-->
শিরোনাম

আশা জাগাচ্ছে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

জহির রায়হান, বরিশাল ব্যুরো
আশা জাগাচ্ছে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

বরিশাল সিটি করপোরেশন উন্নীত হওয়ার ২০ বছর কেটে গেলেও প্রতিষ্ঠা হয়নি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ফলে পরিকল্পিত ও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরবাসী। তবে এবার এ অঞ্চলে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। এমন খবরে খুশি নগরবাসী। এর পুরো কার্যক্রম চালু হলে সুপরিকল্পিত উন্নয়ন ও আধুনিক নগরায়ণ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

জানা গেছে, ২০০২ সালের ২৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে বরিশাল সিটি করপোরেশনে (বিসিসি) উন্নীত হয়। এখানে সকল বিভাগীয় সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বৃহত্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আদালত, ব্যাংক-বীমা, এনজিও, শপিংমলসহ বিভিন্ন অফিস ও কলকারখানা রয়েছে।সিটি এলাকায় দিন দিন বাড়ছে দালানকোটা, রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়ন। এসব পরিকল্পিত উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণে বিভাগীয় শহর ও সিটি এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বরিশাল সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার দুই দশকেও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা হয়নি।

তবে বরিশাল সিটিকে আধুনিক, সুপরিকল্পিত শিল্প ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী করে গড়ে তুলতে এরই মধ্যে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০২২ (খসড়া) প্রণয়ন করেছে সরকার। যা সবার মতামত গ্রহণের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এমন খবরে সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার জোড় দাবি জানিয়েছে গোটা নগরবাসী।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নোটিশ সূত্রে দেখা গেছে, ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখার উপসচিব লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত ১৬ পৃষ্ঠার ‘বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ আইন-২০২২ (খসড়া) প্রণয়নের একটি গণবিজ্ঞপ্তি হয়। ৩১ জানুয়ারি খসড়া আইনটি সবার মতামত গ্রহণের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে নোটিশের মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি হিসেবে প্রকাশ করা হয়।

খসড়া আইনে বলা আছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওতাধীন যেসব এলাকা সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারণ করা হবে সেসব এলাকা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এলাকা হিসেবে প্রযোজ্য হবে যা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।আরো বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান, সরকার মনোনীত চারজন সদস্য, জেলা প্রশাসক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিনিধি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ২১ জনের সমন্বয়ে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে।মো. মাসুদ রানা নামে নগরীর এক বাসিন্দা বলেন, যেকোনো সিটিতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ছাড়া সুপরিকল্পনা উন্নয়ন সম্ভব না। বরিশালে উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ নামে কোনো নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান না থাকায় নগরীতে পরিকল্পনা ছাড়া যত্রতত্রভাবে ভবন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছে নগরবাসী। বরিশালে উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের পুরোপুরি কার্যক্রম চালু হলে সুপরিকল্পিত উন্নয়ন ও আধুনিক নগরায়ণ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।

বরিশালের গবেষক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, ‘বরিশাল নগরীতে প্রতিনিয়তই মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরিকল্পিত নগরায়ণও। নিয়ম ও আইন-কানুন না মেনে রাস্তা ছাড়াই অনেকে ভবন নির্মাণ করছেন। এসব নিয়ন্ত্রণে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরো অনেক আগেই দরকার ছিল।’বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘দেশের ক্রমবর্ধমান শহরগুলোতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। বরিশালে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ না থাকায় সরকার বরিশাল সিটিকে আধুনিক, সুপরিকল্পিত শিল্প ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০২২ (খসড়া) প্রণয়ন করেছেন। এটা নগরবাসীর জন্য সরকারের উপহারস্বরূপ। এর মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে বরিশাল বিভাগ অন্যতম একটি অধ্যায় হওয়ার সুযোগ পাবে।’

মন্তব্য

Beta version