-->

‘মুক্তধারা নিয়ইয়র্কের কারণে উত্তর আমেরিকায় বাংলা বই সহজলভ্য হয়েছে’

ঢাবি প্রতিনিধি
‘মুক্তধারা নিয়ইয়র্কের কারণে উত্তর আমেরিকায় বাংলা বই সহজলভ্য হয়েছে’
বাংলা একাডেমিতে ‘বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলা ও মুক্তধারা নিয়ইয়র্ক’ শীর্ষক আলোচনাসভা।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি চর্চা, প্রচার-প্রসারে আমেরিকায় প্রতিবছর নিউইয়র্ক বইমেলা উৎসব আয়োজন করে থাকে মুক্তধারা নিউইয়র্ক। বহির্বিশ্বে বাংলা ভাষার প্রতিনিধিত্ব করায় বাংলা একাডেমিতে ‘বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলা ও মুক্তধারা নিয়ইয়র্ক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় একাডেমির কবি শামসুর রহমান সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কর্তৃক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কবি ইউসুফ রেজার সঞ্চালনায় এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতিবিদ ড. আতিয়ার রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর শিকদার, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ফরিদ আহমেদসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

কে এম খালিদ বলেন, ‘মুক্তধারার মাধ্যমে বিশ্বজিৎ সাহা বাংলা সংস্কৃতিকে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বিদেশের মাটিতে লেখক সাহিত্যিকদের সম্মিলন ঘটিয়ে যাচ্ছেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।”

অর্থনীতিবিদ ড. আতিয়ার রহমান বলেন, “আজকে বাংলাদেশ শুধুমাত্র ৫৬ হাজার বর্গমাইলে অবস্থিত নয়, বিশ্বব্যাপী ছোট ছোট বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে বেশ প্রাণবন্ত শহর নিউইয়র্ক। বিশ্বায়নে সাংস্কৃতিক চাপ অনেক, এই চাপ মোকাবিলায় মুক্তধারার মতো সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার খুঁটি হচ্ছে বহির্বিশ্বে থাকা বিশ্বজিৎরা। এদেরকে সঙ্গী করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, “মুক্তধারা মুক্তিযুদ্ধের সময় শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে এর কার্যক্রম বেড়েছে। বহির্বিশ্বে বইমেলা শুরু করেছিলেন বিশ্বজিৎ। সারাবিশ্বে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। তারা রাইটার্স ক্লাবের সঙ্গে অনুষ্ঠান করছেন এবং ভবিষ্যতেও লেখকদের নিজে কাজ করবেন এ আশা রাখি।”

শ্যামসুন্দর শিকদার বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল অর্জনের মাধ্যমে বাঙালিদের বিশ্বায়ন শুরু হয়েছিল, ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য আত্মত্যাগ, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক জাতিসংঘে বাংলা ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে, মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভের মাধ্যমে যুগে যুগে বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন হলো। বিশ্বজিৎ সাহার মাধ্যমে আরেকটি বিশ্বায়ন হল।”

নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, “বাংলাদেশের মুক্তধারার সঙ্গে নিউ ইয়র্কের মুক্তধারার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলা প্রসারে বিশ্বজিৎ সাহার ভূমিকা অনস্বীকার্য। নিউইয়র্কের হাত ধরে অনেক জায়গায় বইমেলা হচ্ছে। এর কৃতিত্ব মুক্তধারার।”

সভায় বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ফরিদ আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের বই কলকাতায়ও পাওয়া যায় না। সেখানে বাইরে বাংলা বই পাওয়া, মেলার মত উৎসব করা সম্ভব ছিল না। সেখানে মুক্তধারা আমাদের জন্য এটি সহজ করেছে। এখন উত্তর আমেরিকায় বাংলা বই সহজলভ্য হয়েছে।”

সাংবাদিক নবনীতা চৌধুরী বলেন, ‘আমার নিউইয়র্কের বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। নবান্ন উৎসব, পৌষ উৎসবের বাইরে গিয়ে বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলার উৎসব করা এটি অত্যন্ত চমৎকার ব্যাপার। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পথ চলায় বিদেশে বাংলা ভাষার চর্চা, প্রচার প্রসারে মুক্তধারার বিশেষ অবদান রয়েছে।’

শেষে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, বাংলা বইমেলাসহ বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে যারা স্থাপন করেছেন তাদেরকে স্মরণ করায় মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিৎ সাহা সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

মন্তব্য

Beta version