বাংলাদেশ চিকিৎসায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অনেক বিশ্বমানের চিকিৎসা হচ্ছে দেশেই। এরপরও মানুষের বিদেশমুখিতা কমছে না। বছরে ৯ থেকে ১০ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। এতে প্রতি বছর অন্তত পাঁচ বিলিয়ন ডলার (৬০ হাজার কোটি টাকা) খরচ করছেন বাংলাদেশিরা। এটা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
‘চিকিৎসাসেবায় বিদেশমুখিতা: আমাদের উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বলা হয়েছে, বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এই তালিকার ১০ নম্বরে আছে বাংলাদেশ।
সমীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে জানানো হয়, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের ৫১ শতাংশ যান ভারতে। এছাড়া থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ শতাংশ, ২ শতাংশ করে যান জাপান ও মালয়েশিয়ায় এবং ১ শতাংশ রোগী চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যান।
চিকিৎসা নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৫০ শতাংশ শুধু রোগ নির্ণয় ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিদেশে গেছেন। এছাড়া হার্টসহ নানাবিধ সার্জারির জন্য ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, ক্যানসার বা টিউমার চিকিৎসায় ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, দাঁতের চিকিৎসার জন্য ২ দশমিক ২০ শতাংশ ব্যক্তি বিদেশে গেছেন।
এছাড়া এক হাজার ১৯৬ জন পর্যটকের ওপর পরিচালিত অপর সমীক্ষায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন হার্টের রোগীরা; যা মোট রোগীর ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। চোখের চিকিৎসায় ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ, কিডনির সমস্যা নিয়ে ৮ শতাংশ, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার নিয়ে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ, ফ্র্যাকচার নিয়ে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ, হাড়ের সমস্যায় ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ বিদেশে যান। এছাড়া লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস ও গাইনি সমস্যার জন্যও রোগীরা বিদেশে যাচ্ছেন।
সাধারণ অবস্থায় বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা ব্যক্তিদের ধনিক শ্রেণির মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এই তালিকায় রয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এক হাজার ১৮১ জন পর্যটকের ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি চারজন পর্যটকের একজন পেশায় ব্যবসায়ী, অর্থাৎ মোট ২৫ শতাংশ। এরপর ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেসরকারি চাকরিজীবী, ১২ শতাংশ দিনমজুর, ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ সরকারি চাকরিজীবী, ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ শিক্ষক এবং ৫ শতাংশ চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়া এ তালিকায় সাংবাদিক, পুলিশ ও শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
দেশে চিকিৎসার ওপর আস্থা বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রচারণা দরকার।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য