-->
শিরোনাম

দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট যত্রতত্র পোস্টার বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করবে: আতিকুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট যত্রতত্র পোস্টার বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করবে: আতিকুল

ফ্লাইওভারের পিলারে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট যত্রতত্র পোস্টার বন্ধে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।

 

সোমবার (১০ এপ্রিল ২০২৩) দুপুরে মগবাজার চৌরাস্তা ফ্লাইওভারের পিলারে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট কার্যক্রমের (Graffiti Art Work) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

 

অনুষ্ঠানে শুরুতে মেয়র আতিকুল ইসলাম চিত্র শিল্পীদের অনুপ্রেরণা দিতে নিজেই রঙ তুলির আচরে গ্রাফিতি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

 

উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'এই দেশটা আমাদের, এই শহরটা আমাদের। এই দেশ, এই শহর বাহিরের কারো নয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দেশ পেয়েছি। অথচ যত্রতত্র পোস্টার লাগিয়ে আমরা নিজেরাই এই শহরে দৃশ্য দূষণ করছি। আমরাই শব্দ দূষণ করছি, বায়ু দূষণ করছি। শহরের দূষণ বন্ধে আমাদের নিজেদের ঠিক হতে হবে, সচেতন হতে হবে। শুধু সরকার, সিটি কর্পোরেশন দায়িত্ব নিলে হবে না। সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।'

 

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'শহরের উড়াল সড়কের পিলারগুলোতে তাকালে দেখা যায় যত্রতত্র পোস্টার লাগানো, অমুক ভাই সালাম নিন, তমুক ভাই এগিয়ে চলুন, ভাই আপনি নেতা হবেন, আমরা আপনার পেছনে আছি এসব লেখা পোস্টারে ভরা। যত ধরনের তেলবাজি, পাম-পট্টি সব পোস্টারের মাধ্যমে করা হচ্ছে। নিচের দিকে লিখে রাখে সৌজন্যে অমুক। এসব সৌজন্যে অমুকদের বলতে চাই এগুলো বন্ধ করুন। অন্যথায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। জেল হবে, জরিমানা হবে।'

 

এসময় ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, 'আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে পোস্টার-ব্যানারে ভরা অসুন্দর পিলারগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চিত্রকর্মের মাধ্যমে পিলারগুলো সুন্দর করে সাজিয়ে দিচ্ছি। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর একটি শহর গড়ে তুলতে চাই। পিলারগুলোতে চিত্রকর্মের মাধ্যমে শিক্ষনীয় ম্যাসেজ দেয়া হবে। যেমন হর্ণ বাজাবেন না, পোস্টার না লাগাই, গাছ লাগাই পরিবেশ বাঁচাই, তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন, আসুন দেশকে ভালোবাসি।'

 

মেয়র বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন রিকশায় যারা পেইন্টিং কাজ করতেন তাদের যেন সম্পৃক্ত করি৷ তাই রিকশা পেইন্টিং এর সাথে সম্পৃক্ত বিখ্যাত চিত্র শিল্পীদেরএই গ্রাফিতি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। মগবাজার ফ্লাইওভারে শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে বাকি ফ্লাইওভার ও মেট্রোরেলের পিলারেও গ্রাফিতি করা হবে।'

 

জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, 'আমি এলাকাবাসীদের, কাউন্সিলরদের, মুরুব্বিদের, শিক্ষকদের, মসজিদের ইমামদের এবং সকল জনগণকে অনুরোধ করছি আপনারা এগিয়ে আসুন। সুন্দর পিলারগুলোতে পোস্টার লাগাবেন না। শহরকে রক্ষায় আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ধরনের গ্রাফিতি কার্যক্রম রয়েছে। আমরাও কিন্তু চাইলেই পারি। সবাই সচেতন হলে আমরা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে পারবো।'

 

এসময় ফ্লাইওভারের পিলারের সৌন্দর্য রক্ষায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর ঘোষণাও দেন তিনি।

 

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, 'বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধসের ঘটনা ঘটছে। পরিত্যক্ত মার্কেটগুলো বন্ধে কঠোর হওয়া ছাড়া আমাদের আর বিকল্প নেই। ডিএনসিসির আটটি পরিত্যক্ত মার্কেটে লাল রঙের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিব।

 

মালিক সমিতিকে অনুরোধ করছি আপনারা জীবনের মূল্য দিতে শিখুন। ক্রেতাদেরও অনুরোধ করছি এসব পরিত্যক্ত মার্কেট পরিহার করুন। আমরা কাওরান বাজার স্থানান্তরে কাজ শুরু করেছি। অন্যগুলোও স্থানান্তর অথবা নতুন মার্কেট নির্মাণ করে দিব। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে হবে।'

 

উল্লেখ্য, রাজধানীর মগবাজার থেকে সাতরাস্তামুখী ফ্লাইওভারের নিচের পিলারগুলোতে ব্যানার-পোস্টার তুলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাদা রঙ করা হয়েছে। ধবধবে সাদা রঙের ক্যানভাসে ফুটে উঠছে দৃষ্টি নন্দন গ্রাফিতি। তাতে শোভা পাচ্ছে দেশীয় সংষ্কৃতি এবং শিক্ষনীয় বিষয়।

 

ইতিমধ্যে দৃষ্টি নন্দন করা চারটি পিলারের একটিতে পরিবেশ সংরক্ষণের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পিলারের একপাশে এক কিশোর চারা গাছ লাগাচ্ছে, আরেক কিশোর বই নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। একটিতে লেখা রয়েছে হর্ণ বাজাবেন না, পোস্টার না লাগাই। আর দুটি পিলের একটিতে ফুল, পাখি, সূর্য এবং আরেকটিতে ফুলের নকশার সাথে নৌকা দিয়ে অবহমান বাংলার সংষ্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

 

মাত্র কাজ শুরু হলেও পিলারগুলো যে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে তা পথচারীদের আকৃষ্ট করছে। অনেকেই মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করছেন সেই দৃশ্য।

 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকতা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আ, ন, ম তরিকুল ইসলাম, ৩৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোক্তার সরদার, ৮নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মিতু আক্তার, ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর নাজমুন নাহার হেলেন ও ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version