বাংলাদেশে পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস অধিকারের প্রচার এবং এসডিজি অর্জনের জন্য পরিবেশগত শাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পরিবেশ বিদরা।
তাদের মতে কি পরিমাণ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এজন্য প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে।
সকল আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা। সে অনুযায়ী দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরিবেশ নষ্টের ফলে ভবিষ্যতে যে ক্ষতি হবে সেজন্য অবশ্যই ভয় থাকতে হবে। তখনি আইন স্বার্থক হবে।
আর তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে পরিবেশ রক্ষায় কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন আলোচকরা।
শনিবার (২১ মে) রাজধানী ঢাকার সিরডাপের চামেরী হাউজে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত 'বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আইনের ভূমিকা এবং পরিবেশগত সুশাসন' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাপা'র অর্থ, বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার, আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ড. সাইদা নাসরিন, বাপা'র নির্বাহী সদস্য অর্থ বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এমএস সিদ্দিকী,
এ ছাড়া হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা প্রমূখ।
পরিবেশগত আইনের শাসন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের উপর নির্মিত: শক্তিশালী আইনি কাঠামো; কার্যকর রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, এবং বিচারিক প্রতিষ্ঠান, তথ্য এবং ন্যায়বিচারের অ্যাক্সেস প্রয়োজন।
বাংলাদেশের জন্য আইনের শাসন গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন আলোচকেরা।
পরিবেশ রক্ষায় আইনের সংশোধনের বিষয়ে ওয়ার্ল্ডইকোনমিক ফোরাম ও বায়োডাইভারসিটিজ কমিশন এর কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় কোন কোন আইন সংশোধন করার প্রয়োজন এটা আগে ঠিক করতে হবে।
আইন যতো হবে দুর্নীতি তত বেশি হবে। কারণ যারা দুর্নীতি করে তারা আইনের ফাঁকফোকর বের করেই দুর্নীতি করে।
তিনি বলেন, কে কতটুকু পরিবেশ নষ্ট করছে এজন্য প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে।
এ সকল আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা। সে অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্রজেক্ট ইতোমধ্যে প্রপোজ করে ফেলেছে।
পরিবেশ রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশ সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড ডেভলপমেন্টের পরিচালক ড. সালিমুল হক বলেন, এই পরিবেশ নষ্টের জন্য কোন ক্ষতি পূরণ করা হয় না।
বড় বড় দেশে যার কারণে পরিবেশ ক্ষতি হচ্ছে তাদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের আলোচনা হচ্ছে।
পরিবেশ রক্ষায় অনেক অর্থের প্রয়োজন। তবে তরুণ প্রজন্মকে দিয়ে পরিবেশ রক্ষায় অনেক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করা যায়।
এই তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে পরিবেশ রক্ষায় কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে আমাদের পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে।
পরিবেশগত সুশাসনের ক্ষেত্রে আইনের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ড. সাইদা নাসরিন বলেছেন, পরিবেশ নষ্ট হলে যে আমাদের ভবিষ্যতে ক্ষতি হবে সে বিষয়ে আমাদের এক ধরনের ভয় থাকা প্রয়োজন।
এই ভয় যদি কাজ না করে তাহলে আইন প্রয়োগ করে লাভ হবে না। পরিবেশ নষ্টের ফলে ভবিষ্যতে যে ক্ষতি হবে সেজন্য অবশ্যই ভয় থাকতে হবে। তাহলেই আইন স্বার্থক হবে।
চামড়া শিল্প প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে যে পরিবেশের ভাল হবে না এ বিষয়ে ড. সাইদা নাসরিন বলেন, হাজারিবাগ থেকে যে টেনারিগুলো সরিয়ে সাভারে নেয়া হয়েছে তাতে কি পরিবেশের কোনো লাভ হয়েছে?
বরং এখন সাভারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমাদের দেশের চামড়া শিল্প হাজার কোটি টাকার শিল্প। কিন্তু এটাকে একটা সিস্টেমে আনতে পারিনি।
এগুলোকে প্রতিস্থাপন না করে এর থেকে কিভাবে দূষণ কমানো যায় তার কথা চিন্তা করতে হবে।
মন্তব্য