নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের প্রচারণায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী তার দলের সংসদ সংসদ্য শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘আমি উনাকে (শামীম ওসমান) গডফাদার উপাধি দিইনি। এটা উনার বিগত ৩০ বছরের উপাধি। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, তাকে সারা বাংলাদেশ জানে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বৃহত্তর দল। এখানে সকলেরই স্থান আছে। এ দলে জনপ্রিয় মানুষের যেমন স্থান আছে তেমনি বিতর্কিত মানুষেরও স্থান আছে। উনি আমার দলের লোক, সমর্থন দিলে দিবে, না দিলে না দিবে। জনতাই আমার ক্ষমতা। আমাকে উনি অপছন্দ করতেই পারেন। আমি আমার বড় ভাইকে সম্মান রেখে বহুবার বলেছি, উনি যদি উনার দায়িত্ব পালন না করেন সেখানে আমার কিছু করার নাই। তারা ষড়যন্ত্র করবে কিন্তু তাদের ধ্বংস করে দিবে জনগণ।’
রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে বন্দর খেয়াঘাট এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় আইভী বলেন, ‘উনার (তৈমূর আলম) চারপাশে এখনো বিএনপির লোকজন আছে। এখন আবার জাতীয় পার্টি যুক্ত হয়েছে। আবার আমাদের নারায়ণগঞ্জের কথিত গডফাদার শামীম ওসমানের লোকজনও যুক্ত হয়েছে। সম্ভবত উনি বিএনপির প্রার্থী নন, আমার মনে হয় উনি সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের প্রার্থী।’আইভী বলেন, ‘আমি কখনোই বহিরাগত দিয়ে কিছু করাই না। এই স্বভাব আমার রক্তেই নাই। আমার সাথে যারা থাকে তারা প্রতিদিন নিজের পয়সা খরচ করে, নিজের খেয়ে কাজ করছে। তাদের প্রত্যেকের সাথেই আমার আত্মিক সম্পর্ক। এই শহরের মানুষের সাথে আমার হৃদয়ের সম্পর্ক।’
তৈমূর আলম কখনো এই শহরবাসীর কাছে আনে নাই জানিয়ে আইভী বলেন, তৈমূর আলম একটা রাজনীতি করেছেন কিন্তু তৃণমূলে গিয়ে কখনোই মিশেন নাই। আমাকে আল্লাহ্ একটা সুযোগ করে দিয়েছিল, আমি তিন-তিনবারের মেয়র। দরজা থেকে দরজা পর্যন্ত মানুষের সম্পর্কে জানা আছে। নির্বাচনের সময় অভিযোগ করতে হয় বলে তৈমূল আলম অভিযোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নাই। আমার জনসমর্থন কতটুকু এটা তৈমূর আলম নিজে জানেন। উনি ব্যক্তিগতভাবে আমার বাবা (আলি আহম্মদ চুনকা) জনপ্রিয়তা ও তার জনসমর্থন সম্পর্কে জানেন। বিগত ১৮ বছর ধরে আমার যে জনপ্রিয়তা সেটার সম্পর্কেও তিনি জানেন। এখন উনি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন বলে এ সকল মিথ্যা কথাগুলো বলছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, পুলিশ কী করছে তা আমি জানি না। আমি দিনভর সাধারণ মানুষের সাথে থাকি। তাদের কাছে ভোট ভিক্ষা চাচ্ছি। যারা খারপ তাদের কোনো দল নাই। যারা মাদক ব্যবসায়ী, যারা চাঁদাবাজি-ছিনতাই করে তাদেরকে তো পুলিশ ধরবেই।
তিনি বলেন, সবাই জনগণ হতে চায়, জনগণের প্রার্থী হতে চায়। ২০১১ তে আইভীও ছিল জনতার প্রার্থী, এখনও আইভী সেই অবস্থানে আছে। দল, জনতা সবকিছুই মিলিয়ে আইভীই জনতার প্রার্থী। আমি জানি না উনি (তৈমূর) জনতার প্রার্থী কি না। উনার চারপাশে যারা আছেন তারা সকলেই আমাদের শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের লোকজন। সুতরাং তৈমূর আলম দাবি করতে পারেন না উনি জনতার প্রাথী। উনি প্রকৃত অর্থে ওসমান ভাতৃদ্বয়ের প্রার্থী। উনার কর্মকাণ্ড ও গতিবিধি সবকিছুতেই প্রমান করছে পিছনে কলকাঠি কে নাড়ছে। জাতীয় পর্টির চারজন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উনার জন্য প্রচার করেছে। এরপরও কি উনি বলবেন উনি কারো প্রার্থীনা না, কোনো পরিবারের প্রার্থী না। তৈমূর আলম তাদের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছেন।
মন্তব্য