-->
বইমেলা প্রতিদিন

বিক্রেতারা খুশি, এখনো আসছে নতুন বই

ইফ্ফাত শরীফ
বিক্রেতারা খুশি, এখনো আসছে নতুন বই
এবারের বইমেলার বিক্রি গত বছর থেকে ভাল বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা। ছবি- ভোরের আকাশ

বইমেলা এখন শেষের দিকে। ইতোমধ্যে প্রকাশকদের বিক্রির হিসেব শুরু হয়ে গেছে। এবার বই বিক্রিতে খুশি প্রকাশকরা। কিছু প্রকাশক বিক্রিতে সন্তুষ্ট না হলেও অধিকাংশ প্রকাশক সন্তুষ্ট। বিশেষ করে বড় স্টল এবং প্যাভিলিয়নের প্রকাশকরা মেলার সার্বিক বিষয়ে খুশি। এবারের বইমেলার বিক্রি গত বছর থেকে ভাল বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা। তবে এখনই তারা টাকার অঙ্ক জানাতে নারাজ। সময় শেষ হলেও এখনো নতুন বই আনার চাপ রয়েছে প্রকাশকদের।

শেষ সপ্তাহের বেচাবিক্রি নিয়ে ভোরের আকাশের সঙ্গে আলাপ হয় ‘কথাপ্রকাশ’ প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক জাফিরুল ইসলামের। তিনি বলেন, মেলার শেষ সপ্তাহে আমাদের আশানুরূপই বিক্রি হচ্ছে। বাকি যে দিনগুলো আছে একদিন বেচাবিক্রি ভালোই হবে বলে আমরা আশা করছি। আমাদের স্টলে এখন পর্যন্ত নতুন ৬০টির অধিক নতুন বই চলে আসছে। তবে আরো কিছু বই বাকি আছে। এই বইগুলো দু-একদিনের ভিতর চলে আসবে বলে আশা করছি। তবে মেলা শুরু হওয়া থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মেলা প্রচুর জমজমাট ছিল। মেলা বৃদ্ধি হবার পর থেকে মার্চের প্রথম কিছুদিন মেলায় কিছুটা ঢিলেঢালা ভাব ছিল। এরপর মার্চের ৫ তারিখ থেকে ধীরে ধীরে মেলা আবারো জমতে শুরু করে। গত দুইদিনে আমাদের আশার থেকেও অধিক পরিমাণ পাঠক আসছে। এর পাশাপাশি বিক্রিটাও সেই পূর্বের মতো আবার ফিরে গেছে। আমরা আশা করছি বাকি দিনগুলোতে বেচাবিক্রি ভাল হবে।

প্রকাশনী সংস্থাগুলো বলছেন, এখন পর্যন্ত মেলা খুব সুন্দর ভাবে চলছে। মেলায় পাঠক সমাগমও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেলা তার আগের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বিগত দুই বছর করোনার কারণে মেলা সে রকম ভাবে জমেনি। গতবার বইমেলা হয়েও না হবার মতো ছিল। এর ফলে অনেক প্রকাশক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বইমেলা বাড়ানোর কারণে প্রকাশনা সংস্থাগুলো বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা জানান, মেলা বাড়ানোর ফলে প্রকাশনীগুলোর বিক্রিও বেড়েছে। এবারের মেলায় পাঠকের আনাগোনাও ছিল ভাল।

ভোরের আকাশের সঙ্গে কথা হয় ‘তাম্রলিপি’ প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি জামিউল কাউসারের। তিনি বলেন, যেহেতু মেলা শেষের দিকে। সবাই চাচ্ছে মেলার শেষ সময়ে নিজেদের পছন্দের বইগুলো সংগ্রহ করতে। যার ফলে দর্শনার্থী পাঠক যেমন বাড়ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতাও। এবছর আমাদের প্রয় ৮০টি নতুন বই আসছে। আমাদের স্টলে বেশি বিক্রিকৃত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে জাফর ইকবালের লেখা ‘আহা টুনটুনি উহ ছোটাচ্চু’ বইটি বিক্রি হচ্ছে ২২৫ টাকায়। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়ে যারা জাফর ইকবালের কথায় অনশন ভেঙ্গেছিল তাদের উদ্দেশ্যে এই বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে।

মেলার প্রথম দিকে অনেকেই ঘুরতে আসলেও শেষ মুহূর্তে এ সকল পাঠকরা তাদের পছন্দের বইগুলো সংগ্রহ করতেই মেলায় আসছেন। এমনই একজন পাঠক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী কামরুন্নাহার। তিনি প্রথম দিকে বেশ কয়েকবার মেলায় এসেছেন ঘুরতে। এই ঘুরাঘুরির মধ্যে তার দুইটি বই বেশ পছন্দ হয়। গতকাল রোববার মেলার ২৭তম দিনে এসে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসটি এবং হুমায়ূন আহমেদের ‘মিসির আলি সমগ্র’ বইটি কিনে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রথম কয়েকদিন মেলায় ঘুরার উদ্দেশ্যে আসলেও তখন কোনো বই কেনা হয়নি। আজকে এই দুটো বই কিনেছি এই বইগুলো আগে থেকেই পছন্দ করা। মেলার সার্বিক পরিস্থিতি ভাল।

বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের স্টলে বিক্রয় প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তাদের স্টলে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ডিআইজি তওফিক মাহবুব চৌধুরীর লেখা ‘আমি জানি তুমি মিথ্যা বলছ’।

মন্তব্য

Beta version