-->

স্বজন, নিকট আত্মীয় ও গৃহকর্তার মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার কন্যাশিশুরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বজন, নিকট আত্মীয় ও গৃহকর্তার  মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার কন্যাশিশুরা
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন’ করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোক্যাসি ফোরাম।

গত এক বছরে দেশে ১১৬ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। অধিকাংশ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে রাস্তায়, নিজের বাসায়, নিকট আত্মীয় ও গৃহকর্তার মাধ্যমে।

রোববার (২৭ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সামাদ হলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন’ করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোক্যাসি ফোরাম।

ফোরামের সভাপতি এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, ব্র‍্যাকের নবনীতা চৌধুরী, গুডনেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মঈনুদ্দিন মাইনুল ও এডুকো বাংলাদেশের গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, কন্যাশিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা দেশে একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কন্যাশিশু ও নারীর প্রতি সকল সহিংসতাকে সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাদের ওপর নির্যাতন মূলত দুই প্রকার।

প্রথমটি হচ্ছে সামগ্রিকভাবে সমাজের নিপীড়িতদের একজন হিসাবে। দ্বিতীয়টি কেবল কন্যাশিশু হিসাবে জন্মানোর জন্য। এ ছাড়া কান্যাশিশু ও নারীদের প্রতিনিয়ত নানা ধরনের নির্যাতন, নিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হতে হয়।

এ ধরণের ঘটনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লিঙ্গভিত্তিক।

নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, ২০২১ সালে মোট ১১৬ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন বিশেষ শিশুও রয়েছেন। ২০২০ সালে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিল ১০৪ জন কন্যাশিশু। অর্থাৎ ২০২০ এর তুলনায় ২০২১ সালে যৌন হয়রানি ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ ছাড়া এসিড আক্রমণের শিকার হয়েছে ১০ জন, অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ২০৬ জন, বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে ২ হাজার ৮৬৮ জন, যৌতুকের কারণে নির্যাতিত হয়েছেন ১৭ জন এবং যৌতুকের জন্য নির্যাতনে ৯ জন মারা গেছেন।

অনুষ্ঠানে ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছি। নির্যাতন বন্ধে সরকারসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

এ লক্ষ্যে আমরা নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করে তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে জনসেচতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি। একইসঙ্গে সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থাকে আরো সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

ব্র‍্যাকের জিজেডি এন্ড পিভাউ পরিচালক নবনীতা চৌধুরী বলেন, 'এই প্রতিবেদন আমরা একটি সংখ্যাগত প্রমাণ উপস্থাপন করেছি। এখানে প্রকাশিত তথ্যগুলো পত্র-পত্রিকায় এসেছে। যা প্রকৃত সংখ্যা থেকে অনেক কম।

কন্যাশিশু নির্যাতন রোধে সঠিক তথ্য উঠে আসা জরুরি। কিন্ত তা হচ্ছে না। যেমন সরাকারি বেসরকারিভাবে কারো কাছে বাল্যবিবাহের কোনো তথ্য নেই।

আমরা শুধুমাত্র যেগুলো প্রতিরোধ হচ্ছে সেই তথ্যগুলো পাচ্ছি। সার্বিকভাবে নির্যাতন বন্ধে সকলের সচেতনতা জরুরি।

 

মন্তব্য

Beta version