সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতেই হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতেই হবে

আমাদের দেশে সড়কে বিশৃঙ্খলা ঠিক কবে শুরু হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। এই বিশৃঙ্খলার পেছনে আমাদের মানসিকতাই প্রধান দায়ী। আইন না মানার প্রবণতা মনের অজান্তেই আমাদের মস্তিষ্কে গড়ে উঠছে। যেকোনো মূল্যেই আমরা আগে যেতে চাই। ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সৃষ্টি হয় যানজট। ঘটে দুর্ঘটনা। এছাড়া আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি তো আছে। এছাড়া অদক্ষ চালকও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

দেশে প্রতিদিন সম্ভাবনাময় ও স্বপ্নের অনেক জীবন কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে রক্তাক্ত হয়ে, লাশ হয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে। গত ২০২৪ সালেও ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন, অদক্ষ ও মাদকাসক্ত চালক কর্তৃক গাড়ি চালানো, রাস্তাঘাট নির্মাণে ত্রুটি, পথচারী-সেতু ব্যবহার না করা, ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তা পারাপার এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।

দুর্ঘটনার এসব কারণ জানা থাকা সত্ত্বেও কেন শৃঙ্খলা ফিরছে না সড়কে? কবে নাগাদ নিরাপদ হবে আমাদের সড়কপথ? কত পরিবার যে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে নিঃস্ব হয়ে গেছে, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। দেশের সড়ক-মহাসড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ডও বলা যায়। অনেক দুর্ঘটনাই চালকের ভুলে ঘটে থাকে। যে-সব কারণে রাস্তায় মৃত্যুর মিছিল লেগেই আছে। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর তথ্যমতে, দেশে সড়কে প্রতিদিন গড়ে ১৮ জনের প্রাণহানি হচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ফলে মানবিক ও অর্থনৈতিক যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তা নির্ণয় করা দুরূহ। এক হিসাবে দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মৃত্যুবরণ করে, তাদের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এই পরিবারগুলো রীতিমতো পথে বসে যায়। আহতদেরও অনেকে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে তাদের পরিবারও বিপন্ন হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ ধরা হলে, তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পাঁচ শতাংশ।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য