নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় চারটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় এখনও নিখোঁজ আছেন ছয় জন।
নদীর ধর্মগঞ্জ এলাকা থেকে রোববার (৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন নৌ-পুলিশের পরিদর্শক মো. মোর্শেদ। কিছু পরেই পাওয়া যায় আরও দুটি।
তিনি বলেন, ‘যেখানে ট্রলার ডুবেছে, সেখান থেকে কিছুটা দূরে দুটি মরদেহ ভেসে উঠতে দেখে আমাদের খবর দেয় স্থানীয় লোকজন। আমরা গিয়ে উদ্ধার করি। একই পরিবারের যে চারজন নিখোঁজ ছিলেন, এর মধ্যে জেসমিন ও তার মেয়ে তাসনিমের মরদেহ ওই দুটি।’
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস জানান, প্রায় একই সময়ে বক্তাবলী এলাকায় আরও দুটি মরদেহ ভেসে উঠেছে। এর মধ্যে একটি কলেজছাত্র সাব্বির হোসেনের ও আরেকটি পোশাকশ্রমিক জোসনা বেগমের।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে।
ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে গত ৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে ১০ জন নিখোঁজ হন। অন্তত ৩০ যাত্রী বহনকারী ট্রলারটি এমভি ফারহান-৬ নামের লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় নদীতে। বেশির ভাগ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ওই ১০ জনকে পাওয়া যায়নি।
সেদিন থেকেই তাদের খোঁজ পেতে ধলেশ্বরীর তীরে অপেক্ষায় আছেন স্বজনরা। অবশেষে মিলল চারজনের মরদেহ। এখনও নিখোঁজ আছেন মৃত তাসনিমের স্কুলপড়ুয়া ছেলে ও দেড় বছরের মেয়ে, বক্তাবলীর উত্তর গোপালনগর এলাকার মোতালেব মিয়া, চর বক্তাবলীর আওলাদ হোসেন, একই এলাকার মো. আব্দুল্লাহ ও মো. শামসুদ্দিন।
ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এরই মধ্যে এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসান, চালক জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া ও সুকানি জসিম মোল্লাকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা করেছেন বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (নৌ নিরাপত্তা বিভাগ) বাবু লাল বৈদ্য। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জব্দ করা হয়েছে লঞ্চটিও।
ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে কুয়াশার মধ্যে বেপরোয়া গতিতে লঞ্চটি চলছিল। এ কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মন্তব্য