দক্ষিণবঙ্গের উল্লেখযোগ্য সরকারি হাসপাতালের তালিকায় প্রথমে রয়েছে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রথমে থাকা এ হাসপাতালের টয়লেটগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। এ হাসপাতালে রোগীদের ওয়ার্ড ও টয়লেট অপরিষ্কার নিয়ে অভিযোগ রয়েছে অনেক। হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেট পরিদর্শন করলে দেখা যায়, কোনোটিতে নেই দরজা, আবার কোনোটি পানি জমে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। আর অধিকাংশ টয়লেট পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
এ সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেছেন, টয়লেট পরিষ্কারের কথা বললে নার্সরা কর্ণপাত করেন না এবং আয়ারা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘ক্লিনারদের অধিকাংশই নিজের কাজ না করে প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালি করে। হাসপাতালের বাইরের পরিবেশ যতটা সুন্দর ভেতরের পরিবেশ ঠিক ততটা অপরিষ্কার। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি নেই।’
এদিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের জনবল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম থাকায় এ সমস্যা হয়েছে, আমরা খুব শিগগির এগুলো পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ৫০০ বেড হাসপাতালে মাত্র ৯৪ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে, যা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়।’ তাছাড়া পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় সঠিক চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
হাসপাতালটির আরএমও ডা. মো. আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ৭০ জন ক্লিনার ৭ মাস ধরে সরকারি বেতন পাচ্ছে না। বিধায় তাদের কাজের বিষয়ে বাধ্য করতে পারি না।’ তবে কেন তারা (ক্লিনার) সরকারি বেতন পাচ্ছে না, তার সঠিক জবান তিনি দিতে পারেননি। আলোচিত এ হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির (চিকিৎসক) মঞ্জুরিকৃত পদ ১৮৬টি, যেখানে শূন্য পদ রয়েছে ১০৬টি, দ্বিতীয় শ্রণির মঞ্জুরিকৃত পদ ৪২৫টি যেখানে শূন্য পদ তিনটি, তৃতীয় শ্রেণির মঞ্জুরিকৃত পদ ৬৪টি যেখানে শূন্য পদ ৩১টি, চতুর্থ শ্রেণির (আয়া, ক্লিনার) মঞ্জুরিকৃত পদ ১২৩টি যেখানে শূন্য পদ ২৯টি। তবে ট্রমা সেন্টারে কোনো চিকিৎসক সংকট না থাকলেও চতুর্থ শ্রেণির মঞ্জুরিকৃত পদ আটটি যেখানে আটটি পদই শূন্য।
গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেক হাসপাতালের নিকটবর্তী দুটি প্রাইভেট হাসপাতাল আল-মদিনা ও আরামবাগ হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করেছে ফরিদপুর সিভিল সার্জন। সেখানে আয়া, নার্স ও অদক্ষ চিকিৎসকের মাধ্যমে সিজার করে নবজাতকে মাথা কাটা ও হাত ভাঙার ঘটনা ঘটে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে মানুষ সরকারি হাসপাতালমুখী হয়েছে। তবে সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা দেখে হতাশ রোগীর স্বজনরা।
মন্তব্য