-->
শিরোনাম

চাকরি হয় এক জহিরুলের, করছেন আরেক জহিরুল

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
চাকরি হয় এক জহিরুলের, করছেন আরেক জহিরুল
জহিরুল ইসলাম এশু। ছবি- ভোরের আকাশ

জহিরুল ইসলাম এশু ২০০৩ সালে কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়। কিন্তু পরে আর নিয়োগপত্র পাননি। তাই চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন এশু। ১৮ বছর পর জানতে পারেন তার নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ওই পদে চাকরি করছেন আরেকজন!

জহিরুল ইসলাম এশু চাকরি ফিরে পাওয়ার ও তার নাম-পরিচয় ব্যবহারকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক মো. কামাল হোসেন বরাবর আবেদন করেছেন। ঘটনা তদন্তে তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার নুরুল ইসলামের মেজো ছেলে জহিরুল ইসলাম এশু। তার নাম-পরিচয়ে কারারক্ষী পদে চাকরি করছেন কুমিল্লার জহিরুল ইসলাম।

জানা গেছে, জহিরুল ইসলাম এশু ২০০৩ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে কারারক্ষী পদে চাকরির আবেদন করেন। পরে সিলেট গিয়ে শারীরিক ফিটনেস, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন, উত্তীর্ণও হন। তার বিষয়ে কুলাউড়া থানা অধিকতর তদন্তও করে। তবে শেষ পর্যন্ত নিয়োগপত্র তার কাছে পৌঁছায়নি।

গত ৮ ডিসেম্বর সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক কার্যালয় থেকে ঠিকানা ও পরিচয় যাচাইয়ের জন্য কুলাউড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম খাঁন খছরুর কাছে একটি চিঠি আসে। কারারক্ষী ক্রমিক নম্বর ২২০১৪ নম্বর মূলে ‘জহিরুল ইসলাম এশু’ চাকরি করেন মর্মে চিঠিটি আসে। বিষয়টি তাকে জানান কাউন্সিলর। পরে কারারক্ষী পদে তার নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে অন্য কেউ চাকরি করছেন জানিয়ে ২৬ ডিসেম্বর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন জহিরুল ইসলাম এশু।

কাউন্সিলর খছরু চিঠির জবাবে গত ২৭ ডিসেম্বর সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক কামাল বরাবর চিঠি পাঠান। এতে তিনি জানান, জহিরুল ইসলাম এশু একজন ব্যবসায়ী, কারারক্ষীর চাকরি করেন না। বর্তমানে ২২০১৪ নম্বর কারারক্ষী পদে যিনি চাকরি করছেন তিনি তার ওয়ার্ডের জয়পাশা এলাকার বাসিন্দা নন। চিঠিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান কাউন্সিলর।

জহিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন্দ্রীয় কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কারাগারের জেল সুপার ইকবাল হোসেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান সিলেট কারা উপমহাপরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) কামাল বলেন, ‘বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে কর্মরত জহিরুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি কুমিল্লায়।’ কুলাউড়ার ঠিকানা ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিলেট ডিআইজি প্রিজনকে আমার সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখবেন।’

ভুক্তভোগী জহিরুল ইসলাম এশু বলেন, ‘সরকারি চাকরি করার অনেক আশা নিয়ে কারারক্ষী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম।

‘কিন্তু রহস্যজনক কারণে আমার যোগদানপত্র না আসায় আমি চাকরিতে যোগদান করতে পারিনি। পৌরসভা থেকে চিঠি আসার পর বিষয়টি জানতে পারি। আমি আমার সেই চাকরি ফেরত চাই।’

মন্তব্য

Beta version