-->
শিরোনাম

প্রবাল চেনে না দ্বীপের মানুষ!

আহসান সুমন, কক্সবাজার
প্রবাল চেনে না দ্বীপের মানুষ!
সেন্টমার্টিনের উপক‚লে নীল জলের নিচে শোভিত প্রবাল। ছবি ভোরের আকাশ

দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের ৯০ শতাংশ মানুষ প্রবাল বা কোরাল কি, তা চেনে না। যে কারণে এখানকার মানুষগুলো নিজেদের অজান্তেই হাজারো প্রবাল ধ্বংস করছে প্রতিনিয়ত। সামুদ্রিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দারের গবেষণায় এমন তথ্য ওঠে এসেছে।

সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও বিরল জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং টেকসই পর্যটন উন্নয়ন সম্পর্কিত এক মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

সূত্রে জানা যায়, ১৯৬১ সালে এ দ্বীপের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ২৫০ জন। এখন ২০২২ সালে এসে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৮৫ জনে। তারওপর প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের চাপতো আছেই।

বেলাল হায়দারের গবেষণা অনুযায়ী, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় ৬৬ প্রজাতির প্রবাল রয়েছে, যা ৯০ শতাংশ মানুষ এখনো চেনে না। এছাড়া দ্বীপে ১৫৪ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য, ১৫৭ প্রজাতির স্থলজ জীববৈচিত্র্য, ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৫ প্রজাতির কাছিম ও ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৮৭ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ১৫৩ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল, ৪ প্রজাতির উভচর ও ১২০ প্রজাতির পাখি পাওয়া গেলেও অনেকগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে।

তিন ধরনের কাছিমের প্রজননস্থান সেন্টমার্টিন। কিন্তু পরিবেশ দূষণে কাছিমগুলো ডিম পাড়তে আসছে না। ফলে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। মানুষের অসচেতনতা ও অবহেলায় ধীরে ধীরে ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই দ্বীপটি।

বেলাল হায়দার দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে অতিরিক্ত পর্যটকের চাপ। আর পর্যটকদের স্থান দিতে গিয়ে যত্রতত্র হোটেল-মোটেল নির্মাণ করা হচ্ছে যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।

তিনি আরো বলেন, পরিত্যক্ত বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রীর বর্জ্যে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ- প্রতিবেশে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সেসঙ্গে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছ। এতে বড় ধরনের ক্ষতির দিকে চলে যাচ্ছে এই দ্বীপ।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের ইতিবাচক পরামর্শগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, মানুষের এতচাপ প্রবালদ্বীপ আর সইতে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে প্রাকৃতিক এই দ্বীপ প্রকৃতির সাথেই একদিন মিশে যাবে হয়তো।

মন্তব্য

Beta version