-->
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধুর বই পড়ার শর্তে মুক্তি

রাজশাহী ব্যুরো
বঙ্গবন্ধুর বই পড়ার শর্তে মুক্তি
প্রবেশনে মুক্তি পাওয়া দুই মাদ্রাসা শিক্ষক

১০ টাকার পাউরুটি কেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন এবং সেই ভিডিও লাইভের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় দুই মাদ্রাসাশিক্ষককে প্রবেশন আইনে সাজা দিয়ে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার বাকি ৯ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বৈরতলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুস সালাম ও একই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক গোলাম কবির।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বলেন, ‘এ মামলায় সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুই আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/৩১ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তাদের সামাজিক ও পারিপার্শিক অবস্থা আদালত বিবেচনায় এনে শাস্তির পরিবর্তে শর্তের ভিত্তিতে প্রবেশন মঞ্জুর করে মুক্তি দেন। এছাড়াও মামলার অপর ৯ আসামির দোষ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।’

ইসমত আরা বলেন, ‘প্রবেশনকালীন আসামিরা এক বছরের জন্য আদালত নিয়োগকৃত একজন প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকবেন। এই সময়কালে তারা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন এই তিনটি বই পড়বেন।

সেই সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর জাহানার ইমামের লেখা একাত্তরের দিনগুলি ও রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা একাত্তরের চিঠি এই দুটি বইসহ পাঁচটি বই পড়বেন এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জানাবেন। প্রবেশনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিদের ১০টি বনজ ও ১০টি ফলদ গাছ রোপণের নির্দেশ দেন আদালত।

অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম আরো বলেন, ‘সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম প্রবেশন। আসামিরা আপাতত দৃষ্টিতে মুক্তি পেলেও আগামী এক বছর আদালতের নজরদারিতে থাকবেন।

‘আদালতের শর্তভঙ্গ করলে ও আচরণ সন্তোষজনক না হলে তাদের প্রবেশন আদেশ বাতিল হবে এবং শাস্তি হিসেবে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/৩১ ধারার প্রত্যেক অপরাধের জন্য এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৩০ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করবেন।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শারমীন কানিজ বলেন, ‘ফৌজদারি মামলার বাইরে প্রবেশনের বিধান একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ। আমি আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। আশা করি, প্রবেশনপ্রাপ্ত আমার দুজন মক্কেল আদালতের শর্ত সঠিকভাবে পালন করে মামলা থেকে মুক্তি পাবেন।’

গত বছরের ১৭ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বৈরতলা দাখিল মাদ্রাসায় ১০ টাকা দামের পাউরুটি কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করা হয়। এ নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতির শঙ্কায় জনস্বার্থে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী ইউনুস আলী মাদ্রাসা সুপারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

পুলিশ মামলার তদন্ত করে একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

মন্তব্য

Beta version