-->
শিরোনাম
বাবা দিবসের কবিতা

বাবা চিরদিন

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ
বাবা চিরদিন

বাবা চিরদিন

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ

বাবা ছিলেন মানুষ সাদাসিধা

নিয়ম মেনে চলতেন

 

সময়মতো ঘুম, গোসল আর

খাওয়ার কথা বলতেন।

 

সময়মতো অফিস যেতেন বাবা

সময়মতো আসতেন

 

ছবি আঁকার হাত ছিল খুব ভালো

আঁকতে ভালবাসতেন।

 

শিল্পমনা ছিলেন তিনি খুব

বই পড়া তার নেশা

 

গান শুনতেন, নাটক দেখতেন

বাবাই আমার দিশা।

 

আমিও ঠিক একটু বাবার মতো

শিল্প ভালো লাগে

 

বাবার সাথে জিনগত মিল খুব

যাই অফিসে আগে।

 

আমার বাবা থাকতেন ফিটফাট

বড্ড শৌখিন ছিলেন

 

বাবার সকল স্বভাব যেন

আমায় দিয়ে গেলেন।

 

আমরা ছাড়া কেউ ছিল না বাবার

সব কথা তাই বলতেন

 

রোগে শোকে কাতর হতেন খুব

খুব নীরবে চলতেন।

 

একবার এক রোজার মাসে বাবা

যান বাথরুমেতে পড়ে

 

সঙ্গে সঙ্গেই ডেকে আনি গাড়ি

গেলাম তড়িঘড়ি করে।

 

এইচডিইউতে ভর্তি করি তাকে

ভয়ের কিছুই নয়

 

মাইনর এক ব্রেইন স্ট্রোক

ডাক্তার সাহেব কয়।

 

ভিতর থেকে শক্ত ছিলাম খুব

বাবাই ফিরে আসবেন

 

আগের মতো সব স্বাভাবিক হবে

শিশুর মতো হাসবেন।

 

হাসপাতালে দিন পাঁচেক পর

ডাক্তার দিলেন ছুটি

 

বাবাই ফেরেন হাসিমাখা মুখে

এলো শান্তি মুঠিমুঠি।

 

এবার বাবা বেঁচে ফিরলেন ঘরে

ফেলি স্বস্তির শ্বাস

 

শক্ত ছিলাম মিলিয়ে নি ফের

ফলেছে আমার বিশ্বাস।

 

কিন্তু বিধি বামে ছিল বাবার

অসুস্থ হন আবার

 

অচেতন হন মিনিট ত্রিশ পরে

সময় এবার যাবার।

 

আবার ছুটি আয়েশা মেমোরিয়াল

দেখে ডাক্তার কন নেই

 

দেখুন আবার করি অনুরোধ

মুহূর্তে হারিয়ে ফেলি খেই।

 

মা মরেছে ছেলেবেলার কালে

আজ বাবা নিলেন ছুটি

 

এক নিমিষেই শূন্য পৃথিবীটা

সেবারই প্রথম কবরেতে নামি

 

শেষ দেখি প্রিয় মুখখানি

গাঁয়ের লোকে বলতেছিল খুব

 

রেখো সামলে চোখের পানি!

চোখের পানি পড়লে বাবার গায়

 

স্বপ্নে তিনি দিবেন না দেখা

বাবার-আমার হবে ছাড়াছাড়ি

 

বাবা একা আমিও হবো একা।

কোন সূত্র হয়নি আবিষ্কার

 

যে সূত্রে থামে চোখের জল

বাবার সনে রোজই হবে দেখা

 

ছিলো শক্ত মনোবল।

পুত্র-পিতার দেখা আটকায় কে

 

কিছুতেই এটা সম্ভব নয়

অচিন দেশে বাবা থাকেন ঠিকই

 

চিরদিন সে ছায়া হয়ে রয়।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version