুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
চালের দামের লাগাম টেনে ধরুন

চালের বাজার যে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না সেকথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে চালের দাম। গত তিন মাসের ব্যবধানে প্রতি ২৫ কেজি চালের বস্তায় বেড়েছে ২৫০-৩০০ টাকা। আর এ কারণে ক্রেতাকে প্রতি কেজিতে বাড়তি গুণতে হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা। ফলে চাল ক্রয় করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম হচ্ছেন ক্রেতা সাধারণের। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই পরিস্থিতিতে আরেক দফা বেড়েছে চালের দাম। গতকাল দৈনিক ভোরের আকাশে এই মর্মে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে এক দফা বৃদ্ধির পর এখন নতুন করে বাড়ছে চালের দাম। সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের কেউ বলছেন বন্যার কারণে চালের দর বাড়ছে, আবার কেউ বলছেন একটি চক্র ‘কারসাজি’ করে দাম বাড়াচ্ছে। গুদামে অভিযান চালানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে চাল আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। আটাশ চাল বিক্রি করা হচ্ছে ৬০ টাকা করে, মিনিকেট চাল ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে চালের নতুন মূল্যবৃদ্ধি মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের সামিল বলে আমরা মনে করি। এমনিতেই চড়া দামে নিত্যপণ্য ক্রয় করে নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এরপর নতুন করে চালের দাম বৃদ্ধিতে এখন দিশেহারা মানুষ।

বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ। বেশি দামে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটে খাওয়া দিনমজুররা। অথচ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাজারে চালের দাম কমার কথা ছিল। কারণ, পণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে চাঁদাবাজিকে দায়ী করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী এখন তো চাঁদাবাজি থাকার কথা নয়। তা হলে ঠুনকো অজুহাতে চালের দাম বেড়েছে কেন? আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ভাত-প্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম বৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং, যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

আমরা মনে করি, চালের বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করতে হবে, যাতে চালকল মালিক ও বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। আর যে বিষয়টিতে দৃষ্টি দিতে হবে তা হলো, নিম্নবিত্তের আয় বৃদ্ধি। কারণ, আর্থিক সামর্থ্য না থাকলে তারা বাজার থেকে চালসহ খাদ্যপণ্য ক্রয় করতে পারবেন না। ফলে তারা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শিকার হবেন। এই অবস্থার সৃষ্টি যাতে না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে। যাদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়ছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, তবেই নিয়ন্ত্রণ হবে চালের বাজার। সরকার সেই লক্ষ্যে জোরালো পদক্ষেপ নিবে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা ও দাবি।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version