-->
শিরোনাম

শেখ হাসিনার নামে বারিক বিল্ডিং-বিমানবন্দর সড়ক

চট্টগ্রাম ব্যুরো
শেখ হাসিনার নামে বারিক বিল্ডিং-বিমানবন্দর সড়ক
চসিক ৬ষ্ঠ পরিষদের ১২তম সাধারণ সভায় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি- ভোরের আকাশ

নগরীর বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনে কে.বি. আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে চসিক ৬ষ্ঠ পরিষদের ১২তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা জানান তিনি।

চসিক মেয়র বলেন, ‘‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, বিশেষ করে কোনোরূপ ম্যাচিং ফান্ড ব্যতিরেকে দুই হাজার চারশত ৯১ কোটি টাকার যে অনুমোদন দিয়েছেন, তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়ক’ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ১২তম সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণাকারী জননেতা এম.এ. হান্নানের কবরটিতে তার কীর্তিগাঁথা সম্বলিত নামফলক স্থাপন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের যেসব বরণীয় মহান ব্যক্তিরা অবদান রেখেছেন তাদের স্মৃতিকে অম্লান রাখার জন্য তাদের কৃতিত্বের বিবরণ সম্বলিত স্মৃতিফলক স্থাপন করা হবে।’

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় প্রধানরা বক্তব্য রাখেন।

নগরবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, ‘গৃহকর নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এই ধরনের বিভ্রান্তিতে কর্ণপাত না করে আপনাদের আমার ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। কোনো  কর বৃদ্ধি করার অবকাশ নেই। শুধু করের আওতা বাড়বে। অর্থাৎ আগে যে স্থাপনাগুলো ছিল, তা বৃদ্ধি করা হলে উক্ত অংশের কর ধার্য করা হবে।’

অসঙ্গতি দূর করার জন্য আরো দুটি কমিটি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই রিভিউ কমিটির মাধ্যমে সব আপিল বিবেচনা করে সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ করা হবে।

মেয়র এসময় সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ করে যে সব খাত থেকে চসিকের কর আদায় হয় না, তা চিহ্নিত করে কর আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজস্ব বিভাগকে নির্দেশনা দেন।

সভায় তিনি নগরীর চরম দুর্ভোগ জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজের গতি বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই শুষ্ক মৌসুমে প্রতিটি ওয়ার্ডের ছোট-বড় খাল, নালা-নর্দমা থেকে পলিথিন, আবর্জনা ও মাটি অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মেয়র বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে খাল, নালা-নর্দমা দখলপূর্বক স্থাপনা নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে তা তাদের স্ব স্ব উদ্যোগে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় চসিক ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে উচ্ছেদ ও জরিমানা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সড়ক বাতি রাতে জ্বলে না বলে অভিযোগ আছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সড়ক বাতি পরিদর্শকের মাধ্যমে তদারকি করে পরের দিন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মেয়র এসময় প্রত্যেক কাউন্সিলরকে তাদের ওয়ার্ডের প্রয়োজনীয় শেড এর চাহিদাপত্র প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়ার আহ্বান জানান। এই শুষ্ক মৌসুমেই সড়কগুলোতে লেইন মার্কিং ও জেব্রা ক্রসিং এর কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশও দেন তিনি।

সভায় ওয়াসাসহ সব সেবা সংস্থা কর্তৃক কর্তনকৃত রাস্তা দ্রুততার সঙ্গে মেরামতের জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা দেন মেয়র।

রমজান মাস সামনে রেখে বাজার মনিটরিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সসহ ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হবে। অবৈধ বাজার উচ্ছেদের ব্যাপারে চলমান অভিযান জোরদার করা হবে।’

আধুনিকায়নকৃত মেমন মাতৃসদন হাসপাতালটি পরিচালনায় প্রশাসনিক কমিটি করা হবে বলে সাধারণ সভাকে অবহিত করেন মেয়র।

পলিথিন ব্যবহার বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নগরীর ৫০টির অধিক কাঁচাবাজার আছে যেখানে এখনো পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এসময় পলিথিন ব্যবহার বন্ধে ব্যবসায়ীসহ নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চসিক ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রতিটি বাজারে পলিথিনবিরোধী অভিযান পরিচালিত হবে বলেও জানান মেয়র।

সাধারণ সভায় বিগত সভার কার্যবিবরণী ও স্থায়ী কমিটির সভার কার্যবিবরণী সর্ব সম্মতিক্রমে অনুমোদন পায়। সভার শুরুতে কোরান তেলাওয়াত ও মোনাজাত করা হয়। সভায় বিগত সভার পর চট্টগ্রামসহ দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ও তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।

মন্তব্য

Beta version