-->
শিরোনাম

ধোলাইপাড়ে জমি দখল করে ঘর বানাচ্ছে ভূমি দস্যুর ছেলে উল্লাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
ধোলাইপাড়ে জমি দখল করে ঘর বানাচ্ছে ভূমি দস্যুর ছেলে উল্লাস

লোকটার নাম জয়নাল আবেদীন। রাজধানীর ধোলাইপাড় এলাকায় ‘ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। একজনের সঙ্গে অন্যজনের প্যাঁচ লাগিয়ে মাঝখানে তিনি হাজির হন অতঃপর তার স্বার্থ হাসিল করেন বলে অভিযোগ আছে। জানা গেছে বর্তমানে তিনি ৭০টির মতো মামলা লড়ছেন এলাকার বিভিন্ন জনের সঙ্গে। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ পরিবেশ মানবাধিকার সোসাইটি ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন করে জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলে উল্লাসের বিরুদ্ধে।

সূত্র বলছে, ধোলাইপাড় এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি এসব কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন। তিনি কদমতলী থানার ধোলাইপাড়ের একজন স্থায়ী বাসিন্দা।

প্রায় দুই যুগ আগে কদমতলী থানাধীন দনিয়া মৌজার সিএস ৪০৯, এসএ দাগনং ৪৮১, আর এস দাগ নং ১৯৫, ঢাকা সিটি জরিপের খতিয়ান নং ৯৫২৮। সিএস ও এস এ ১৯৮৩ আরএস ৩৮৬৫, ঢাকা সিটি জরিপের ১৬৫০৩নং দাগের (৭ শতাংশ) জমিটি মুরাদপুর নিবাসী মৃত আ. জাব্বার এর ছেলে আব্দুল ফজর এর কাছ থেকে ১৯৯৮ সালে ক্রয় করেন মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন যাবত দনিয়া এলাকায় নয়া পাড়াস্থ ১০৫০নং বাড়ির ফ্লাট নং বি ২ এ বসবাস করে আসছেন।

সিরাজুল জানায়, উত্তরে বেগম আলাউদ্দিন গং দক্ষিণে ফখরুদ্দিন আহমেদ, পূর্বে রাস্তা এবং পশ্চিমে হাজি মো. আতিকুজ্জামান উল্লিখিত চৌহদ্দির জমিটি কেনার পর আমি নিজের নামে নামজারি করে ভোগ দখল করে আসছিলাম। কিন্তু ২০১৭ সালে হঠাৎ এই জমি নিয়ে ঝামেলা করতে আসে, দখল নিতে চাইলে আমি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় রক্ষা করতে সমর্থ হই। কিন্তু বর্তমানে তারা অর্থাৎ জয়নাল আবেদীনের ছেলে আলী আকবর উল্লাস দলবল নিয়ে দখলে রেখেছে এবং আমার ক্রয়কৃত জমিতে ঘর তুলে ভাড়া দিচ্ছে। আইনগতভাবে আমি মালিক এবং দখলে থাকার পরেও এলাকায় পুলিশের সোর্স খ্যাত উল্লাস কিছু দুষ্কৃতিকারীকে সঙ্গে নিয়ে আমার জমি দখল করে বিক্রি করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।

আদালতে জয়নাল আবেদীন এর মালিকানা দাবি অবৈধ অযুক্তিক প্রমাণিত হওয়ার পরও অযাচিতভাবে জমির মালিকানা দাবি করছে। জমিতে ভাঙচুর ও সংস্কারও করছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, এই জমিটির মালিক ছিলেন আবদুল ফজর। তিনি ১৯৯৮ সালে মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু এলাকার প্রভাব দেখিয়ে উল্লাস এবং তার বাহিনি সিরাজুল ইসলামকে তার ক্রয় সূত্রে মালিকানাধীন জমি থেকে বেদখল করতে মরিয়া হয়েছে।

এই জমিটা কিনতে গিয়ে জীবনের প্রথম ধাক্কা খেলাম বলেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি ন্যয্য মালিক হওয়া সত্ত্বেও অযাচিতভাবে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে। প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে ভাঙচুর শুরু করেছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দিন-রাত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে উল্লাস ও তার বাহিনী। আর এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা জয়নাল আবেদীন। অথচ তিনি এই বাড়ির কেউ না।

ধোলাই পাড়ের দুই বাসিন্দা এবং একজন বাড়িওয়ালা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, জয়নাল আবেদীন এবং তার ছেলে উল্লাসসহ এলাকার স্থানীয় কিছু সুবিধাবাদী মিলে জমির ফাঁক-ফোকর খোঁজে বেড়ান। এটাই এদের পেশা-নেশা। এলাকায় কে অসহায় আছেন তাদের খোঁজে বের করে এরকম জটিলতা সৃষ্টি করেন। জয়নাল আবেদীন শুধু একই এরকম কর্মকাণ্ডে যুক্ত নন তার ছেলে উল্লাসও বর্তমানে এসব কাজে জড়িত হয়ে বিভিন্ন দখলবাজীর সঙ্গে সম্পৃক্ত। সিরাজুল ইসলাম জানায় সে ছাড়াও যাদের জমি নিয়ে জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে বিবাদ চলছে তাদের মধ্যে মমতাজ বেগম, নুফিজা বেগম, কোহিনূর আক্তার, আছিয়া খাতুন, ময়জুল বিবি, ফিরোজ আলম ও ইকবাল হোসেন অন্যতম।

সিরাজুল আরও জানায়, বিষয়টি নিয়ে গত ০৪.০১.২০২৩ তারিখে কদমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে যার নম্বর ২১৬। এছাড়া উপ-পুলিশ কমিশনার ওয়ারি বরাবরে গত ০৩.০৭.২০২৪ তারিখে একটি দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version