-->
শিরোনাম

গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ-বিক্ষোভ থামছেই না

শফিকুল ইসলাম
গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ-বিক্ষোভ থামছেই না

গাজীপুরে কয়েকটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। বেতন-ভাতা দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন। তারা ভাঙচুরও চালাচ্ছেন। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার প্যারামাউন্ড টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল শনিবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। বেলা দুইটা থেকে শ্রমিকরা ওই সড়কের গিলারচালা এলাকায় অবরোধ করে রাখে। এতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আটকাপড়ে শত শত গাড়ি। এতে দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। শিল্প পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিকেল পাঁচটায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শ্রমিকরা জানান, আমাদের অনেকের বকেয়া বেতন পাওনা রয়েছে। ঈদের সময় ছুটি দেয় তিন দিন। ঈদুল আজহার বোনাস, বাৎসরিক লভ্যাংশের অংশ বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে রিজাইন পত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ছাঁটাই করছে। এছাড়া ঈদে মাত্র তিন দিনের ছুটি দেয়, বাৎসরিক লভ্যাংশের যে টাকা দেয় সেটা তুলনামুলক কম। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার কারখানা কর্তৃপক্ষের আলোচনা করেও তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি।

কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলোর প্রতি কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা ওই কারখানার প্রায় চার হাজার শ্রমিক দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে বাধ্য হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমেছি। ঘটনার পরপরই শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছেন। তবে এবিষয়ে তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি শিল্প পুলিশ। বিকেল পাঁচটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. মাইনুদ্দিন বলেন, আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সৃষ্ট সমস্যান সমাধান করা হবে।

অন্যত্র বিক্ষোভ : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শ্রমিকদের তিন মাস ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন দাবিতে মাহমুদ জিনস লিমিটেড পোশাক কারখানায় কর্মরতরা বিক্ষোভ করেছেন। গত শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে তারা বিক্ষোভ করেন। পরে উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় মহাসড় অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। এতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। পরে সকাল ৯টার দিকে তারা বেতন চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। কারখানার শ্রমিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিন মাস যাবৎ তাদের বেতন দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। সুপারভাইজার, ইনচার্জসহ উপরের অন্যান্য স্টাফদের পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বুধবার বিকেলে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। ওই সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়; কিন্তু বৃহস্পতিবার বেতন দেয়নি। ওইদিন রাতেই শ্রমিকরা বেতন দাবিতে কারখানার সমানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে ওই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version