-->
সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু

অসুস্থ মাকে দেখা হলো না ওদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
অসুস্থ মাকে দেখা হলো না ওদের
রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় এমন বেপরোয়াভাবে চলাচল করতে দেখা যায় যানবাহন। ছবি- ভোরের আকাশ

অসুস্থ সাহেদা বেগম মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন। হঠাৎ হাসপাতালের বেডে শুয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। আশপাশের বেডে থাকা রোগীর স্বজনরা ছুটে আসেন তার কাছে।

কেন এমন কান্না, তা-ও জানতে পারছেন না কেউ। তবে বুঝতে পারছেন, হয়তো প্রিয়জন কেউ মারা গেছেন। কেউ সান্ত্বনা দিতে পারছেন না তাকে। কী করেই বা দেবে স্বান্ত্বনা।

একসঙ্গে স্বামী, মেয়ে ও মেয়ের জামাই মারা গেছেন। নাতিও আহত। অল্প কিছু পর হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রিয়জনদের দেখার কথা ছিল তার। কিন্তু নিয়তির কী পরিহাস! আর কোনোদিন দেখা হবে না তাদের। এ বেদনায় কারো কি স্বান্ত্বনা দেওয়ার সাধ্য আছে।

বলছি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় বাসের ধাক্কায় একই পরিবারের তিনজন নিহতের ঘটনার কথা। নিহতরা হলেন- আব্দুর রহমান (৬৫), তার মেয়ে শারমিন আক্তার (৩৫) এবং শারমিনের স্বামী রিয়াজুল (৪৫)।

আহত হন শারমিনের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার (৬) ও অটোরিকশাচালক রফিক (৪২)।

শুক্রবার ২১ জানুয়ারি সকাল ৭টার দিকে মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সংলগ্ন রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে পাঁচজনকে আহতাবস্থায় পুলিশ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

শারমিনের ভাই তানভীর বলেন, ‘আমাদের বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুরে। আমি মাতুয়াইলে থাকি। আমার মা সাহেদা বেগম মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে দেখতে বাবা ও বোন বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিলেন।

‘সকালে বরিশাল থেকে লঞ্চে সদরঘাটে আসেন তারা। সেখান থেকে অটোরিকশায় করে মাতুয়াইলে আমার বাসায় আসার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। আমার বাসা থেকে হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল তাদের।’

যাত্রাবাড়ী থানার এসআই বিশ্বজিৎ সরকার জানান, সকালে মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনে সেন্টমার্টিন পরিবহণের একটি বাস অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। পরে তাদের ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে তিনজন মারা যান। আহতদের চিকিৎসা চলছে।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ওসি বাচ্চু মিয়া জানান, চিকিৎসক জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই তিনজন মারা গেছেন। এদিকে এমন ঘটানার প্রতিবাদে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন সাধারণ মানুষ। এমন হত্যার প্রতিবাদ জানান তারা।

এদিকে রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় রাজিব (৩৮) নামে এক সিএনজি-অটোরিকশাচালক চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মারা গেছেন।

রাজিবের ভাই মিজান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে রাজিব অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় পিকআপভ্যান ও ট্রাকের মধ্যে পড়ে তার অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে পঙ্গু হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঢামেকে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টায় তিনি মারা যান।

রামপুরা থানার এসআই মো. মোমিনুর রহমান জানান, এ ঘটনায় পিকআপভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে চালক পুলিশ হেফাজতে আছে।

মন্তব্য

Beta version