হবিগঞ্জে ৪৩টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধভাবে চালানো হচ্ছে। আইন অমান্য করে দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানগুলো চলতে থাকলেও এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের মাথাব্যথা নেই। এসব কারণে এলাকায় বাড়ছে ভুল চিকিৎসা। এ অবস্থায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জে ১৩১টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে শুধু ৮৮টি চিকিৎসা কেন্দ্রের লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ৪৩টির নেই বৈধ কাগজপত্র। এরমধ্যে হবিগঞ্জ সদরেই রয়েছে ৫৪টি প্রতিষ্ঠান, বাকি ৮ উপজেলায় রয়েছে ৭৭টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
এসব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর সিংহভাগই দালাল নির্ভরশীল। দালালরা গ্রাম থেকে আসা রোগীদের তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে নিয়ে চিকিৎসার নামে আদায় করে অতিরিক্ত টাকা। সূত্রে আরো জানা যায়, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের মেয়াদ তিন-চার বছর আগেই শেষ হয়েছে, কেউ তা নবায়ন পর্যন্ত করেনি। তবুও সেসব হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে প্রকাশ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো নিবন্ধন না নিয়ে কোথাও কোথাও শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়েও অসাধু ব্যবসায়ীরা চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ লাইসেন্সের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করেই যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে তুলছেন। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগ বরাবরই উদাসীন।
স্ত্রীর সিজার অপারেশন কারতে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আসেন আহমেদ হোসেন। তিনি হাসপতালের বারান্দায় আসামাত্রই এক দালাল তাকে ভালো চিকিৎসা করিয়ে দিবেন বলে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান।
হোসেন বলেন, ওই হাসপাতালে ভর্তি করার পরের দিন সিজারে আমার স্ত্রী এক পুত্র সন্তান জন্ম দেন। এরপরের দিন আমাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে সাথে একটি কাগজ ধরিয়ে দেয়। সেখানে বিল ধরা হয় ৪৭ হাজার টাকা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে অনেক ঝগড়া করার পরও বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে বলে তিনি জানান। ডেপুটি সিভিল ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, যাদের কাগজপত্র নেই, শিগগিরই অভিযান চালিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে।
মন্তব্য