-->

পেপার কোন্-টিউব উৎপাদনের কাগজের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
পেপার কোন্-টিউব উৎপাদনের কাগজের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিপিসিটিএমএর সংবাদ সম্মেলন। ছবি- ভোরের আকাশ

পেপার কোন্ ও পেপার টিউব উৎপাদনে ব্যবহৃত কাগজের ‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির’ প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ পেপার কোন্ এন্ড টিউব ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন (বিপিসিটিএমএ)। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে সংগঠনের সভাপতি হালিম সরকার তুহিন, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রশিদ রাসেলসহ পরিচালক ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি জানায় বিপিসিটিএমএ। দাবিগুলোর মধ্যে আছে- রাতারাতি এই কাগজ তথা কাঁচামালের দাম বাড়ানো যাবে না। বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে অন্তত এক মাস আগে বিপিসিটিএমএকে জানাতে হবে। পেপার কোন্ ও পেপার টিউব তৈরির কাগজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। বিষয়টির প্রতিকার চেয়েও কোনো ফল মিলছে না; মানসম্মত পেপার বোর্ড ও কাগজ উৎপাদন হচ্ছে না। এই অবস্থার অবসানকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিপিসিটিএমএ বলছে, যে দামে কাগজ ও বোর্ড উৎপাদন কারখানাগুলো কাঁচামাল সংগ্রহ করে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশের বস্ত্র শিল্প কারখানায় উৎপাদিত সুতা ও কাপড় ধারণের জন্য পেপার কোন্ ও টিউব ব্যবহার করা হয়, যা উৎপাদনের জন্য প্রধান কাঁচামাল হিসেবে যে পণ্যটি ব্যবহার হয় তা বিশেষ ধরনের কাগজ ও বোর্ড। এই কাগজ মূলত পথেঘাটে পড়ে থাকা ওয়েস্ট পেপার থেকে প্রসেস করে পণ্যগুলো উৎপাদন করা হয়। সেই বিবেচনায় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল থাকার কথা।

কিন্তু দুঃখের বিষয় একটা সময় পর্যন্ত এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল থাকলেও বেশ কিছু দিন ধরে পণ্যটি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো মূল্যবৃদ্ধি করে চলেছে। ফলে এই কাগজ ও বোর্ড ব্যবহার করে আমাদের মতো যারা পেপার কো্ ও পেপার টিউব উৎপাদন করে থাকে তারা মহাবিপাকে পড়েছে।

তারা বলেন, এই পেপার কোন্ ও পেপার টিউব কোনো শো-রুমে বা দোকানে বিক্রি করা যায় না। সুতা ও বস্ত্র তৈরির কারখানাগুলো আমাদের কাছ থেকে সরাসরি এই পণ্য ক্রয় করে। তারা চাহিদা মোতাবেক একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ পণ্যের ক্রয়াদেশ দেয়। এই পরিমাণ পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করতে তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগে। সুতা ও বস্ত্র কারখানাগুলো একটি নির্দিষ্ট দর নির্ধারণ করে ক্রয়াদেশ দেয়। যে পরিমাণ পণ্যের ক্রয়াদেশ, আর তার জন্য যে দর দেয়- তা বৃদ্ধির কোনো সুযোগ থাকে না।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই নির্ধারিত দরেই পণ্যটি সরবরাহ করতে আমরা বাধ্য থাকি। অথচ এই সময়ের মধ্যে যদি কাঁচামালের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি করা হয় তবে, সেই বর্ধিত দরে কাঁচামাল খরিদ করে পণ্য উৎপাদন করতে আমাদের বিপুল অংকের লোকসানে পড়তে হয়।

বক্তারা বলেন, ধারাবাহিকভাবে এই লোকসান গুণতে গিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকে থাকাই দুঃস্কর হয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পেপার কোন্ ও পেপার টিউব উৎপাদন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়ে বক্তারা বলেন, পেপার কোন্ এবং পেপার টিউব উৎপাদন কারখানা এবং বোর্ড ও কাগজ উৎপাদন কারখানাগুলো একে অপরের পরিপূরক। উভয়কেই টিকিয়ে রাখতে হবে। এবং তা সম্ভব, কেবল পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সহমর্মিতার মাধ্যমে। অন্যথায় এক পর্যায়ে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাদেরও বিপাকে পড়তে হবে। তাদের কারখানাগুলোও একসময় বন্ধ হয়ে যাবে।

মন্তব্য

Beta version