-->

‘ঢাকায় সহনীয় মাত্রার প্রায় দ্বিগুণ শব্দদূষণ হয়’

ঢাবি প্রতিনিধি
‘ঢাকায় সহনীয় মাত্রার প্রায় দ্বিগুণ শব্দদূষণ হয়’
আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে শাহবাগ চত্বরে মানববন্ধন

রাজধানী ঢাকায় দৈনিক সহনীয় মাত্রা থেকে প্রায় দ্বিগুণ শব্দদূষণ হয়ে থাকে। এ ধারা চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরে ঢাকার মানুষের শ্রবণ শক্তি ধীরে-ধীরে হ্রাস পেতে থাকবে জানিয়ে মানববন্ধন করেছে পরিবেশবাদী ৮টি সংগঠন।

বুধবার (২৭এপ্রিল) আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে সকাল ১১ টায় শাহবাগ চত্বরে মানববন্ধন করে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবাও), রায়েরবাজার হাই স্কুল, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, লাইফ সার্ভ বাংলাদেশ, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং।

এ সময় তারা গাড়িচালকদের মধ্যে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা রোধে লিফলেট ও ফুল বিলি করেন।

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী নীরব এলাকায় শব্দের সহনীয় মান দিনে ৫০ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকায় যথাক্রমে ৫৫ ও ৪৫, মিশ্র এলাকায় ৬০ ও ৫৫, বাণিজ্যিক এলাকায় ৭০ ও ৬০ এবং শিল্প এলাকায় ৭৫ ডেসিবেল হলেও রাজধানী ঢাকায় এলাকাভেদে ৭০ থেকে ৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত দৈনিক শব্দদূষণ হয়ে থাকে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ এর একাধিক গবেষণা অনুযায়ী, ৩০টি বড় রোগের কারণ ১২ রকমের পরিবেশ দূষণ। শব্দদূষণ তার মধ্যে অন্যতম। শব্দদূষণ বর্তমানে ঢাকাসহ সারা দেশের শহরগুলোতে অন্যতম প্রধান পরিবেশগত সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে পিক আওয়ারগুলোতে যেমন সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ পর্যন্ত শব্দদূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে। শাহবাগ, নীলক্ষেত মোড়, গাবতলী, মহাখালীর মতো ব্যস্ত সড়কগুলোতে শব্দদূষণের মাত্রা বেশি।

ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং এর পলিসি অফিসার আ ন ম মাসুম বিল্লাহ ভুঁইয়া বলেন, ঢাকা শহরে শব্দদূষণের একটি অন্যতম কারণ হলো গাড়ির হর্ন। গবেষণায় দেখা গেছে-শহরের প্রায় সকল স্থানে গাড়ির অতিরিক্ত ও অযথা হর্নের কারণে মানমাত্রার থেকে তিনগুণ শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে। বিশেষত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালের সামনে এ ধরণের উচ্চ শব্দ মারাত্মক ক্ষতিকর। অযথা হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকার জন্য গাড়িচালকদের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে গাড়িচালকদের করণীয় নিয়ে তারা কিছু পরামর্শ দেন : যানজটে অযথা হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর সামনে হর্ন না বাজানোর অভ্যাস করা, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ মেনে চলা, গাড়িতে নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার না করা, নো-হর্ন সাইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, যত্রতত্র গাড়ি রাস্তায় পার্কিং করা থেকে বিরত থাকা।

শব্দ দূষণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে আমেরিকার সেন্টার ফর হিয়ারিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন (সিএইচসি) কর্তৃক ১৯৯৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত হয়। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মহাদেশের দেশগুলো দিবসটি পালন করে আসছে। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের চতুর্থ সপ্তাহের বুধবার এ দিবসটি পালিত হয়। এ বছর আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবসের প্রতিপাদ্য 'Protect Your Hearing Protect Your Health.

মন্তব্য

Beta version