-->
শিরোনাম

নেত্রকোনায় বাড়ছে ক্ষতিকর তামাক চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক


নেত্রকোনায় বাড়ছে ক্ষতিকর তামাক চাষ
তামাক চাষ

সরকার তামাক ও তামাতজাত দ্রব্য উৎপাদন এবং বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও নেত্রকোনার বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ছে এই ক্ষতিকর দ্রব্যের চাষাবাদ। জমিতে অন্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে আশানুরূপ মূল্য পাওয়ায় তামাক উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ।

তামাক চাষে আগ্রহী কৃষকরা অনেকেই জানেন না এর কুফল ও ক্ষতিকর প্রভাবের কথা। এছাড়া তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। এ অবস্থায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই ক্ষতিকর তামাক চাষ করে যাচ্ছেন নেত্রকোনার কৃষকরা।

তবে নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ক্ষতিকর তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে নানাভাবে কাজ করছেন তারা।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ও চিরাং ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা তাদের ফসলি জমিতে তামাক চাষ করেছেন। এর মধ্যে পাইকুড়া ইউনিয়নের মজলিপুর, উত্তরাটি, চিটুয়া, নওপাড়া, বৈরাটি এবং চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর, দুল্লী ও পূর্বরায় গ্রামসহ অন্তত ১০টি গ্রামের ফসলি জমিতে ব্যাপক তামাকের চাষ করা হয়েছে। তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে এ বছর জেলায় মাত্র ১৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করেছেন কৃষকরা। কিন্তু সরকারি হিসাবের দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে তামাক চাষ হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

দুল্লী গ্রামের কৃষক তাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকেই তামাক চাষ হচ্ছে। তামাক চাষে আমাদের কোনো ক্ষতি হয় না। এছাড়া কৃষি অফিসের লোকজনও তামাক চাষ করতে আমাদের নিষেধ করছে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত বছর আমি ১০০ শতাংশ জমিতে তামাক চাষ করেছিলাম। তবে এ বছর আরো একটু বেশি জমিতে তামাকের চাষ করেছি। এতে খরচ খুবই কম। বাজারেও তামাক পাতার চাহিদা ভালো। অন্য ফসলের চেয়ে তামাক চাষে লাভ বেশি। তাই তামাক চাষ করি।’

এ ব্যাপারে কথা হলে নেত্রকোনা জেলা সদরের বাসিন্দা এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রুহুল আম্বিয়া পলাশ জানান, তামাক চাষ অবশ্যই ক্ষতিকর। যে এলাকায় তামাকের চাষ হয় সে এলাকার শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে। তাই তামাক চাষ বন্ধ করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এফ এম মোবারক আলী বলেন, ‘তামাক চাষ খুবই ক্ষতিকর। এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা রকম রোগেরও কারণ। তামাক চাষে নেত্রকোনার কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কিছু এলাকায় তামাকের চাষ হয় বলে শুনেছি। তামাক চাষ বন্ধে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

মন্তব্য

Beta version