জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসা নিতে আসা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম। এ সময় উপদেষ্টার গাড়ির ওপর উঠে পড়েন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। গতকাল বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকে নিটোরের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে তিনি অন্য একটি গাড়িতে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এরপরও সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন আহতরা। তারা স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন। একই সঙ্গে তারা অন্য উপদেষ্টার দেখা করার জন্য হুঁশিয়ারি দেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে নিটোরে থাকা আহত রোগীদের খোঁজখবর নেন। এরপর হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় সেখানে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে আশপাশে আহত রোগীদের সরতে বলা হয়। এরপর হাসপাতালে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আহতরা উপদেষ্টার গাড়ির সামনে পথ আটকে দাঁড়ান। এক পর্যায়ে আন্দোলনে আহতদের একজন গাড়ির সামনে বসে পড়েন। আরেকজন উঠে পড়েন গাড়ির ওপর। কিছু সময় তারা গাড়িতে কিল-ঘুষি মেরে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন। নেমে আসতে বলেন গাড়িচালকসহ অন্যদের। পরে নিরূপায় হয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অন্য একটি গাড়িতে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। পরে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই গাড়ি ও প্রটোকলে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি আটকে দেয় এবং রাস্তায় অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসাধীন আন্দোলনরতরা জানান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সিলেকটিভ কিছু রোগীর সঙ্গেই কথা বলেছেন, তাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি যেন সবার খোঁজ নেন। সমস্যা শুনে সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ নেন। কিন্তু মনের কথাগুলো শোনাতে না পেরে তারা ক্ষুব্ধ হন। কেউ কেউ খাওয়া-দাওয়ার মান নিয়েও অভিযোগ করেন। এছাড়া তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা ও ভালো চিকিৎসা দিতে বিদেশে নেওয়ার আবেদন জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি কেউ।
বিক্ষোভের কারণে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, জুলাই ও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে তারা হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করছেন। আমরা আহত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনা করছি। দ্রুতই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ করছিলেন আহতরা। তারা বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না তারা। অন্য উপদেষ্টারা গেলে তাদের সামনে দাবি-দাওয়া তুলে ধরবেন। তারা অন্য উপদেষ্টাদের রাত ১০টার মধ্যে সেখানে যাওয়ার আল্টিমেটাম দেন।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য