সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক নেতা ও উদীচীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের ১১৫তম জন্ম বার্ষিকীতে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সমাবেশে বক্তারা বলেন, সত্যেন সেন কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিলেন। হেঁটে হেঁটে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সাধারণ মানুষকে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছেন। গণমানুষকে তুলে এনেছেন তাঁর সাহিত্যে। তিনি ছিলেন মেহনতি মানুষের কণ্ঠস্বর।
সোমবার (২৮মার্চ) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সত্যেন সেনের সহকর্মী এবং উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ ইদু, সহ-সভাপতি রফিকুল হাসান জিন্নাহ, সহ-সভাপতি হাবিবুল আলম, সাধারণ-সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ-সম্পাদক আরিফ নূর।
সহ সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে সত্যেন সেন রচিত ‘আজব কাণ্ড ঘটছে রে ভাই মনের দুঃখ কই কারে’, ‘দিনেই যদি হসরে কানা, কী হবে আর রাত্রি হলে’ দু’টি গান পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা।
সত্যেন সেনকে স্মরণ করে গোলাম মোহাম্মদ ইদু বলেন, সত্যেন সেন মেহনতি মানুষের জন্য আজীবন কাজ করে গেছেন। তার অনেক সাহিত্য আজও অজ্ঞাতে রয়ে গেছে। উদীচীকে সেগুলো উদ্ধার করতে হবে।
অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, সত্যেন সেনের সাহিত্য সংকলন নয়টি খণ্ডে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। দশম খণ্ডের কাজ চলছে। সকলের নিকট আমার অনুরোধ থাকবে, সত্যেন সেনকে যেন আমরা ভুলে না যাই।
কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, এমন কোনো ক্ষেত্র নেই সত্যেন সেন কাজ করেননি। তিনি গান লিখেছেন, ইতিহাস লিখেছেন,গণ মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন।
শিল্পী-সাংবাদিক-সংগ্রামী সত্যেন সেন জন্ম ১৯০৭ সালের ২৮ মার্চ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পুনরুত্থান সবই তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন; কখনো শিল্পীর চোখ দিয়ে, কখনো সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একনিষ্ঠ সংগঠকের চোখ দিয়ে। ১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মন্তব্য