ষোলো থেকে ছাব্বিশ
মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ
আমাদের তখন ষোলোএক বর্ষায় তোমার আমার প্রথম দেখা হল
রথের মেলার দিন
তুমি পরেছিলে তাঁতের শাড়ি টুকটুকে রঙিন
কপালে হলুদ টিপ
জ্বলজ্বল করে জ্বলছিল যেন বর্ষার প্রদীপ।
মুগ্ধতার দিন শুরু
লাজে ভয়ে সে কিশোরের বুক কাঁপছিল দুরু দুরু
হঠাৎ ভিড়ের মাঝে
জনসমুদ্রে তুমি হারালে আমিও ফিরি কাজে
কাজে মন বসে কই!
দিন কাটে না বর্ষা রাতে একা একা জেগে রই।
এর কিছু দিন পরে
তোমার আমার ফের দেখা হল কলেজ করিডোরে
বললাম সে দিন গিয়ে
সেই তুমি না লাল শাড়ি পরা মেলায় দেখা মেয়ে?
তুমি বলেছিলে কেন?
আমি বললাম আমি বুঝেছি তুমি বোঝ না যেন!
ঠোঁট বেকে দিলে হাসি
তোমার কাজল চোখ দুটো ঠিক বলেছিল ভালবাসি।
তারপর থেকে শুরু
আমি হয়ে গেলাম শিষ্য তোমার তুমি হলে যেন গুরু
প্রতিদিনই হতো দেখা
কলেজে না গেলে বিবর্ণ দিন আমি একা-তুমি একা
বছর দুয়েক পরে
কলেজের দিন ফুরিয়ে গেল উচ্চশিক্ষার তরে
আমাদের ভাগ্য ভালো
ভাগ্যগুণে তোমার আমার একই ক্যাম্পাস হলো
এবার স্বাধীন দিন
দুজনার চোখে আর কিছু নেই শুধু স্বপ্ন রঙিন।
আমাদের যত কথা
কাজের কথা, কথার কথা না ছিল নীরবতা
কত কথা হতো জমা
প্রেমের কথাতে ব্যাকরণ নেই না মানে দাড়ি কমা
আমাদের ঘর হবে
সে ঘরে কোনো অভিমান নেই শুধু ভালোবাসা রবে
জমা কথা ফিসফিস
এমনি করে তুমি আর আমি ষোলো থেকে ছাব্বিশ।
এর পর এলো ঝড়
ছেচল্লিশের পৌড়ের সাথে তুমি বেঁধে নিলে ঘর
টাকাওয়ালা বড়লোক
তুমি ভেবে নিলে এটাই সঠিক এর সাথে ঘর হোক
আজ দূর দেশে থাক
অচিন দেশের রোদ-বৃষ্টি সযতেœ গায়ে মাখ
ভালো থেকো খুব ভালো
আমার আকাশে শ্রাবণ মেঘ তোমার আকাশে আলো।
আজো মনে পড়ে সেই বর্ষায়
রথের মেলার দিনে
ষোলো বছরের কিশোরের মন নিয়ে ছিলে তুমি কিনে
কী করে সেসব ভোলো!
দেহের বয়স যদিও হয়েছে মনের বয়স ষোলো।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য