-->
শিরোনাম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক

‘জেব্রাগুলোকে মারা হয়েছে, মরেছিল বাঘও’

গাজীপুর প্রতিনিধি
‘জেব্রাগুলোকে মারা হয়েছে, মরেছিল বাঘও’
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ

গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ১১টি জেব্রা মারা যায়নি, এগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ। এমনকি চলতি মাসে পার্কে একটি বাঘও মারা যাওয়ার বিষয়টি পার্ক কর্তৃপক্ষ গোপন রেখেছিল বলে দাবি করেন তিনি।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে সাফারি পার্ক পরিদর্শনে এসে তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন দাবি করেন।

ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, ‘১১টি জেব্রা ও একটি বাঘ মৃত্যুর ঘটনায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রয়েছে। পার্কে দায়িত্বশীল কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় একে অপরকে ফাঁসাতে জেব্রাগুলোকে হত্যা করা হয়েছে।’

এমপি আরো বলেন, ‘জেব্রাগুলো মারা যায়নি, এগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে। চলতি মাসে সাফারি পার্কে একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে যা গোপন রাখা হয়েছে। এটা কেউ জানে না। এত মূল্যবান প্রাণী মারা যাচ্ছে অথচ পার্ক কর্তৃপক্ষ তা গোপন করছে। পার্কের হাতিদের জন্য বরাদ্দ খাবার সীমানা প্রাচীরের ভেতর থেকে পাচার হয়ে যায়।’ অবহেলাকরীদের দায়িত্বে রেখে তদন্ত কাজ সঠিক হবে না বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়া রোববার জেব্রার মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি সাফারি পার্ক পরিদর্শন করেন। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি দুপুরে পার্কে প্রবেশ করে তদন্ত কাজ শুরু করেন।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, ‘জেব্রার মৃত্যুরোধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বাইরের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করেছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। সেখানে মৃত জেব্রাগুলোর নমুনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার খামার মালিকের সাথে কথা বলেছেন তারা।

‘রোগের বিস্তারিত লক্ষণ, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল ইমেইলের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তদন্ত কমিটি কাজ করছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত মিলিয়েই রিপোর্ট পেশ করা হবে। তবে এ বিষয়ে এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল কবির বলেন, ‘হঠাৎ অসুস্থ হয়ে চলতি মাসেই একটি বাঘ মারা যায়। পরে ধারাবাহিকভাবে মারা যায় জেব্রাগুলো। জেব্রার মৃত্যুপ্রতিরোধে জরুরী চিকিৎসা এবং এ ধরনের অসুস্থতার কারণ উদঘাটনে ইতোপূর্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ২৫ ও ২৯ জানুয়ারি সাফারি পার্কে সভায় মিলিত হয়। ২৫ জানুয়ারি বিশেষজ্ঞ টিমের প্রদত্ত ১০ দফা সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। এখানে কারো কোনো অবহেলা বা গাফিলতি নেই।’

এই সাফারি পার্কে ৩১টি জেব্রা ছিল। ১১টি জেব্রা মৃত্যুর পর এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০টিতে। এর আগে অল্প সময়ে এ পার্কে এতোগুলো প্রাণী আর কখনো মারা যায়নি।

 

মন্তব্য

Beta version