-->
নির্বাচিত গল্প

গল্পের পেছনের গল্প

তাসকিনা ইয়াসমিন
গল্পের পেছনের গল্প
মানুষের মনের ভীষণ কঠিন ব্যামো আছে। কোনো রোগই মনের রোগের মত না

গত ক’দিন ধরেই মনের অবস্থা যাচ্ছেতাই। মনের তো ভীষণ কঠিন ব্যামো আছে। কোনো রোগই মনের রোগ না। যদি হাতে টাকা থাকে তাহলেই মন ভালো, আর যদি কোনো কারণে হাতে টাকা না থাকে তাহলে মন মরা থাকে।

মন একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে। মন বিধ্বস্ত হবে। ব্যাপারখানা এমন যেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বেঁধে গেছে। প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে। প্রচুর বিল্ডিং ধসে পড়ছে। প্রচুর মানুষ হতাহত হচ্ছে।

তাই তো যাচ্ছেতাই মন নিয়েই আমি এখন আছি। আবার বাঁচার চেষ্টা করছি। মরতে চাই না।

বহু কষ্টে আগের মান-অভিমান ভুলে শুভকে ফোন দিলাম। শুভ আমার ন্যাংটাকালের বন্ধু। এক সাথে দুজনে কত নদীতে ঝাঁপ দিয়েছি, সাঁতার কেটেছি। তখনকার সমাজে শিশুদের মধ্যে অন্তত নারী-পুরুষ কোনো ভেদাভেদ ছিল না। এক সাথে স্কুলে যেতাম। এক সাথে খেলতাম। এক সাথে সবকিছু করতাম। সেই ন্যাংটাকালের বন্ধুত্ব টিকেছিল ততদিন, যতদিন না ও সম্পাদক হচ্ছে। সেই ওর কর্মজীবনের উত্থানের সবকিছুর সঙ্গী আমি। ওর কখন কোথায় চাকরির ইন্টারভিউ ছিল, কিভাবে চাকরি হলো, সেই চাকরি চলে গেল কেন- সবকিছু আমি জানি। আমি তো ওর সব গল্প মন দিয়ে শুনি। তাই সে সবসময় আমাকেই এসব কথা বলে। প্রতি বছর গড়ে একবার করে বলে, তুই আমার এখানে এসে জয়েন কর। যে আমি নিজের বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকব না, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হইনি; সেই আমি কিনা বাড়ি ছেড়ে ঢাকা যাব। মানতে পারি না। তাই শুভর কোনো শর্তেই ওর অফিসে চাকরি করতে রাজি হইনি।

যাক যেটা বলছিলাম। বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করি; পাশাপাশি লেখালেখি। দু’টো মিলে আমাদের তিনজনের সংসার দিব্যি চলে যাচ্ছে। এমন সময় চলে এলো ঘোড়ার ডিমের করোনা ভাইরাস। এ কি বিচ্ছিরি এক জিনিস- পুরো পৃথিবীকে তছনছ করে দিল। আমার অনেক আপনকে কেড়ে নিল। আমি এই ভাইরাসের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করেছি। প্রাণপণে লড়েছি। এক হাসপাতালে নয়। পরিবারের দুই বয়স্ক সদস্যকে যেন আক্রান্ত করতে না পারে এই ভাইরাস, সেই চেষ্টা করেছি। আর এতে আমি সফল হয়েছি। অবশ্য বাড়িতে কাউকে আসতে দিতাম না বলে পাড়া-পড়শী, আত্মীয়স্বজনের সবার চক্ষুশূল হয়েছি। এতে আমার কিছুই আসে-যায় না। আমার ওপর আপনাদের রাগ দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। আমি খুব ভালো করেই জানি, আমার পরিবারের কোনো সদস্য আক্রান্ত হলে আপনারা কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবেন না। না আর্থিক, না মানসিক কোনো সহযোগিতাই করবেন না। তো, প্লিজ দূরে থাকুন।

সবদিক চিন্তা করেই শুভকে ফোন দিলাম। হাতে টাকাও বেশি নেই। দিন চলে না। কি করি। কি করি। শুভ ফোনটা ধরল। ভেবেছিলাম ধরবে না। ওর বউয়ের একটা শাড়ি নিয়ে পরে ফেরত দিতে পারিনি। শাড়িটা ছিঁড়ে গেছে। সেই থেকে ওরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনে আমাকে দু’চোখে দেখতে পারে না। আমিও বুঝেছি ন্যাংটাকালের বন্ধু বড় হলে আর বন্ধু থাকে না। বোকামি আমারই ছিল। শাড়িটা নেওয়া ঠিক হয়নি। আমাদের রেড শাড়ি পার্টি ছিল। শুভর বউ বলেছিল লাল শাড়ি নিয়ে ভাবছো কেন! আমারটা পরে যাও। নিজেই পরিয়ে দিয়েছিল। সবাই পার্টিতে শাড়ির অনেক প্রশংসাও করেছে কিন্তু ফেরার পথে রিকশার চাকায় বেঁধে শাড়িটা ছিঁড়ে গেল। আর এই সামান্য শাড়ি নিয়ে শুভ আর ওর বউয়ের কি যে কদর্য চেহারা - যেন আমার চোখের সামনে এলো! আমার তখন এমন অবস্থা- শুধু মনে মনে বললাম ধরণী দ্বিধা হও। সামান্য একটা শাড়ি নিয়ে ওরা দুজনে যা করল তা করল। অথচ এই দম্পতির বিয়ের কাবিননামার খরচ এবং বিয়ের শাড়ি, বর-বউয়ের মালা, কাজী অফিসে সবাইকে মিষ্টি খাওয়ানো, বাসরঘর ফুল দিয়ে সাজানো- বিয়ের পর দুজনের সিলেটে বেড়াতে যাওয়ার সমস্ত খরচ আমি দিয়েছি। আমি তখন পুরোদস্তুর বেতনভুক্ত শিক্ষক। আর শুভ কেবল রিপোর্টিং করার চেষ্টা করছে। ১০টা রিপোর্ট পাঠালে ১ টা ছাপা হয়। মাস শেষে যে টাকা পায় তা দিয়ে ওর ফ্যাক্সের টাকাই ওঠে না। বিয়েতে খরচ করবে কি করে? মানুষ যখন বেশি অর্থকষ্টে থাকে, তখনই সে বেশি প্রেমে পড়ে। শুভ আর তনুজা আমার কাছে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

অন্যদিকে, আমি মা-বাবার একমাত্র সন্তান। শুভদের বিয়ের সময় আমার আর বয়স কত ছিল! ২৪-২৫। মা-বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ায় আমার অর্থের কোনো অভাব ছিল না। তখন দাদা-দাদি, নানা-নানি সবাই বেঁচে। চাচা-ফুফু, মামা-খালাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কও খুব ভালো ছিল। সারাক্ষণ বাড়ি মানুষের কোলাহলে মুখর থাকত। বাড়িতে কে আসছে, কে যাচ্ছে- এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথাই ছিল না কারো। শুভর মতো বন্ধুরা সব সময় আমাদের বাড়িতেই থাকত। ওরা এলে যেতে চাইত না। আমারও সবার সাথে থেকে এত বেশি অভ্যাস যে কি বলব।

শুভ ঢাকায় সাব এডিটরের চাকরি পেল। পরে সে নিউজ এডিটর হলো, সব তথ্যই শুভ ফোনে জানাত। ও যখন এক্সিকিউটিভ এডিটর তখনই আমি ঢাকায় ২ দিনের ট্রেনিংয়ের জন্য যাই। Institute of Education and Research প্রত্যেক জেলার একজন করে শিক্ষককে ট্রেনিং দিচ্ছে। সেখানকার ব্যাচমেটরাই ‘রেড শাড়ি’ পার্টির আয়োজন করে। আমি তো লাল শাড়ি নিয়ে যাইনি। তনুজা দিল, তাই পরলাম। আর এ এক লাল শাড়ি গত ৪৮ বছরের সম্পর্কে চিড় ধরাল! আফসোস।

শুভকে যখন ফোন দিলাম খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। ও ফোন ধরতে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা যে কতটা দুর্বল হয়েছে তার সবই শুভ জানত। তবু বললাম, তুই তো জানিস আব্বার হৃদরোগ ধরা পড়ার পর থেকে আমরা রীতিমতো রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। এদিকে করোনায় আমার বেতন বন্ধ, কিন্তু খরচ তো থেমে নেই। এক পাতা মেটাকার্ড এম আর ২২৫ টাকা। সেটাও পাইকারি দোকানে। কিনতে যেতে আরও ৩০ টাকা বাড়তি অটোভাড়া দিতে হয়। সব মিলিয়ে আমার বিপন্ন সময়। বিপন্ন অবস্থা।

শুভ জানতে চাইল ও আসলে আমার জন্য কি করবে? বললাম, আমার নিয়মিত গণমাধ্যমে লেখালেখি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব সাব এডিটর ফোনে আমার কাছে লেখা নিত সবারই চাকরি গেছে। ২/১টা হাউস লেখা নেয়; তবে আগের মতো মাস শেষে পেমেন্ট দেয় না। ঢাকাতেও যে তোরা ধুকছিস করোনার অর্থনৈতিক থাবায়, সেটা আমি এখানে বসেই বেশ টের পাচ্ছি।শুভ বলল, অতসব ভণিতা না করে আসল কথা বল। কি চাস? বললাম, তোর ওখানে লেখা পাঠাই, ছাপিয়ে অন্তত কিছু দিস।

আচ্ছা পাঠা দেখব বলেই শুভ ফোনটা রেখে দিল। আমার মনে অন্য অনেক ভাবনা আসছিল। আমি সবটা চাপা দিয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে লিখতে বসলাম।

প্রথমেই নাম নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়লাম। কি নাম দেব? নাম ঠিক করতে পারলেই গল্প আসবে। তখন ফেব্রুয়ারি মাস। সামনে ভ্যালেন্টাইন্স ডে। আবার বসন্ত শুরু হচ্ছে। এখন এই ফেসবুক জমানায় মানুষের মধ্যে থেকে অন্যকে উপহার দেওয়ার প্রবণতা অনেক কমছে গল্পের নাম উপহার লিখলে কেমন হয়! নাম তো ঠিক হলো- এবার গল্পের নায়ক নায়িকার পালা। কারা হবে সেই গল্পের প্রধান চরিত্র। আমার তো এবার প্রধান চরিত্র ঠিক করতে হবে। আমি আমার টাইম মেশিনে ঘুরে ঘুরে চরিত্র খুঁজতে লাগলাম। আব্বা-আম্মা! নাহ দুজনে ষাটের দশকের। শুভ-তনুজা। ওহ্, যারা শাড়ি ছিঁড়লে বন্ধুত্ব নষ্ট করে। তারা দেবে উপহার; চলবে না।

মনু আপা-হুদা ভাই। নাহ! দশক ষাট। মিনু আপা-হাসনাত ভাই! নাহ, দশক আশি। মাহবুব স্যার-ভাবি। নাহ দশক আশি। আফসান ভাই-ভাবি। নাহ স্যার হচ্ছেনা। জুয়েলা আপা, সীমা আপা, নাজু আপা, দিলরুবা আপা, ঝুমা আপা, মুনিমা আপা, পারুল, মলি, ঝর্ণা, পিউ, সীতু আপা নাহ এগুলো কাউকে দিয়ে হবে না। তাহলে! এমন কাউকে লাগবে যারা এই মুহূর্তে জমিয়ে প্রেম করছে, সংসার করছে।পেয়েছি।

আমরা দর্জি মাস্টার। wow কিন্তু সেখানেও তো সমস্যা! is he married on not? ofcourse married, but how old his wife, what is her name, how beautiful she is?কোনো কিছুই তো জানি না। কিন্তু গল্পের জন্য স্যার একদম একশতে একশ। আমি মূলত নব্বই দশকের জুটি খুঁজছি যেন তাদের নিয়ে লিখতে পারি। কেননা এই দশকটাই আমার সবচেযে বেশি চেনা।তাহলে শেষ পর্যন্ত এটাই ঠিক হলো আমি আমার স্যারকেই আবার নায়ক বানালাম। দুপুরের খাবারের পরই আম্মাকে বললাম, আমি সন্ধ্যায় কিছুক্ষণ লেখালেখি করব।

এটা বলার অর্থ হচ্ছে, তখন আমাকে ডাকাডাকি করা যাবে না। আম্মা জানে। তবুও আবার মানে করিয়ে দেওয়া। ঠিক সন্ধ্যা সাতটায় লিখতে বসলাম। আমার লেখার টেবিল, সাদা কাগজ, কলম, চেয়ার আর আমার আঙ্গুল ব্রেইন। একসঙ্গে মিতালি হলো। লেখাশুরু করলাম ছোট গল্প উপহার। এই গল্পের নায়িকা মম, যে কিনা গাছ পাগল এক নারী সঙ্গে একজন অনলাইন উদ্যোক্তা। আর প্রেমিক পুরুষ একজন পুলিশ কর্মকর্তা। নিজের দেখা চারপাশের প্রকৃতি এবং দুই নায়ক-নায়িকা মিলে গল্পটা দাঁড়াল- যার নাম উপহার। সন্ধ্যা সাতটায় লিখতে বসেছি। একটানা লিখে চললাম। এর মধ্যে আবার রাতের খাবারের তাগাদা এসেছে। আমি উঠিনি। একবার ছেদ পড়লে এই লেখা এই জনমে আর শেষ হবে না। আমি সেই রিস্ক নিতে চাই না।

পাক্কা সোয়া তিন ঘন্টা পর ঠিক দশটা বেজে পনের মিনিটে লেখাটি শেষ হলো। এরপর রাতের খাবার খেলাম। ঘুমোতে যাবার আগে শুভকে ফোন দিলাম। বললাম, লেখা রেডি করেছি তোর নতুন অফিসের ইমেইল দে, পাঠিয়ে দেই। শুভ বলল, এত তাড়াতাড়ি লিখে ফেললি। বললাম, হ্যাঁরে দোস্ত টাকার খুব দরকার।আচ্ছা পাঠা। দেখি কি করা যায় বলেই শুভ ফোনটা রেখে দিল। ওর এসএমএস পেলেই আমি ইমেইলে লেখাটা পাঠালাম।পরদিন শুভর সঙ্গে আর কোনো কথা হলো না।

ওর ওয়েবসাইটে চেক করলাম এখনও লেখাটা ছাপায়নি। রাতে ফোন দিলাম। ফোন ধরেই বলল, লেখাটা সাইটে উঠেছে দেখেছিস। বললাম, কই? পেলাম না তো। বলল, দ্যাখ আছে।আমি ফোনের লাইন কেটে আবার চেক করলাম। দেখলাম কেবলই দেওয়া হয়েছে। পুরো লেখাটা পড়লাম। আমার দেওয়া লেখাটাই হুবহু ছেপেছে। কোনো এডিট করেনি। ভাবলাম তার হয়তো এখন তেমন ভালো মাপের কোনো সাব এডিটর নেই। না হলে শুভর মতো খুঁতখুঁতে সম্পাদক লেখা এডিট না করে রেখে দেবে। ও অত ভাল না। হোক সেটা মৌলিক গল্প ও এডিট করবেই। সে রাতে শুভর সাঙ্গে আর কথা হলো না। পরদিনও শুভর কোনো সাড়া নেই। নিজেকে সামলাতে না পেরে সন্ধ্যায় ওকে ফোন দিলাম। ফোনটা ধরেই শুভ মিটিংয়ের ব্যস্ততার ভান দেখাল। এই টোন আমার বড্ড চেনা। আজ গত ৩০ বছর ধরে সম্পাদক প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা যখন-তখন এমন করে মিটিংয়ের ভান দেখায়।

বললাম, দোস্ত লেখাটা তো ছেপেছিস। কিন্তু কত দিতে পারবি এখনও জানাসনি, এমাউন্টটা জানালে বড্ড উপকার হয়। মাসের শেষে যখন টাকাটা হাতে পাব তখন আমার হিসাব অনুযায়ী খরচ করা সহজ হবে। শুভ বলল, তুই এই লেখার জন্য কত চাস? আমি বললাম, লেখাটা লিখতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। শব্দ হয়েছে ২০০০। তুই আমার সময়, শ্রম, মেধা সবকিছু মিলিয়ে ৫০০০ টাকা দিস।শুভ প্রায় খেঁকিয়ে উঠে বলল, এত টাকা চাস? ওইটুকু একটা ছোট গল্পের জন্য? তবু যদি রবীন্দ্রনাথ হতিস তো মানাত। আমি সবে সম্পাদক হয়েছি এত টাকা তোকে দিতে পারব না।আমি বললাম, আচ্ছা তুই আমার মেধার দাম দিস না। আমার সাড়ে তিন ঘণ্টা সময়ও বাদ দিলাম।

প্রতি শব্দের জন্য এক টাকা করে দিস। যাস্ট কম্পোজের দামটা দিস। ২০০০ টাকা দিলেই চলবে। মনে মনে বললাম, এই টাকা দিয়ে অন্তত সাত দিনের ওষুধ কিনে ফেলতে পারব। কথাটা শুধু মুখ ফুটে শুভকে বললাম না।

শুভ আরও খেঁকিয়ে ওঠে বলল, শোন। এই ধরনের লেখার জন্য, এই খাতে লেখার জন্য আমার কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। আমি তোকে এই লেখা বাবদ কোনো টাকাই দিতে পারব না। কথাগুলো বলেই শুভ ফোনটা কেটে দিল। আমি কিছুক্ষণ উবু হয়ে চেয়ারে বসে রইলাম।

পরদিন বিকেলে চায়ের টেবিলে আড্ডা বসল, আব্বা জিজ্ঞেস করল, তোমার মন খারাপ?আমি বললাম হ্যাঁ!

কারণ জিজ্ঞেস করায় বললাম, শুভকে একটা লেখা পাঠিয়েছি। এই লেখার জন্য ২০০০ টাকা সর্বনিম্ন হিসেবে দিতে বলেছিলাম, ও রাজি হয়নি।

আব্বা বলল, তোমার কাছে লেখা নিল। ছাপাল। এতে তার পত্রিকার ক্রেডিট বাড়ল। এটি ছাপাতে যা যা আনুষঙ্গিক প্রয়োজন সবই মেটাল। তার অফিস স্টাফ, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, প্রুফ রিডার, সাব-এডিটর সবাই এ কাজের জন্য টাকা পেল, শুধু তুমি লেখক। তুমিই কোনো টাকা পাবে না, তাই তো! আমি মলিন মুখে বললাম, হ্যাঁ। তুমি ঠিক বলেছ।

মন্তব্য

Beta version