-->
শিরোনাম

শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে শ্রমজীবীরা

সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম
শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে শ্রমজীবীরা
কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপন্ন। ছবি ভোরের আকাশ

কুড়িগ্রাম জেলা টানা দুইদিন ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির পর বয়ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঘনকুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে এই জনপদ। এতে করে মাঘের শেষ সময়ে তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। ঘনকুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া কনকনে ঠান্ডার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে দিন কাটছে জেলার দিনমজুর ও নিন্ম আয়ের মানুষজন।

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে অবস্থিত আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানায়, রাত ও দিনের তাপমাত্রার তফাৎ আরো কমতে পারে। ফলে আগামী সপ্তাহে জেলার শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।

গত রোববার জেলার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘনকুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষ । একই পরিস্থিতি নদ-নদী সংলগ্ন বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষদেরও। তাছাড়া শীতে গবাদি পশুগুলোকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শীত উপেক্ষা করেই জীবন জীবিকার সন্ধানে ছুটে চলছেন শ্রমজীবী মানুষজন।

জেলা সদরের চরসিতাই ঝড়ের কৃষক নাসিরউদ্দিন বলেন, হাড় কাপানো ঠান্ডায় শরীর কাপছে। শির শির করে কাপড়ের ভেতরে বাতাস ঢুকছে। কিন্তু যতই ঠান্ডা হোক জমিতে তো কাজ করতে হবে।

এদিকে দেখা যায়, কাজের সন্ধানে শহরমুখি রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিক, ঘোড়ার গাড়ি চালক, দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করেই দুর্ভোগ নিয়েই শহরে আসছে।

হলোখানা এলাকার ঘোড়ার গাড়ি চালক মইনুদ্দিন বলেন, ঘোড়ার গাড়িতে উঠে হাত-পা অবস হয়ে আসছে। ভোরে ভাড়ার সন্ধানে ঘর থেকে বের হলেও শীতবস্ত্রের অভাবে বিপাকে পড়েছি। আমাদের ঠান্ডায় দেখার কেউ নেই।

পাঁচগাছি এলাকার দিনমজুর আবুল হোসেন, মকবুল মিয়া ও সাইদুল জানান, গত দুদিন ঝড় ও বৃষ্টির কারণে তারা কাজে যেতে পারেনি। এতে করে তাদের ঘরে খাবারের সংকট রয়েছে। আজ কাজ না করলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে তাদের। কিন্তু কনকনে ঠান্ডা ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হলেও কাজ না জোটার আশঙ্কা রয়েছে তাদের।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, গত দুদিন টানা ঝড় ও বৃষ্টির পর জেলা জুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা আগামী দুই-তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জন্য আবহাওয়ার এমন পূর্বাভাস রয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলার ৯টি উপজেলার শীতার্তদের জন্য এক কোটি আট লাখ টাকার কম্বল ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৩৫ হাজার ৭০০ কম্বল পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আরো প্রায় ছয় হাজার সোয়েটার ও পাঁচ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

মন্তব্য

Beta version