-->
শিরোনাম
সংবাদ সম্মেলনে দাবি

অভিবাসী শ্রমিক ও পরিবারের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
অভিবাসী শ্রমিক ও পরিবারের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করুন

নিরাপদ এবং সহজ অভিবাসনসহ অভিবাসী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সকলের জন্য প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করতে সংবাদ সম্মেলন করেছে লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরাম।

রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আইটিইউসিবিসি সাবেক চেয়ারপারসন আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা এবং ডেইলি অবজারভার এর সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খবর এবং বাংলাদেশ নিউজ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং বাংলাদেশ লেবার রাইটস সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আবদুল হান্নানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, অভিবাসী শ্রমিকদের অর্জিত আয় বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে ১৯৭৬ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রম অভিবাসনের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকরা।

তিনি বলেন, সরকারি হিসাব মতে, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব, ওমান, কাতার, জর্ডান, মরিশাস, কুয়েত, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, লেবানন, লিবিয়া, সুদান, মিশর, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রুনেই, জাপান, মালদ্বীপ, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ১৬১ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক পাড়ি জমায়। এর মধ্যে ১৯৯১ সাল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ১০ লাখ ৪৫৬ জন। ৭২ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিকের বয়স ২০-৬৪ বছর। তাই এদের সামগ্রিক সুবিধায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কিত তথ্য এবং সঠিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এখনও বিদ্যমান রয়েছে। অনেক সময় কোন নিয়ম নীতি ছাড়াই ওয়ার্ক ভিসা (কর্ম ভিসা) কেনা বেচা করা হয়। নিয়োগদানকারী সংস্থার মাধ্যমে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়মের শিকার হয়। রিক্রুটিং এজেন্সি ও বিদেশ গমনেচ্ছু শ্রমিকগণ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় মূলত সাব-এজেন্টদের ওপর নির্ভরশীল। ফলে প্রতারণার সুযোগ থাকে। কখনো কখনো নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলো সাধারণত মৌখিকভাবে এবং রশিদবিহীন হয়ে থাকে ফলে লেনদেনের কোনো প্রমাণ থাকে না।

তারা আরও বলেন, নিয়োগকর্তা চুক্তি অনুযায়ী কাজ ও মজুরি প্রদান না করলেও ঋণ পরিশোধ করার জন্য শ্রমিকগণ কাজ করতে বাধ্য থাকে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু ব্যক্তির (সাব-এজেন্ট, মধ্যস্থতাকারী) মাধ্যমে পাসপোর্ট আটকে রাখা হয়। নিয়োগ এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য জানা না থাকার কারণে তাদের পাচারকারীদের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

বক্তারা আরো বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বিশ্বের ১৭৪ টি দেশে বাংলাদেশের কর্মীরা কাজ করতে যায়। এর মধ্যে সৌদিতে ৩৪.২৪%, আরব আমিরাতে ১৭.৬২%, ওমান ১১.৫৭%, মালয়েশিয়া ৭.৭৫%, কাতার ৬.৩০%, সিঙ্গাপুর ৬.০২%। ২০২০ সালে অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি এবং ২০২৩ সালে যা ২৩ বিলিয়নে দাঁড়াবে। অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমাণ ২ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি। ১৭৪ টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীরা গেলেও তাদের অধিকার সুরক্ষায় ২৬ টি দেশের বাংলাদেশ মিশনে শ্রম কল্যাণ উইং আছে মাত্র ২৯ টি। তাই কর্মীদের যথার্থ সেবা, সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করতে জনবল বাড়ানো প্রয়োজন।

মন্তব্য

Beta version